Just In
গনেশ ঠাকুরের মূর্তি তো সবাই রাখেন, কিন্তু বাপ্পাকে বাড়িতে রাখার সময় কী কী নিয়ম মানতে হয় জানা আছে?
ঠাকুর ঘরের কোন স্থানে রাখতে হবে গনেশ মূর্তিকে? কেমনই বা বাপ্পার মূর্তি? এই প্রশ্নের উত্তরগুলি না জেনে যদি কেউ গনেশ পুজো শুরু করে দেন, তাহলে কিন্তু কোনও ফলই মিলবে না।
শাস্ত্র মতে বুধবার হল গনেশ ঠাকুরের দিন। এদিন মোদক, দুর্বা ঘাস, গাঁধা ফুল এবং কলা দিয়ে বাপ্পার আরাধনা করলে একাধিক উপকার মিলতে শুরু করে। বিশেষত কর্মক্ষেত্রে সফলতা লাভের পথ প্রশস্ত হয়। সেই সঙ্গে জীবন পথে চলতে চলতে সামনে আসা যে কোনও বাঁধা সরে যেতেও সময় লাগে না। মেলে আরও অনেক উপকার, যে সম্পর্কে বাকি প্রবন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। কিন্তু এক্ষেত্রে একটা বিষয় অনেকেই মাথায় রাখেন না, তা হল ঠাকুর ঘরের কোন স্থানে রাখতে হবে গনেশ মূর্তিকে? কেমনই বা বাপ্পার মূর্তি? এই প্রশ্নের উত্তরগুলি না জেনে যদি কেউ গনেশ পুজো শুরু করে দেন, তাহলে কিন্তু কোনও ফলই মিলবে না, উল্টে নানাবিধ ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা যাবে বেড়ে।
এখন প্রশ্ন হল কী কী নিয়ম মেনে বাড়িতে গণেশ মূর্তি স্থান পরা উচিত, তা জানা যাবে কোথা থেকে? কোনও চিন্তা নেই বন্ধু, একবার এই প্রবন্ধে চোখ রাখুন, তাহলেই দেখবেন সব অন্ধকার কেটে যাবে।
প্রসঙ্গত, বাড়ির ঠাকুর ঘরে বাপ্পাকে প্রতিষ্টিত করার সময় যে যে নিয়মগুলি মেনে চলা উচিত, সেগুলি হল...
১. কোথায় স্থাপন করতে হবে গনেশ মূর্তি:
বাপ্পার আশীর্বাদ লাভ করতে বাড়ির কোন স্থানে দেবের মূর্তি স্থাপন করতে হবে, সে সম্পর্কে বেশির ভাগই জানেন না। তাই তো দিনের পর দিন সমস্ত উপাচার মেনে সর্বশক্তিমানের আরাধনা করার পরেও তেমন কোনও ফল মেলে না। তাই এখন প্রশ্ন হল কোখায় রাখতে হবে দেবের মূর্তি বা ছবি? বাস্তু বিশেষজ্ঞদের মতে বাড়ির পূর্বদিকে যদি গনেশ ঠাকুরর মূর্তি রাখা যায়, তাহলে সবথেকে বেশি সুফল মেলে। আর যদি এমনটা সম্ভব না হয়, তাহলে উত্তর দিকেও রাখতে পারেন দেবের ছবি বা মূর্তি।
২. সাদা গনেশ:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে বাড়ির ঠাকুর ঘরে সাদা গনেশ ঠাকুরের মূর্তি স্থাপন করলে পরিবারের অন্দরে কোনও সময় কোনও ধরনের কলহ বা অশান্তি মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। সেই সঙ্গে পরিবারে সমৃদ্ধি ছোঁয়া লাগে। তাই এবার থেকে গনেশ ঠাকুরের মূর্তি কেনার ইচ্ছা হলে সাদা মার্বেলের গণেশ মূর্তি কিনতে ভুলবেন না যেন!
৩. ঠাকুর যেন বসে থাকেন:
বাড়ির ঠাকুর ঘরে গনেশ মূর্তি স্থাপন করার সময় একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে, তা হল গনেশ ঠাকুর বসে রয়েছেন, এমন ছবি বা মূর্তি বাড়িতে রাখতে হবে। কারণ এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে আসন গ্রহণ করে রয়েছেন এমন মূর্তি রাখলে গৃহস্থের প্রতিটি কোণায় পজেটিভ শক্তির মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। ফলে নানাবিধ সুফল মিলতে সময় লাগে না।
৪. গণেশ ঠাকুরের শুঁড়:
গনেশ ঠাকুরের যে মূর্তিটি বাড়িতে এনেছেন তার শুঁড় যেন ঠাকুরের বাঁহাতের দিকে বেঁকে থাকে। কারণ বিশেষজ্ঞদের মতে এমন মূর্তি বাড়িতে রাখলে সুখের ঝাঁপি কখনও খালি হয় না। সেই সঙ্গে নানাবিধ বিপদ ঘটার আশঙ্কাও কমে।
৫. মোদক এবং বাহন:
গনেশ ঠাকুরের হাতে রয়েছে মোদক এবং পায়ের কাছে আসন নিয়েছে তার বাহন, এমন মূর্তি বাড়িতে রাখা উচিত। কারণ শাস্ত্র মতে এই ধরনের মূর্তি বাড়িতে রাখলে সুখ-শান্তি যেমন বজায় থাকে, তেমনি মানসিক শান্তি বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়।
প্রসঙ্গত, এখন প্রশ্ন হল উপরে আলোচিত নিয়মগুলি মেনে বাড়িতে গণেশ টাকুরের মর্তি স্থাপন করে প্রতি বুধবার যদি পুজো করা হয়, তাহলে কী কী সুফল মিলতে পারে?
