Just In
আজ কমলা সিঁদুর, জেসমিন তেল এবং তুলসি পাতা দিয়ে হনুমানজির পুজো করলে কী কী উপকার মেলে জানা আছে?
প্রতি মঙ্গলবার হনুমানজির পুজো করার পাশপাশি যদি এই প্রবন্ধে আলোচিত জিনিসগুলি দেবকে নিবেদন করা যায়, তাহলে দ্রুত উপকার মেলে।
শাস্ত্র মতে মঙ্গলবার হল হনুমানজির দিন। এদিন এক মনে মারুথির আরাধনা করলে দারুন সব উপকার মেলে। বিশেষত মানসিক অশান্তি দূর হয়। সেই সঙ্গে অর্থনৈতিক সমস্যাও মিটতে শুরু করে। শুধু তাই নয়, মেলে আরও নানা সুফল, যে সম্পর্কে এই প্রবন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। তবে তার আগে একটি বিষয়ে জেনে নেওয়াটা একান্ত প্রয়োজন। তা হল হিন্দু ধর্মের উপর লেখা একাধিক বই অনুসারে প্রতি মঙ্গলবার হনুমানজির পুজো করার পাশপাশি যদি এই প্রবন্ধে আলোচিত জিনিসগুলি দেবকে নিবেদন করা যায়, তাহলে দ্রুত উপকার মেলে। তাই তো বলি বন্ধু, হনুমানজিকে প্রসন্ন করে যদি মনের ছোট থেকে ছোটতর ইচ্ছা পূরণ করতে হয়, তাহলে এই লেখায় একবার চোখ রাখতে ভুলবেন না যেন!
প্রসঙ্গত, যে যে জিনিসগুলি দিয়ে হনুমানজির আরাধনা করলে মারুথি বেজায় প্রসন্ন হন, সেগুলি হল...
১. কমলা সিঁদুর:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে প্রতি মঙ্গলবার হনুমানজির ছবি বা মূর্তিতে যদি কমলা রঙের সিঁদুর লাগিয়ে পুজো করা যায়, তাহলে সর্বশক্তিমান বেজায় প্রসন্ন হন। ফলে যে কোনও সমস্যা মিটে যেতে সময় লাগে না। এমনকী কোনও ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কাও কমে। তবে এখানেই শেষ নয়, এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে এই বিশেষ ধরনের সিঁদুর সহযোগে বায়ু পুত্রের আরাধনা করলে ধার-দেনা মিটে যেতেও সময় লাগে না। তবে এক্ষেত্রে একটি বিষয় মাথায় রাখা একান্ত প্রয়োজন। তা হল পান পাতা বা অশ্বত্থ গাছের পাতায় সিঁদুর নিয়ে দেবকে নিবেদন করতে হবে। তবে মহিলারা কিন্তু মোটেও এমনটা করতে যাবেন না। বরং আপনারা লাল ফুল দিয়ে দেবের পুজো করতে পারেন।
২. জেসমিন তেল:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে সপ্তাহের এই বিশেষ দিনে জেসমিন তেলের সঙ্গে সিঁদুর মিশিয়ে দেবের শরীরে লাগালে সর্বশক্তিমান এতটাই প্রসন্ন হন যে শরীর এবং মস্তিষ্ক চাঙ্গা হয়ে ওঠে। সেই সঙ্গে দৃষ্টি শক্তির উন্নতি ঘটতেও সময় লাগে না। প্রসঙ্গত, হনুমানজির পুজো শেষ করার পর তাঁর সামনে জেসমিন তেল দিয়ে প্রদীপ জ্বালালে দেব বেজায় প্রসন্ন হন, যার প্রভাবে প্রতিপক্ষদের নিকেশ ঘটতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়।
৩. পতাকা:
শ্রী রাম লেখা ত্রিকোণ পতাকা প্রতি মঙ্গলবার হনুমানজির মন্দিরে দান করলে সম্পত্তি সংক্রান্ত যে কোনও সমস্যা মিটে যেতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে কোনও কোর্ট কেস চললে তারও সুরাহা মেলে। শুধু তাই নয়, এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে গাড়িতে রাম নাম লেখা লাল পতাকা লাগালে কোনও ধরনের অ্যাক্সিডেন্ট হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়।
৪. তুলসি পাতা:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে প্রতি মঙ্গলবার হনুমানজির পুজো করার সময় তাঁকে তুলসির মালা নিবেদন করলে সর্বশক্তিমান এতটাই প্রসন্ন হন যে তাঁর আশীর্বাদে পরিবারে সুখ এবং সমৃদ্ধির ছোঁয়া লাগে। সেই সঙ্গে গৃহস্থের অন্দরে খারাপ শক্তির প্রভাব কমতে থাকে। ফলে অশান্তি এবং কলহ মাথা চাড়া দিয়ে সম্ভাবনা হ্রাস পায়। প্রসঙ্গত, দেবকে যে তুলসির মালাটি নিবেদন করবেন, পুজোর পর তা থেকে কয়েকটি তুলসি পাতা নিয়ে প্রসাহ দিসেবে খেতে ভুলবেন না যেন! কারণ এমনটা করলে শরীর এবং মন চাঙ্গা হয়ে উঠতে দেখবেন সময় লাগবে না।
৫. লাডডু:
বেসন অথবা বুঁদি দিয়ে বানানো লাডডু হনুমানজিকে নিবেদন করলে গ্রহ দোষ কেটে যেতে সময় লাগে না। ফলে গ্রহের কুপ্রভাবে কোনও ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়। আর যদি লাডডুর মধ্যে তুলসি পাতা রেখে পরিবেশন করতে পারেন, তাহলে তো কথাই নেই!
