Just In
জীবনে সফল হতে চাণক্যের এই নীতিগুলি মেনে চলা জরুরি!
জীবনে সফল হতে চাণক্যের এই নীতিগুলি মেনে চলা জরুরি!
ধর্ম কি? যা আমাদের ঠিক ভুলের পথ দেখাবে। সেই সঙ্গে জীবনে এগিয়ে যাওয়ার পথেও সাহায্য করবে। তাই না জ্ঞানি লোকেরা বলেছেন, যা ঘঠছে ভারতে, তাই ঘটেছে ভারতে! অর্থাৎ মাহাভারতে যা যা ঘটনা ঘটছে, তা সবই এই ২১ শকতের ভারতে, এমনকী সারা বিশ্বেও ঘটছে। তাই মাহাভারত পড়লে এ যুগে কেমনভাবে বেঁচে চলা যায়, তাও আপনি জেনে যাবেন। সে রকমই মহান কূটনৈতিক এবং অর্থনীতিবিদ চাণক্যের বলে যাওয়া কিছু কথার উল্লেখ করা হল এই প্রবন্ধে। যেগুলি মেনে চললে জীবনে সফল হবেনই। এক কথায় বলতে পারেন সফলতার শর্টকাট হতে পারে এই প্রবন্ধটি। তাই তো আর সময় নষ্ট না করে এক্ষুনি চোখ রাখুন এই লেখায় এবং জেনে নিন জীবনে সফল হওয়ার সেই মন্ত্রগুলি সম্পর্কে, যা মেনে চলে এক সময় সফলতার শিখরে উঠেছিলেন মহান সম্রাট চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য।
কী সেইসব মন্ত্র, যা আজও সমানভাবে কার্যকরি? চলুন মহান সেই ব্যক্তিত্বের ভবনার দুনিয়ায় প্রবেশ করা যাক।
১. জন্ম নয়, কর্ম আগে:
মানুষ কোন পরিবারে জন্ম নিয়ছে তার উপর তার পরিচিতি নির্ভর করে না। করে তার কাজের উপর। যে যত ভাল কাজ করবে, সে তত সুখ্যাতি পাবে। তাই আপনি যদি কোনও বড় লোকের বাড়িতে জন্ম না নিয়ে থাকেন, তার জন্য দুঃখ করবেন না। কারণ আপনার কাজের মাধ্যমে আপনি বড় হয়ে উঠতে পারেন, যা ওই বড় লোকের ব্যাটা কোনও দিন নাও করে উঠতে পারে।
২. ভাল মানুষের জয় সর্বত্র:
ফুলের গন্ধ কিন্তু শুধু হওয়ার পথে এগোয়। কিন্তু ভাল মানুষের সুখ্যাতি চারিদিকে ছড়িয়ে পরে। সে কোনও সীমানা মানে না। তাই তো মন থেকে ভাল মানুষ হয়ে উঠুন। জানবেন খারাপ হওয়ার জন্য হাজারও কারণ থাকে, ভাল হওয়ার জন্য কোনও কারণের প্রয়োজন পরে না।
৩. যৌবনকে খারাপ কাজে শেষ করবেন না:
সেকালে চাণক্য় আর কলি যুগে স্বামী বিবেকানন্দ একই কথা বলেছিলেন, যৌবন হল সেই আগুন যাকে কোনও দিন ভুল কাজে লাগাতে নেই। তাই যুবসমাজকে বুঝতে হবে, তাদের মনে এবং মস্তিষ্কে যে শক্তি মজুত রয়েছে তাকে কাজে লাগিয়ে যতদূর সম্ভব জীবনে এবং কেরিয়ারে এগিয়ে যেতে হবে। একবার এই শক্তি শেষ হয়ে গেল কিন্তু আফসোস করা ছাড়া আর কোনও উপায় থাকবে না।
৪. কাজ শুরুর আগের তিন প্রশ্ন:
যে কানও কাজ শুরুর আগে নিজেকে এই তিনটি প্রশ্ন করতে ভুলবেন না। ক) কেন এই কাজটি আমি করতে চলেছি? খ) এই কাজের ফল কী হবে? গ) আমি কি এই কাজটিতে সফল হব? নিজেকে এই তিনটি প্রশ্ন করলেই দেখবেন যে কোনও কিছুর গভিরে গিয়ে ভাবতে পারছেন। বুঝতে পারছেন ঠিক-ভুলের ফারাক। এমনটা করতে পারলেই না সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।
