Just In
সোম বা শনিবার ১১ মুখি রুদ্রাক্ষ ধারণ করলে কী কী উপকার মিলতে পারে জানা আছে?
নানবিধ রুদ্রাক্ষের মধ্যে ১১ মুখি রুদ্রাক্ষ হল সবথেকে শক্তিশালী এবং এই বিশেষ ধরনের রুদ্রাক্ষটি লকেট হিসেবে পরলে শুধু শিব ঠাকুরই প্রসন্ন হন না, দেবাদিদেবের ১১ তম অবতার, শ্রী হনুমানও বেজায় খুশি হন।
হিন্দু শাস্ত্রে রুদ্রাক্ষের বেশ কদর রয়েছে। আর কেন থাকবেই না বলুন! এই সংস্কৃত শব্দটিকে ভাঙলে আরও দুটি শব্দ পাওয়া যায়, এক হল "রুদ্র", যার অর্থ হল শিব এবং "অক্শ" মানে হল চোখ। অর্থাৎ শিব ঠাকুরের তৃতীয় চক্ষু থেকে জন্ম নিয়েছে এই উপাদানটি। তাই তো এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে রুদ্রাক্ষ ধারণ করলে দেবাদিদেবের আশীর্বাদ লাভ করতে সময় লাগে না। আর যদি ১১ মুখি রুদ্রাক্ষ পরেন, তাহলে তো কথাই নেই!
হিন্দু ধর্মের উপর লেখা একাধিক প্রাচীন পুঁথি অনুসারে নানবিধ রুদ্রাক্ষের মধ্যে ১১ মুখি রুদ্রাক্ষ হল সবথেকে শক্তিশালী এবং এই বিশেষ ধরনের রুদ্রাক্ষটি লকেট হিসেবে পরলে শুধু শিব ঠাকুরই প্রসন্ন হন না, সেই সঙ্গে দেবাদিদেবের ১১ তম অবতার, শ্রী হনুমানও বেজায় খুশি হন। ফলে নানাবিধ সুফল মিলতে সময় লাগে না। যেমন ধরুন হনুমানজির আশীর্বাদে জীবন পথে চলতে চলতে সামনে আসা যে কোনও সমস্যা মিটে যেতে সময় লাগে না, সেই সঙ্গে আর আরও কিছু উপকার মেলে। যেমন- কর্মক্ষেত্রে সফলতা লাভের পথ প্রশস্ত হয়, অর্থনৈতিক উন্নতি ঘটে চোখে পরার মতো, খারাপ শক্তির প্রভাব কেটে যেতে শুরু করে এবং শনি দেবের বক্র দৃষ্টি পরার আশঙ্কাও কমে। তবে ভাববেন না এখানেই শেষ, ১১ মুখি রুদ্রাক্ষ ধারণ করলে আরও বেশ কিছু সুফল মেলার সম্ভাবনা থাকে। যেমন ধরুন...
১. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে চলে আসে:
একেবারে ঠিক শুনেছেন বন্ধু! এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে এগারো মুখি রুদ্রাক্ষ শরীরের সংস্পর্শে এলে দেহের অন্দরে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যে তার প্রভাবে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে চলে আসতে সময় লাগে না। তাই তো বলি বন্ধু, পরিবারে যদি এই মারণ রোগের ইতিহাস থাকে, তাহলে একবার বিশ্বাস করে এই উপাদানটিকে সঙ্গে রাখুন। এমনটা করলে উপকার যে পাবেই পাবেন, সে বিষয়ে কিন্তু কোনও সন্দেহ নেই!