১. অর্থনৈতিক উন্নতি ঘটে:
গণেশ ঠাকুর হলেন সমৃদ্ধির দেবতা! তাই তো দেবকে সঙ্গে রাখলে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যে অনেকে অনেক টাকার মালিক হয়ে উঠতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে কোনও ধরনের অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখিন হওয়ার আশঙ্কাও যায় কমে। শুধু তাই নয়, জীবনে কখনও টাকা এবং খাবারের অভাব হয় না। এবার নিশ্চয় বিশ্বাস করতে কোনও অসুবিধা নেই বন্ধু যে গণেশে ঠাকুরের লকেট পরলে জীবনের সামগ্রিক ছবিটাই বদলে যায়।
২. ব্রেন পাওয়ার বৃদ্ধি পায়:
বাচ্চাদের গণেশ ঠাকুরের লকেট পরালে তাদের মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। সেই সঙ্গে মনোযোগ ক্ষমতারও উন্নতি ঘটে। ফলে পড়াশোনায় উন্নতি লাভ করতে সময় লাগে না। প্রসঙ্গত, গত কয়েক দিন ধরে কি অফিসের কাজে একেবারেই মন বসাতে পারছেন না? তাহলে গণেশ ঠাকুরকে সঙ্গে রাখতে ভুলবেন না যেন! কারণ এমনটা করলে দেখবেন উপকার মিলতে সময় লাগবে না।
৩. কর্মক্ষেত্রে উন্নতি লাভের পথ প্রশস্ত হয়:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে গণেশ ঠাকুরের লকেট পরলে আশেপাশে পজেটিভ শক্তির বিকাশ এত মাত্রায় ঘটতে থাকে যে চাকরি বা ব্যবসা ক্ষেত্রে সামনে আসা বাঁধার পাহাড় একে একে সরে যেতে সময় লাগে না। শুধু তাই নয়, অল্প সময়ে কর্মক্ষেত্রে চরম সফলতা লাভের সম্ভাবনাও যায় বেড়ে। তাই তো বলি বন্ধু, অল্প সময়ে যদি চরম পদন্নতির স্বাদ পেতে চান, তাহলে গণেশ ঠাকুরকে সঙ্গে রাখতে ভুলবেন না যেন! প্রসঙ্গত, অফিস ডেস্কে গণেশ টাকুরের মূর্তি রাখলেও কিন্তু সমান উপকার পাওয়া যায়।
৪. ভুত-প্রেতে দূরে রাখে:
অনেকে বিশ্বাস করেন যে গণেশ ঠাকুরের লকেট পরলে কালো যাদুর কারণে কোনও ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা কমে। সেই সঙ্গে ভূত-প্রেতের খপ্পরে পরার আশঙ্কাও যায় কমে। প্রসঙ্গত, অনেকেই হয়তো অবিশ্বাস করবেন না, কিন্তু এই ধরণার মধ্য়ে কোনও ভুল নেই যে ইর্ষান্বিত হয়ে এই ২১ শতকেও কিন্তু অনেকে তুকতাকের সাহায্য নিয়ে লোকের ক্ষতি করে থাকে। আর এমনটা যে কেউ আপনার সঙ্গে করার চেষ্টা করছে না, সে বিষয়ে আপনি কি নিশ্চিত? তাই তো বলি বন্ধু, সুখে-শান্তিতে এবং নিরাপদে যদি থাকতে হয়, তাহলে গণেশ দেবতাকে সঙ্গে রাখতে ভুলবেন না যেন!
৫. গুড লাক রোজের সঙ্গী হয়ে ওঠে:
একথা তো মানতেই হবে যে এই মানব জীবনকে যদি সফল করে তুলতে হয়, তাহলে পরিশ্রমের পাশাপাশি ভাগ্যের সঙ্গ থাকাটাও জরুরি। কারণ শুধুমাত্র পরিশ্রমের উপর ভরসা করে সফবলতার স্বাদ পাওয়াটা কিন্তু বেজায় কঠিন। কিন্তু প্রশ্ন হল, গুড লাককে রোজের সঙ্গী বানানো যায় কীভাবে? এ জন্য বন্ধু গণেশ ঠাকুরের একটা লকেট পরতে হবে। কারণ শাস্ত্র মতে গণেশ দেবতা তাঁর ভক্তদের কখনও নিরাশ করেন না। আর একবার দেবের আশীর্বাদ লাভ করলে ভাগ্য যেমন ফিরে যায়, তেমনি কোনও ধরনের খারাপ ঘটনা ঘটার আশঙ্কা যায় কমে।
৬. খারাপ শক্তি ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না:
গণেশ টাকুর যেমন সমৃদ্ধির দেবতা, তেমনি অশুভ শক্তির প্রভাব থেকে বাঁচাতেও সাহায্য করে থাকে। এই কারণেই তো সকলকেই গণেশ ঠাকুরের লকেট পরার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। আসলে এমনটা করলে গৃহস্থের অন্দরে খারাপ শক্তির প্রবেশ আটকে যায়। ফলে কোনও ধরনের বিপদ ঘটার আশঙ্কা যায় কমে। সেই সঙ্গে অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্ভাবনাও কমে।