For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts

সবারই প্রতি শনিবার উপোস করে শনি দেবের পুজো করা উচিত কেন জানা আছে?

শুক্লা পক্ষের প্রথম শনিবার থেকে শুরু করতে উপোস। সারা দিন কিছু না খেয়ে এক মনে শনি দেবের আরাধনা করতে হবে। আর দিনে শেষে নিরামিষ খাবার খেয়ে শেষ করতে ব্রত।

|

শাস্ত্র বলে সপ্তাহের প্রতিটি দিনই যদি উপাস করা যায়, তাহলে নাকি প্রায় সব দেব-দেবীরই আশীর্বাদ মেলে। কিন্তু এমনটা করা তো আর সম্ভব নয়। কারণ প্রতিদিনই যদি পেটে কিছু না পরে, তাহলে যে আক্কা যাওয়ার পথ খোলে। তাই তো জীবনে কী কী সমস্যা সাপের মতো ফনা তুলেছে তা প্রথমে বুঝে নিতে হবে। তারপর সেই মতো কোন ঠাকুরের থেকে "রেমেডি" মিলবে, তা জেনে নিয়ে তাঁর পুজো এবং উপোস করা শুরু করলেই দেখবেন জীবন আনন্দে ভরে উঠেছে। যেমন ধরুন যদি টাকা চাই, সঙ্গে চাই চাকরিতে পদন্নতিও তাহলে শুক্রবার করে মা লক্ষ্মীর পুজো এবং উপোস করা মাস্ট। আর যদি পরিবারে সুখ-শান্তি বজায় রাখতে চান, তাহলে বুধবার উপোস করে মোদক সমেত বাপ্পার পুজো করা ছাড়া কোনও উপায় নেই।

তবে একথা জানেন কি এত সব দেব-দেবীর মাঝে একজন আছেন, যাকে তুষ্ট করতে না পরলে কিন্তু বেজায় বিপদ। কে সেই সর্বশক্তিমান জানা আছে? তিনি হলেন শনি দেব। শাস্ত্র মতে গ্রহদের মধ্যে সবথেকে শক্তিশালী হলেন শনি ঠাকুর। আর তিনি যদি একবার খ্যাপে যান, তাহলে কিন্তু কেলো! কারণে সেক্ষেত্রে প্রতিটা দিন নানা সমস্যায় ভরে ওঠে। সেই সঙ্গে যে কাজই করুন না কেন তাতে শত চেষ্টা করেও সফলতার স্বাদ মেলে না। শুধু তাই নয়, এতসব সমস্যার সঙ্গে লেজুড় হয় নানাবিধ অর্থনৈতিক সমস্যাও। ফলে জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠতে সময় লাগে না।

ভয়টা কোথায় জানেন বন্ধু, কার কুষ্টিতে কখন শনি গ্রহ বেঁকে বসবে তা জ্যোতিষ বিশেষজ্ঞ ছাড়া আরও কারও পক্ষে আগে থেকে জেনে ওঠা সম্ভব নয়। তাই তো বলি, শনি দেব রেগে গেছেন, না যাননি, তা না ভাবে সর্বশক্তিমানকে সদা সন্তুষ্ট রেখে জীবনটা আনন্দে ভরিয়ে তুলতে ক্ষতি কি বলুন! তাই তো সপ্তাহের বাকি কোনও দিন উপোস করুন বা না করুন শনিবার উপোস করে শনি দেবের পুজো করতে ভুলবেন না যেন!

এখন প্রশ্ন হল কী কী নিয়ম মেনে করতে হবে উপোস এবং শনি পুজো:
শুক্লা পক্ষের প্রথম শনিবার থেকে শুরু করতে উপোস। সারা দিন কিছু না খেয়ে এক মনে শনি দেবের আরাধনা করতে হবে। আর দিনে শেষে নিরামিষ খাবার খেয়ে শেষ করতে ব্রত। প্রসঙ্গত, এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে টানা ১১ অথবা ৫১ দিন এইভাবে উপোস করে শনি দেবের আরাধনা করলে দেব বেজায় প্রসন্ন হন। ফলে যে কোনও ধরনের সমস্যা মিটে যেতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে কোনও ধরনের বিপদ ঘটার সম্ভাবনাও কমে।

পুজো করার নিয়ম:
শাস্ত্র মতে লোহা দিয়ে তৈরি শনি দেবের মূর্তি বাড়িতে প্রতিষ্টিত করে পুজো করলে বেশি মাত্রায় উপকার মেনে। এক্ষেত্রে সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে স্নান সেরে কালো অথবা নীল কাপড় পরে শুরু করতে হবে পুজোর আয়োজন। প্রথমে কালো কাপড়ের উপর দেবকে প্রতিষ্টি করে কালো তীল, সরষের তেল এবং সেদ্ধ ভাত নিবেদন করতে হবে দেবকে। তারপর শনি ব্রত কথা পাঠ করে শেষ করতে পুজো। প্রসঙ্গত, শনি দেবকে প্রসন্ন করতে প্রতি শনিবার করে উপোস এবং বিশেষ পুজোর আয়োজন করার পাশাপাশি যদি এই নিয়মগুলি মেনে চলেন, তাহলে কিন্তু আরও উপকার পাওয়া যায়। যেমন ধরুন...