৬. রাম নাম:
এমনটা অনেকেই বিশ্বাস করেন যে প্রতি মঙ্গলবার হনুমানজির আরাধনা করার সময় যদি শ্রী রামের নাম নেওয়া হয় তাহলে মারুথি বেজায় প্রসন্ন হন। ফলে মনের ছোট থেকে ছোট ইচ্ছা পূরণ হতে সময় লাগে না। প্রসঙ্গত, একটি অশ্বত্থ পাতায় রাম নাম লিখে তাতে জেসমিন তেল এবং কমলা সিঁদুর রেখে যদি হনুমানজিরে নিবেদন করতে পারেন, তাহলেও কিন্তু দারুন উপকার মেলে।
প্রসঙ্গত, এই সামগ্রীগুলি দিয়ে দেবের আরাধনা করলে উপরে আলোচিত উপকারগুলি তো মেলেই, সেই সঙ্গে আরও কিছু সুফল পাওয়া যায়। যেমন ধরুন...
১. মনোবল বাড়ে:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে প্রতি মঙ্গলবার দেবের পুজো করার পাশাপাশি যদি হনুমান চল্লিশা পাঠ করা যায়, তাহলে মনের অন্দরে লুকিয়ে থাকা ভয় কাটতে শুরু করে। সেই সঙ্গে মনের জোর এতটা বেড়ে যায় যে কোনও বাঁধা পেরতেই সময় লাগে না। ফলে জীবনের চলার পথটা বেজায় সহজ হয়ে যায় বৈকি।
২. অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি ঘটে:
হনুমান জি তাঁর ভক্তদের বেজায় ভালবাসেন। তাই তো নিয়মিত তাঁর পুজো করলে যে কোনও ধরনের অর্থনৈতিক কষ্ট কমে যেতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে পরিবারে সুখ, শান্তি এবং সমৃদ্ধির আগমণ ঘটে। প্রসঙ্গত, অনেকেই আমাদের উপর খারাপ দৃষ্টি দিয়ে থাকেন। এই কু-দৃষ্টির প্রভাবও কাটে যদি নিয়ম করে হানুমান চল্লিশা পাঠ করা যায় তো!
৩. মনের ইচ্ছা পূরণ হয়:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে প্রতি মঙ্গলবার হনুমান জি-এর পুজো করলে মনের যে কোনও ইচ্ছা পূরণ হতে সময় লাগে না। শুধু তাই নয়, নিয়মিত দেবের আরাধনা করলে মনের মতো চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনাও যায় বেড়ে।
৪. বুদ্ধির বিকাশ ঘটে:
বিশ্বাস করতে একটু কষ্ট হবে ঠিকই। তবে শাস্ত্র এমনটা দাবি করা হয়েছে যে হনুমান জি-এর পুজো করা শুরু করলে ধীরে ধীরে মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। ফলে বুদ্ধির বিকাশ ঘটতে সময় লাগে না। আর বুদ্ধির ধার বাড়তে শুরু করলে চাকরি হোক কী ব্যবসা, যে কোনও ক্ষেত্রেই সাফল্য পাওয়ার সম্ভাবনা যে বেড়ে যায়, তা কি আর বলার অপেক্ষা রাখে।
৫. গুড লাক রোজের সঙ্গী হয়:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে প্রতি মঙ্গলবার হনুমান জির পুজো করা শুরু করলে খারাপ ভাগ্যের রেষ কাটতে শুরু করে। ফলে গুড লাক রোজের সঙ্গী হয়ে ওঠে। আর এমনটা হলে সাফল্যের স্বাদ পেতে যে সময় লাগে না, তা কি আর বলার অপেক্ষা রাখে!
৬. রোগ-ব্যাধি দূরে পালায়:
নানাবিধ রোগের আক্রমণে জীবন কি দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে? তাহলে বন্ধু প্রতি মঙ্গলবার হনুমানজির পুজো করা শুরু করুন। দেখবেন ছোট-বড় সব রোগ দূরে পালাবে। সেই সঙ্গে মঙ্গল দেবের আশীর্বাদে শরীর এতটাই চাঙ্গা হয়ে উঠবে যে আয়ু বাড়বে চোখে পরার মতো।
৭. কোনও বিপদ ঘটার আশঙ্কা কমবে:
যেমনটা আগেও আলোচনা করা হয়েছে যে প্রতি মঙ্গলবার হনুমানজির পুজো করলে গৃহস্তের প্রতিটি কোণায় পজেটিভ শক্তির বিকাশ ঘটতে শুরু করে। যার প্রভাবে কোনও ধরনের খারাপ ঘটনা ঘটার আশঙ্কা যেমন কমে, তেমনি পরিবারে সুখ-সমৃদ্ধির ছোঁয়া লাগতেও সময় লাগে না।
৮. কর্মক্ষেত্রে চরম সফলতার স্বাদ মেলে:
শুনতে আজব লাগলেও এই ধরণার মধ্যে সত্যিই কোনও ভুল নেই যে প্রতি মঙ্গলবার উপোস করে হনুমান জির পুজো করা শুরু করলে কর্মক্ষেত্রে কোনও ধরনের বাঁধা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার আশঙ্কা হ্রাস পায়। সেই সঙ্গে চটজলদি পদন্নতি লাভ করার সম্ভাবনাও বাড়ে। ফলে কর্মজীবনে দ্রুত সফলতার সিঁড়ি চড়ার স্বপ্ন পূরণ হয় চোখের পলকে।