Just In
- 5 hrs ago রোদে বের হলেই মাথা যন্ত্রণা কাবু করে? মাইগ্রেন নয় তো!
- 6 hrs ago শুধু ফ্যাশন নয়, প্রখর রোদ থেকে বাঁচতে পরুন সানগ্লাস!
- 8 hrs ago অসহ্য গরমে সর্দি-কাশিতে ভুগছেন? এই ঘরোয়া প্রতিকারগুলি ট্রাই করুন
- 11 hrs ago কর্মক্ষেত্রে সমস্যা মকরের, ব্যাবসায় আর্থিক লাভ মীনের, কেমন যাবে আজকের দিন? দেখুন রাশিফল
দুর্গাপূজা ২০২০ : দেখুন মহাসপ্তমীর দিন-ক্ষণ ও তাৎপর্য
আজ মহাসপ্তমী। চণ্ডীপাঠে মুখরিত হচ্ছে পূজা মন্ডপ। শান্তি, সাম্য ও ভাতৃত্বের অমর বাণী শোনাতে বছর অতিক্রান্ত করে স্বপরিবারে স্বর্গলোক থেকে মর্তে পা রেখেছেন দুর্গতিনাশিনী, মহামায়া মা দুর্গা। ষষ্ঠীতে দেবীর মুখ উন্মোচন ও বোধন প্রক্রিয়া অতিক্রান্ত করে পুজোর দিনক্ষণ পড়লো মহাসপ্তমীতে। বৃহস্পতিবার ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে বাঙালী হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয়া দুর্গাপূজা। সার্বজনীন এই ধর্মীয় উৎসবকে ঘিরে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে আনন্দ ও উৎসাহ-উদ্দীপনা।
আরও পড়ুন : দুর্গাপূজা ২০২০ : পুজোর কয়েকদিন এই কাজগুলি ভুলেও করবেন না, তাহলেই ধেয়ে আসবে বিপদ!
দুর্গাপুজো মূলত ষষ্ঠী থেকে দশমী এই পাঁচ দিনের উৎসব। ষষ্ঠ তিথিতে বেলতলায় বিহিত পূজার পর দেবীর আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে মূল দূর্গোৎসবের সূচনা হয়। মাতৃবন্দনার আনুষ্ঠানিকতা সকাল থেকেই শুরু হয়। নানা উপচারে ডালা সাজিয়ে মাতৃমন্ডপে আসতে থাকেন ভক্তরা পরিবারের মঙ্গল কামনার্থে। অশুভ শক্তির বিনাশে 'মঙ্গলময়ী' দেবীর জাগরণে জগতে সুর, শক্তি প্রতিষ্ঠার প্রার্থনা করেন সকলে। পূজার মন্ত্রোচ্চারণ, আরতির ঘণ্টাধ্বনি ও আলোকছটায় মাতোয়ারা সারা দেশের সমস্ত পূজা মণ্ডপ। চলুন, তবে জেনে নেওয়া যাক ২০২০ সালের মহাসপ্তমীর দিনক্ষণ, সময় ও তাৎপর্য।
২০২০ সালের সপ্তমীর দিনক্ষণ ও সময়
বাংলা ১৪২৭ সনের বেণীমাধব শীলের পঞ্জিকা মতে মহাসপ্তমী দিন-ক্ষণ হল -
সপ্তমী তিথি আরম্ভ
ইংরেজি তারিখ - ২২/১০/২০২০, বৃহস্পতিবার
বাংলা তারিখ - ৫ কার্তিক, ১৪২৭
সপ্তমী শুরু - দুপুর ১টা ১৪ মিনিট থেকে।
সপ্তমী তিথি শেষ
ইংরেজি তারিখ - ২৩/১০/২০২০, শুক্রবার
বাংলা তারিখ - ৬ কার্তিক, ১৪২৭
সপ্তমী শেষ - সকাল ১১টা ৫৭ মিনিটে
তাৎপর্য
মহাসপ্তমীর সকালে সর্বপ্রথম কলাবউ স্নান করানো হয়। তারপর মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে চক্ষুদানের মধ্য দিয়ে ত্রিনয়নী দেবী দুর্গার প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হয়। ধূপ-ধুনো, বেল-তুলসী, আসন, বস্ত্র, নৈবেদ্য, পুষ্পমাল্য, চন্দনসহ ১৬টি উপাচার দিয়ে দেবী দুর্গাকে পূজা করা হয়। হিন্দু পুরাণ মতে, মহাসপ্তমীতে ভক্তদের কল্যাণ ও শান্তির আশীর্বাদ নিয়ে হিমালয় নন্দিনী দেবী দুর্গা পূজার পিঁড়িতে বসবেন।
