Just In
Don't Miss
বুদ্ধ পূর্ণিমা ২০২০: জানুন এই উৎসবের আচার-অনুষ্ঠান ও তাৎপর্য সম্পর্কে
হিন্দুধর্ম এবং বৌদ্ধধর্ম সংস্কৃতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব হল বুদ্ধ পূর্ণিমা। এটি ভগবান বুদ্ধের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে পালন করা হয় এবং বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের বার্ষিক উৎসব এটি। হিন্দু বর্ষপঞ্জী অনুসারে প্রতিবছর বৈশাখ মাসের পূর্ণিমার দিন উদযাপিত হয় বুদ্ধ পূর্ণিমা। এই বছর বুদ্ধ পূর্ণিমা ৭ মে গোটা দেশে উদযাপিত হবে। ভগবান বুদ্ধই বৌদ্ধ ধর্ম প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তাঁকে ভগবান বিষ্ণুর অবতার বলেও মনে করা হয়। আসুন এই উৎসব সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
ইতিহাস
ভগবান বুদ্ধ বা গৌতম বুদ্ধ নেপালের লুম্বিনী-তে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর পিতার নাম রাজা শুদ্ধোধন এবং মাতা ছিলেন মায়াদেবী। জন্মের পর তাঁর নাম ছিল সিদ্ধার্থ গৌতম। তাঁর জন্মের পরে একজন সাধু তাঁকে দেখে ভবিষ্যদ্বাণী করেন যে, এই শিশু পরবর্তীকালে একজন রাজচক্রবর্তী অথবা একজন সিদ্ধ সাধক হবেন। রাজকুমার নিজেকে পার্থিব বাসনা এবং বস্তুবাদী বন্ধন থেকে দূরে রাখবেন।
বৌদ্ধ পুঁথিগুলি অনুসারে, পিতা শুদ্ধোধন তার জীবনে বিলাসিতার সমস্ত রকম ব্যবস্থা করা সত্ত্বেও সিদ্ধার্থ বস্তুগত ঐশ্বর্য্য যে জীবনের লক্ষ্য হতে পারে না, তা উপলব্ধি করা শুরু করেন।
বুদ্ধ পূর্ণিমা ২০২০:বৈশাখী পূর্ণিমার দিনেই সত্য জ্ঞান লাভ করেছিলেন বুদ্ধ, জানুন এর শুভ সময় ও গুরুত্ব
কথিত আছে, উনত্রিশ বছর বয়সে রাজকুমার সিদ্ধার্থ প্রাসাদ থেকে কয়েকবার ভ্রমণে বেরোলে তিনি একজন বৃদ্ধ মানুষ, একজন অসুস্থ মানুষ, একজন মৃত মানুষ ও একজন সন্ন্যাসীকে দেখতে পান। এই দৃশ্যগুলি দেখে সিদ্ধার্থ তাঁর রাজজীবন ত্যাগ করে একজন সন্ন্যাসীর জীবনযাপনের সিদ্ধান্ত নেন। সিদ্ধার্থ এক রাত্রে তাঁর পরিবারকে নিঃশব্দ বিদায় জানিয়ে রাজ প্রাসাদ ত্যাগ করেন। এরপর তিনি আধ্যাত্মিকতার পথে হাঁটেন এবং শীঘ্রই তিনি বিহারের বুদ্ধগয়াতে বোধি গাছের নীচে সত্য জ্ঞান অর্জন করেন।
আচার-অনুষ্ঠান
১) ভগবান বুদ্ধের ভক্তরা এদিন ভোরে উঠে পবিত্র স্নান সেরে তাঁর জন্মবার্ষিকী পালন শুরু করেন।
২) এদিন ঘর পরিষ্কার করা হয় এবং চারিদিকে গঙ্গা নদীর পবিত্র জল ছেটানো হয়। ফুল এবং পাতা দিয়ে বাড়ি সাজানো হয়।
৩) বাড়ির প্রবেশপথে হলুদ, রোলি এবং গঙ্গাজল দিয়ে স্বস্তিক চিণ্হ আঁকা হয়, যা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে একটি পবিত্র চিহ্ন হিসেবে বিবেচিত।
৪) বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থ পাঠ করা হয় এবং বৌদ্ধধর্ম অনুসরণকারীরা এই দিনে বুদ্ধগয়া-তে যান।
৫) বোধি গাছের উপাসনা করা হয়।
৬) রঙিন পুষ্পমালা গাছে বাঁধা হয় এবং ভক্তরা গাছের গোড়ায় দুধ ও জল ঢালেন।
তাৎপর্য
১) ভক্তরা বিশ্বাস করেন যে বুদ্ধ পূর্ণিমার দিন ভোরবেলা স্নান করলে সমস্ত পাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
২) এই দিনটিতে অনেকেই দান-ধ্যান করেন, যারা দরিদ্র তাদের খাওয়ান।
৩) প্রতিবছর এই দিনে বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা প্রচুর ভক্তের সমাগম হয় বুদ্ধগয়া-য়।