১.পুজোর সময় শনি মন্ত্র জপ করা জরুরি:

১.পুজোর সময় শনি মন্ত্র জপ করা জরুরি:

"ওম নীলাঞ্জন সমভাহাসাম রাবি পুত্রাম ইয়ামাগরাজান চায়া মার্তান্ডা-সামভুতাম তাম নমামি শানিশভারাম", এই মন্ত্রটি যদি নিয়মিত পাঠ করতে পারেন, তাহলে শনিদেব এতটাই প্রসন্ন হন যে শনির মহাদশার খপ্পরে পরার আশঙ্কা কমে।

২. দেবাদিদেবের পুজো করতে ভুলবেন না:

২. দেবাদিদেবের পুজো করতে ভুলবেন না:

শাস্ত্র মতে শনিদেব হলেন ভগবান শিবের ভক্ত। তাই তো শনির মহাদশা চলাকালীন যদি নিয়মিত ভগবান শিবের পুজো করা যায় তাহলে শনি দেবের প্রভাব কমতে সময় লাগে না। তাই আপনার বার্থ চার্টে যদি শনির মহাদশার যোগ থাকে, তাহলে সময় নষ্ট না করে ভগবান শিবের পুজো করা শুরু করুন। সেই সঙ্গে সোম এবং শনিবার দুধ এবং জল দিয়ে শিবলিঙ্গের অভিষেক করুন। দেখবেন উপকার পাবেন।

৩. দান করা মাস্ট:

৩. দান করা মাস্ট:

শনি দেব হলেন কর্মের দেবতা। তাই তাঁর প্রকোপ থেকে যদি বাঁচতে চান, তাহলে মন খুলে লোকের সেবা করুন। সেই সঙ্গে ক্ষমতা অনুসারে দান-ধ্যানও খরুন। এমনটা করলে শনি দেব তো প্রসন্ন হবেনই, সেই সঙ্গে সুকর্মের প্রভাবে জীবন সুন্দর হয়ে উঠতে দেখবেন সময় লাগবে না।

৪. অশ্বত্থ গাছের পুজো ককরতে হবে:

৪. অশ্বত্থ গাছের পুজো ককরতে হবে:

এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে শনিবার করে অশ্বত্থ গাছের পুজো করলে জীবনে পজেটিভ শক্তির প্রভাব বাড়তে শুরু করে। সেই সঙ্গে শনি দেবও খুব খুশি হন। ফলে খারাপ কোনও ঘটনা ঘটার আশঙ্কা যায় কমে।

৫. শনিবার খালি পায়ে ঘাসের উপর হাঁটতে হবে:

৫. শনিবার খালি পায়ে ঘাসের উপর হাঁটতে হবে:

যখন ঝড় আসে, তখন বড় বড় গাছেরা ভেঙে পরলেও কিন্তু দুর্বল ঘাসেদের কিছু হয় না। কারণ তারা হাওয়ার পথ অনুসরণ করে নিজেদের শরীরকে দুলিয়ে নেয়। ফলে ঝড় কেটে গেলে তারা আবার নতুন ভাবে বেড়ে উঠতে শুরু করে। জীবনের চলার পথে আসা নানা কষ্ট অনেকটা এই ঝড়ের মতোই। তাই তো ঘাসের মতো নিজেকে কিছু সময়ের জন্য নিচু করে নিতে শিখতে হবে। দেখবেন কষ্ট যখন কমে যাবে, তখন জীবন আগের থেকে আরও বেশি সুন্দর হয়ে উঠবে। এই কারণেই তো প্রতি শনিবার খালি পায়ে ঘাসের উপর হাঁটতে বলে। কারণ এমনটা করলে খুব কাছ থেকে ঘাসেদের চরিত্র বুঝতে পারা যায়। তাই তো শনির প্রকোপে কোনও সময় যদি দুঃখের ঝড় ওঠে বা, তবু দেখবেন জীবনকে ঠিক দিশায় নিয়ে যেতে কোনও কষ্টই হবে না।

৬. সরষের তেল:

৬. সরষের তেল:

শাস্ত্র মতে একটি বাটিতে পরিমাণ মতো সরষের তেল নিয়ে তাতে নিজের প্রতিচ্ছবি দেখে যদি তা দান করা যায়, তাহলে শনি দেবের প্রকোপ কমতে সময় লাগে না। এই কাজটি করতে হবে প্রতি শনিবার, তবেই মিলবে ফল।