২. হার্ট চাঙ্গা হয়ে ওঠে:
শুধু রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণ করেই থেমে থাকে না, ১১ মুখি রুদ্রাক্ষ হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়াতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আসলে এই বিশেষ ধরনের রুদ্রাক্ষটি ধারণ করা মাত্র সারা শরীরে অক্সিজেন সমৃদ্ধি রক্তের প্রবাহ বেড়ে যায়। ফলে হার্ট চাঙ্গা হয়ে উঠতে সময় লাগে না। প্রসঙ্গত, গত কয়েক দশকে আমাদের দেশের যুব সমাজদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাক এবং নানাবিধ হার্টের রোগের প্রকোপ এত মাত্রায় বৃদ্ধি পয়েছে যে প্রতি জনেরই যে আজ রুদ্রাক্ষ পরার প্রয়োজন রয়েছে, সে বিষয়ে কিন্তু কোনও সন্দেহ নেই!
৩. ব্রঙ্কাইটিসের মতো রোগ দূরে থাকে:
আয়ুর্বেদ শাস্ত্রের উপর লেখা একাধিক বই অনুসারে ১১ মুখি রুদ্রাক্ষের শরীরে এমন শক্তি মজুত রয়েছে যে, তা শরীরের সংস্পর্শে আসা মাত্র দেহের অন্দরের শক্তিকেও বাড়িয়ে তোলে, যার প্রভাবে ব্রঙ্কাইটিস এবং সর্দি-কাশির মতো রোগের প্রকোপ কমতে সময় লাগে না। শুধু তাই নয়, শারীরিক দুর্বলতা হ্রাস পায় এবং দেহের কর্মক্ষমতাও বাড়ে চোখে পরার মতো।
৪. থাইরয়েড গ্ল্যান্ড ঠিক মতো কাজ করতে শুরু করে দেয়:
একেবারে ঠিক শুনেছেন বন্ধু! রুদ্রাক্ষ পরা মাত্র বাস্তবিকই থাইরয়েড গ্ল্যান্ডের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, সেই সঙ্গে দেহের অন্দরে নানাবিধ হরমোনের ক্ষরণ ঠিক মতো হতে থাকে। ফলে হরমোনাল ইমব্যালেন্সের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা যায় কমে।
৫. অ্যাংজাইটি এবং স্ট্রেস লেভেল কমে:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে ১১ মুখি রুদ্রাক্ষ পরলে ব্রেন পাওয়ার তো বাড়েই, সেই সঙ্গে দেবাদিদেব এবং হনুমানজির আশীর্বাদে চারিপাশে পজেটিভ শক্তির মাত্রা এতটা বেড়ে যায় যে তার প্রভাবে যে কোনও সমস্যা মিটে যেতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে মনের ছোট-বড় সব ইচ্ছা পূরণের পথও প্রশস্ত হয়। ফলে দুশ্চিন্তা এবং মানসিক অবসাদের প্রকোপ তো কমেই, সেই সঙ্গে স্ট্রেস লেভেল কমতেও সময় লাগে না। তাই তো বলি বন্ধু, মনের মণিকোঠায় সাজানো সব স্বপ্ন বাস্তবের আলো দেখুক এমনটা যদি চান, তাহলে ১১ মুখি রুদ্রাক্ষ পরতে ভুলবেন না যেন!