কলাবউ বাংলার দুর্গাপূজার একটি বিশিষ্ট অঙ্গ। সপ্তমীর সকালে নদী বা জলাশয়ে নিয়ে যাওয়া হয় নবপত্রিকাকে মহাস্নান করাতে৷ কলকাতায় গঙ্গার বিভিন্ন ঘাটে ঘাটে পুরোহিতদের উপস্থিতিতে কলাবউদের নিয়ে জড়ো হন বাড়ির লোক থেকে পুজো উদ্যোক্তারা ৷ তখনই শাস্ত্রবিধি মেনে স্নান করিয়ে নতুন শাড়ি পরানো হয় নবপত্রিকাকে ৷ তারপর তাকে ফিরিয়ে আনা হয় বাড়ির পুজোর দালান অথবা বারোয়ারি পুজোমণ্ডপে ৷ সেখানে প্রবেশের পরই দুর্গাপূজার মূল প্রথাগত অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এই নবপত্রিকা প্রবেশের পরই দর্পণে দেবীকে মহাস্নান করানো হয়। এরপর বাকি দিনগুলিতে নবপত্রিকা প্রতিমা দেবদেবীদের সঙ্গেই পূজিত হতে থাকে। বিশেষভাবে লক্ষণীয় হল, নবপত্রিকা প্রবেশের পূর্বে পত্রিকার সম্মুখে দেবী চামুণ্ডার আবাহন ও পূজা করা হয়।
আর এই কলা বউ বা নবপত্রিকা শব্দটির আক্ষরিক অর্থ হল নয়টি গাছের পাতা। যদিও বাস্তবে এই নবপত্রিকা নটি পাতা নয়, ৯টি গাছ। মূলত, এটা একটা কলাগাছ। তার সঙ্গে থাকে, কচু, বেল, হরিদ্রা, দাড়িম্ব, অশোক, মান জয়ন্তী এবং ধান গাছ ৷ কলাগাছের সঙ্গে এগুলিকে একেবারে মূল থেকে বেঁধে দেওয়া হয় এবং গণেশের ডান পাশেই বসানো হয় এই নবপত্রিকাকে। তাকে লাল পাড় সাদা শাড়ি পরিয়ে একেবারে ঘোমটা পরা কলাবউয়ের রূপ দেওয়া হয় ৷ দেবী দুর্গার ছেলে-মেয়ে এবং মহিষাসুরের সঙ্গে পুজো পায় এই নবপত্রিকা ৷
কথিত আছে, এই নবপত্রিকার ৯টি গাছ বলতে দেবী দুর্গার নয়টি বিশেষ রূপের প্রতীকস্বরূপ৷ এই নয় দেবী হলেন-রম্ভাধিষ্ঠাত্রী ব্রহ্মাণী, কচ্বাধিষ্ঠাত্রী কালিকা, হরিদ্রাধিষ্ঠাত্রী উমা, জয়ন্ত্যাধিষ্ঠাত্রী কার্তিকী, বিল্বাধিষ্ঠাত্রী শিবা, দাড়িম্বাধিষ্ঠাত্রী রক্তদন্তিকা, অশোকাধিষ্ঠাত্রী শোকরহিতা, মানাধিষ্ঠাত্রী চামুণ্ডা ও ধান্যাধিষ্ঠাত্রী লক্ষ্মী৷
মহাস্নান কী?
সপ্তমীর আর একটি বিশেষ অনুষ্ঠান হল মহাস্নান। নবপত্রিকা স্নানের পর মহাস্নান অনুষ্ঠিত হয়। মহাষ্টমী ও মহানবমীর দিনও পূজার মূল অনুষ্ঠান শুরুর আগে মহাস্নান অনুষ্ঠিত হয়। মহাস্নানের সময় শুদ্ধজল, নদীর জল, শঙ্খজল, গঙ্গাজল, সুগন্ধি জল, পঞ্চগব্য, কুশ ঘাসের দ্বারা ছেটানো জল, ফুলের দ্বারা ছেটানো জল, ফলের জল, মধু, দুধ, নারকেলের জল, আখের রস, তিল তেল, বিষ্ণু তেল, শিশিরের জল, রাজদ্বারের মাটি, চৌমাথার মাটি, বৃষশৃঙ্গমৃত্তিকা, গজদন্ত মৃত্তিকা, বেশ্যাদ্বারমৃত্তিকা, নদীর দুই তীরের মাটি, গঙ্গামাটি, সব তীর্থের মাটি, সাগরের জল, ঔষধি মেশানো জল, বৃষ্টিজল, সরস্বতী নদীর জল, পদ্মের রেণু মেশানো জল, ঝরনার জল ইত্যাদি দিয়ে দুর্গাকে স্নান করানো হয়। সার্বিক সমাজলক্যাণ চিন্তা ফুটে ওঠে এই মহাস্নানে।