৭. হনুমান জির পুজো করাটা জরুরি:

৭. হনুমান জির পুজো করাটা জরুরি:

প্রাচীন শাস্ত্রে একটি ঘটনার উল্লেখ পাওয়া যায়। একবার রাবন তার পুত্র মেঘনাথকে অজেয় বানানোর আশীর্বাদ লাভের উদ্দেশ্যে কঠোর তপস্যা শুরু করেছিলেন। কিন্তু এমন আশীর্বাদ রাবনের পুত্রকে একেবারেই দিতে চাইছিলেন না শিব এবং বিষ্ণু। এ খবর রাবনের কানে পৌঁছানো মাত্র তিনি নটি গ্রহকে অপহরণ করে লঙ্কার এক গোপন স্থানে বন্দি করে রাখেন। এই সময়ই শ্রী হনুমান মা সীতার খোঁজে লঙ্কায় এসে পৌঁছান। আর ঘটনা চক্রে খোঁজ পেয়ে যান সেই গোপন কুঠুরির। সব কথা শোনার পর তিনি মুক্তি দেব নব গ্রহদের, যার অন্যতম ছিলেন শনি দেব। এমন সাহায্যে করার জন্য শনি দেব এতটাই প্রসন্ন হয়েছিলেন যে শ্রী হনুমানকে অশীর্বাদ করেন যে তাঁর এবং তাঁর শিষ্যদের উপর কোনও দিন শনির খারাপ প্রভাব পরবে না। তাই তো শনির মহাদশা থেকে বাঁচতে মারুথির পুজো করাটা জরুরি। এক্ষেত্রে প্রতি মঙ্গল এবং শনিবার হনুমান জি-এর পুজো করা শুরু করতে হবে। সেই সঙ্গে হনুমান চল্লিশা পাঠ করলে ফল মিলবে আরও দ্রুত।

৮. কালো তিল:

৮. কালো তিল:

এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে প্রতি শনিবার দুধের সঙ্গে কালো তিল মিশিয়ে শিব লিঙ্গের অভিষেক করলে শনির সাড়ে সাতি কাটতে শুরু করে। আসলে যেমনটা আগেও আলোচনা করা হয়েছে যে ভগবান শিবের ভক্ত হলেন শনি। তাই গুরুর পুজো করলে শিষ্যের প্রভাব কাটতে সময় লাগে না।

৯. কালো উরাদ ডাল এবং শনি দেব:

৯. কালো উরাদ ডাল এবং শনি দেব:

শনিবার গরিব মানুষদের কালো উরাদ ডাল দান করলে শনি দেব খুব প্রসন্ন হন। ফলে তার প্রকোপ কমতে সময় লাগে না। এই কারাণেই যাদের কুষ্টিতে শনির মহাদশার উল্লেখ রয়েছে, তাদের এই উপদেশটি দেওয়া হয়ে থাকে। প্রসঙ্গত, কালো উরাদ ডাল দান করার পাশাপাশি নদিতে যদি অল্প করে এই বিশেষ ডালটি ভাসানো যায়স তাহলে দারুন উপকার মেলে।

১০. খিচুরির গুণ:

১০. খিচুরির গুণ:

শনির সাড়েসাতি চালাকালীন প্রতি শনিবার খিচুড়ি খাওয়া শুরু করতে হবে। শুধু তাই নয়, খেয়াল করে সেদিন সব ধরনের নিরামিষ খাবার থেকেও দূরে থাকতে হবে। এমনটা যদি নিয়মিত করতে পারেন। তাহলে দেখবেন শনি দেবের প্রভাব কাটতে সময় লাগবে না। কারণ এই বিশেষ সময়ে শনি দেব, জাতক-জাতিকাদের জীবনের সবথেকে কঠিন সময়ের সামনে এসে দাঁড় করান, যাতে তারা আগামী দিনে যে কোনও ধরনের পরিস্থিতিতে মানিয়ে চালার মতো মানসিকতা তৈরি করতে পারেন। তাই তো শনিদেবকে যদি প্রসন্ন করতে চান, তাহলে এই সময় সাত্ত্বিক আহার করতে ভুলবেন না যেন!

Read more about: ধর্ম
English summary

Everything you Need To Know about Saturday Fasting

Fasting on Saturday is considered highly beneficial and the most significant of all the weekly vrats. Scriptures advise this vrat for those who have a weak Shani dev in their Kundalis. Observed to please Saturn (Shani Dev), this vrat can win the blessings of Shani and remedy the ill effects of a weak Shani in the Kundali.
Story first published: Saturday, August 25, 2018, 13:33 [IST]
X
Desktop Bottom Promotion