৬. মনের মতো চাকরি মেলে:
কি বন্ধু হাজারো চেষ্টা করেও কি মনের মতো চাকরি মিলছে না? তাহলে কিন্তু ১১ মুখি রুদ্রাক্ষ পরা মাস্ট! কারণ এমনটা করলে নাকি খারাপ সময় কেটে যেতে সময় লাগে না। ফলে কর্মক্ষেত্রে উন্নতি লাভের পথ তো প্রশস্ত হয়ই, সেই সঙ্গে চরম অর্থনৈতিক উন্নতি লাভের সম্ভাবনাও বাড়ে। শুধু তাই নয়, এমনটাও বিশ্বাস করা হয় যে এমন রুদ্রাক্ষ যদি ছাত্র-ছাত্রীদের পরানো যায়, তাহলে মনোযোগ ক্ষমতার উন্নতি ঘটে। ফলে পড়াশোনায় উন্নতি লাভ করতে সময় লাগে না।
৭. ভিষণ কোনও বিপদ ঘটার আশঙ্কা কমে:
শাস্ত্র মতে ১১ মুখি রুদ্রাক্ষ ধারণ করলে চারিপাশে খারাপ শক্তির প্রভাব কমতে শুরু করে। ফলে নানাবিধ বিপদে জড়িয়ে পরার আশঙ্কা যেমন কমে, তেমনি কোনও ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনাও আর থাকে না। শুধু তাই নয়, অপঘাতে মৃত্যু ঘটার আশঙ্কাও কমে।
৮. ধার-দেনা সব মিটে যায়:
১১ মুখি রুদ্রাক্ষ পরা মাত্র দেবাদিদেব এবং হনুমানজি এতটাই প্রসন্ন হন যে তাঁদের আশীর্বাদে টাকা-পয়সা সংক্রান্ত যে কোনও ধরনের ঝামেলা মিটতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে ধর-দেনার খপ্পর থেকে বেরিয়ে আসাও সম্ভব হয়।
১১ মুখি রুদ্রাক্ষ পরার নিয়ম:
এই বিশেষ ধরনের রুদ্রাক্ষটি পরার সময় কতগুলি বিষয় মাথায় রাখা একান্ত প্রয়োজন। যেমন ধরুন-
১. রুদ্রাক্ষটিকে রুপো, সোনা অথবা পঞ্চ ধাতুর কবজে মুড়িয়ে পরতে হবে। কারণ এমনটা করলে নাকি দ্রুত উপকার মেলে।
২. রুদ্রাক্ষটি পরতে হবে সোমবার নয়তো শনিবার। কারণ যেমনটা সকলেরই জানা আছে যে শাস্ত্রে এই দুটি দিনকে শিব ঠাকুর এবং হনুমানজির পুজো করার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। তাই তো এই দুই দিনের কোনও একটা দিনে রুদ্রাক্ষটি পরলে বেশি উপকার পাওয়া যায়।
৩. একটা থালায় রুদ্রাক্ষটি রেখে গঙ্গা জল দিয়ে ভাল করে ধুয়ে নিয়ে তারপর সেটি পরতে হবে। তবে তার আগে দেবাদিদেব এবং মারুথির পায়ে রুদ্রাক্ষটি ছুঁয়ে নিতে ভুলবেন না যেন!
৪. এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে রুদ্রাক্ষটি পরার পর যে "ওম হ্রিম হাম নমহ", এই মন্ত্রটি ১০৮ বার যদি জপ করা যায়, তাহলে নাকি রুদ্রাক্ষটির ক্ষমতা আরও বেড়ে যায়। ফলে নানাবিধ উপকার মিলতে সময় লাগে না।
১১ মুখি রুদ্রাক্ষটি নকল নয়তো...?
আজকাল অনেক সময়ই নকল রুদ্রাক্ষ বানিয়ে তা আসল বলে অনেক টাকায় বিক্রি করা হয়ে থাকে। আর আসলের জায়গায় নকল রুদ্রাক্ষ পরলে যে কোনও উপকারই মেলে না, তা কি আর বলার অপেক্ষা রাখে! তাই তো বলি বন্ধু, ১১ মুখি রুদ্রক্ষটি কেনার সময় কতগুলি পরীক্ষা করে নিতে ভুলবেন না যেন! যেমন ধরুন-
১. এক কাপ গরম জল নিয়ে তাতে রুদ্রাক্ষটি ফেলে দিন। ২০-৩০ মিনিট পরে যদি দেখেন রুদ্রাক্ষটি রং ছাড়ছে, তাহলে জানবেন সেটি নকল।
২. রুদ্রাক্ষটি যদি আসল হয়, তাহলে সেটিকে দুটি কপার কয়েনের মাঝে রাখলে দেখবেন আপনা থেকেই রুদ্রাক্ষটি নরছে। কারণ প্রতিটি রুদ্রাক্ষের মধ্যেই ম্যাগনেটিক প্রপাটিজ থাকে, তাই তো কপারের সংস্পর্শে এলেই এমন মুভমেন্ট হতে শুরু করে। কিন্তু রুদ্রাক্ষটি যদি নকল হয়, তাহলে কিন্তু এমনটা একেবারেই হবে না।