৫. মন থেকে নরম মানুষেরা মুখোশ পরো:
মনের ধনি মানুষকে কষ্টে রাখতে কেউ পিছপা হয় না। কারণ দুর্বলকে পিষেই তো সবলের যাত্রা শুরু হয়। তাই মন থেকে আপনি যতই দুর্বল হোন না কেন, তা ভুলেও প্রকাশ করবেন না। চাণক্য় যেমনটা বলে গেছেন, "কোনও সাপ বিষাক্ত না হলেও তো লোক তাকে ভয় করে চলে। কারণ তার শরীরে বিষ আছে, এমনটা সে প্রতিনিয়ত দেখাতে থাকে।" অর্থাৎ আপনাকে বিষাক্ত হতে হবে না। শুধু বাঁচতে বিষাক্ত হওয়ার নাটক করতে হবে।
৬. শিক্ষাই হাতিয়ার:
একজন শিক্ষিত ব্যক্তির কদর সর্বত্র। তাই তো নিজেকে জ্ঞানি করে তুলুন। যা পাবেন পড়ে ফেলুন। জানবেন শিক্ষা, সৌন্দর্য এবং যৌবনের থেকেও বেশি শক্তিশালী।
৭. ভগবানের বাস মন্দিরে নয়:
"ও মাই গড" সিনেমায় এই কথাটা এই কদিন আগে বললেও সেই ২৭৫ বিসি-তে চাণক্য় বলে গিয়েছিলেন মন্দিরের চার দেওয়ালের মধ্যে সবশক্তিমানকে খোঁজার চেষ্টা বৃথা। তাঁকে যদি খুঁজতেই হয়, নিজের মনের মন্দিরে খুঁজুন। দেখবেন ঠিক খোঁজ পাবেন। কারণ ভবনায় ভগবানের বাস আর মন হল সেই ভগবানের আবাসস্থল।
৮. মন দিয়ে কাজ করুন:
যা কাজই করুন না কেন, তা মন দিয়ে করুন। যখন কাজটি করবেন সফলতা বা ব্যর্থতার বিষয়ে খেয়াল রাখবেন না। এমনটা করলে দেখবেন মনোযোগের আঘটি হবে না। ফলে কাজটি থেকে ভাল পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে।
৯. সোজা গাছ ঝড়ে পরে যায়:
যখন খুব ঝড় ওঠে তখন কোন গাছটা আগে মাটি ছোঁয় জানেন? যে গাছটা একেবারে সোজ, অনেকের থেকে লম্বা। তেমনি মানব দুনিয়ায় বাঁচতে গেলে বেশি মাত্রায় সৎ হওয়া একেবারেই চলবে না। এক্ষেত্রে একটা জিনিস খেয়াল রাখবেন, সৎ হতে চাণক্য মানা করেননি। শুধু বলেছেন পরিস্থিতি বিশেষে সততা মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
১০. সফলতার চাবিকাঠি থাকে যেন মনের অন্দরে:
আপনি কীভাবে সফলতার সিঁড়ি চড়ছেন তা ভুলেও কাউকে জানাবেন না। এমনটা না করলে কিন্তু একদিন আপনি পিছিয়ে যাবেন, আর অন্য কেউ আপনার জায়গা নেবে। যেমন ধরুন, কোকাকোলা কোম্পানি আজ পর্যন্ত জানায়নি তার কোল্ড ড্রিঙ্কের এমন স্বাদের রহস্য কী! তাই তো তারা আজও সফলতার শীর্ষে বসে রয়েছে। একইভাবে আপনার সফলতার মন্ত্র সব সময় আপনার মনের সিন্দুকে থাকবে, বন্ধুদের মগজে নয়।
১১. ভয়কে জিততে হবে:
প্রতিপক্ষ আক্রমণ করলে কী করতে হয়? দাঁড়িয়ে থাকতে হয়, নাকি প্রতি আক্রমণের ফান্দি আঁটতে হয়? নিশ্চয় দ্বিতীয়টা করতে হয়। সেই রকমই ভয় যখন আক্রমণ করবে, তখন দাঁড়িয়ে না থেকে উল্টে তাকেও আক্রমণ করতে হবে। তবেই না ভয় দূরে পালাবে। নয়তো মাথায় চড়ে বসে স্ট্রেস এত বাড়িয়ে দেবে যে নানা দিক থেকে জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠবে।