Just In
প্রত্যেকেরই বৃহস্পতিবার উপোস করে লর্ড বৃহস্পতির পুজো করা উচিত কেন জানা আছে কি?
প্রতি বৃহস্পতিবার উপোস করে "আম হ্রিম ক্লিম হ্রিম বৃহস্পতয়া নমহঃ", এই মন্ত্রটি, উত্তর-পূর্ব দিকে মুখ করে পাঠ করতে হবে।
আমরা প্রতিদিন নানা দেব-দেবীর পুজো করি কেন? ভগবানের ভক্তিতে অনুপ্রাণীত হয়ে যে করি না, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই! বরং করি নানা উপকার পেতে, নয়তো নানা বিপদ থেকে বেঁচে থাকতে ঠাকুর ঘর সাজিয়ে ফেলি একাধিক দেব-দেবীর মূর্তি বা ছবি দিয়ে। আর সেই দেব-দেবীদের প্রসন্ন করে নানা সুফল পেতে কী কী নিয়ম মেনে পুজো করা উচিত, সে সম্পর্কে আপনাদের জানিয়ে থাকে বোল্ডস্কাই বাংলা। তাই তো বারে বারে নানা প্রবন্ধের মাধ্যমে বোল্ডস্কাই আপনাদের শক্তিশালী নানা মন্ত্রের সম্পর্কে জানিয়ে থাকে। এই যেমন ধরুন আজই এই লেখায় বৃহস্পতিবার উপোস করে লর্ড বৃহস্পতির আরাধনা করলে কী কী উপকার মিলতে পারে, সে সম্পর্কে আলোকপাত করার চেষ্টা করা হবে।
কিন্তু প্রশ্ন হল কেন পরবেন এই লেখাটা? কীই বা উপকার মিলবে তাতে? শাস্ত্র মতে ভগবান বৃহস্পতি হলেন দেবতাদের গুরু। তাই তো তাঁর স্থান ঠিক সূর্য দেবের পরেই। শুধু তাই নয়, বৃহস্পতি দেব এতটাই শক্তিশালী যে কারও জন্ম কুষ্টিতে যদি দেবের অবস্থান দুর্বল হয়ে পরে, তাহলে একের পর এক খারাপ ঘটনা ঘটার আশঙ্কা যায় বেড়ে। শুধু তাই নয়, কর্মক্ষেত্র থেকে সামাজিক জীবন, সবেতেই নানাবিধ বিপদের সম্মুখিন হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে। আর যদি বৃহস্পতির অবস্থান বেজায় শক্তিশালী হয়, তাহলে তো কথাই নেই! কারণ সেক্ষেত্রে অর্থনৈতিক উন্নতি ঘটতে যেমন সময় লাগে না, তেমনি জ্ঞান এবং বুদ্ধির বিকাশ ঘটে চোখে পরার মতো। সেই সঙ্গে আরও নানা উপকার পাওয়া মেলে। যেমন ধরুন- বৈবাহিত জীবনে সুখ-শান্তি বজায় থাকে, বাবা-মা হওয়ার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা হয় না, কর্মক্ষেত্রে সম্মান বৃদ্ধি পায়, গুড লাক রোজের সঙ্গী হয়ে ওঠে, এবং ছোট-বড় নানা রোগ দূরে পালানোর কারণে শরীর-স্বাস্থ্য়ও চাঙ্গা হয়ে ওঠে।
এত দূর পড়ার নিশ্চয় জানতে ইচ্ছা করছে বৃহস্পতি দেবকে তুষ্টি করা যায় কীভাবে? এক্ষেত্রে প্রতি বৃহস্পতিবার উপোস করে "আম হ্রিম ক্লিম হ্রিম বৃহস্পতয়া নমহঃ", এই মন্ত্রটি, উত্তর-পূর্ব দিকে মুখ করে পাঠ করতে হবে। তারপর গুরু বৃহস্পতির আরাধনা শুরু করে মনে মনে যদি গুরুর নাম নিতে পারেন, তাহলে উপকার মিলতে সময় লাগে না। প্রসঙ্গত, প্রতি সপ্তাহে এই বিশেষ পুজোর আয়োজন করলে, তবেই কিন্তু উপকার মলে, নচেৎ কিন্তু...!
লর্ড বৃহস্পতির পুজো করার সময় কী কী জিনিসের প্রয়োজন পরে?
এক্ষত্রে গুরু বৃহস্পতির যন্ত্র ঠাকুরের আসনে রেখে তার সামনে ধুপ, সিঁদুর, হলুদ, আবির, হলুদ কাপড়, কপপুর, ছোট নারকেল এবং ফলু রেখে শুরু করতে হবে পুজো। প্রসঙ্গত, এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে লর্জ বৃহস্পতির প্রিয় রং হল হলুদ। তাই তো তাঁর পুজোর সময় হলুদ কাপড় রাখতে ভুলবেন না। শুধু তাই নয়, এমনটাও অনেকে মনে করেন যে বৃহস্পতিবার কেউ যদি হলুদ জামা-কাপড় পরেন, তাহলে তার উপর সারা দিন বৃহস্পতির আশীর্বাদ থাকে। ফলে কোনও বিপদ ঘটার আশঙ্কা যায় কমে।
কীভাবে করতে হবে লর্ড বৃহস্পতির পুজো?
জন্ম কুষ্টিতে বৃহস্পতি গ্রহের অবস্থানকে শক্তিশালী করতে প্রতি বৃহস্পতি বার সকাল সকাল উঠে স্নান সেরে বৃহস্পতি মন্ত্র জপ করতে হবে। তারপর বৃহস্পতি কথা পাঠ করে শুরু করতে হবে পুজো। এক্ষেত্রে প্রথমে হলুদ কাপড় দেবের ছবি বা যন্ত্রের সামনে রেখে, তারপর ধুপ-ধূনো এবং কপপুর জ্বালিয়ে নিতে হবে। এরপর এক মনে লর্ড বৃহস্পতির নাম নিতে নিতে যা যা সমস্যা রয়েছে, সে সম্পর্কে সর্বশক্তিমানকে জানাতে হবে। এইভাবে প্রতি সপ্তাহে দেবের আরাধনা করলে দেখবেন উপকার মিলবেই মিলবে! প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার উপোস করতে ভুলবেন না যেন। কারণ এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে এদিন উপোস করলে বৃহস্পতি দেব বেজায় প্রসন্ন হন। ফলে জীবন সুখে-শান্তিতে ভরে উঠতে সময় লাগে না। এক্ষেত্রে আরেকটি বিষয় জেনে রাখাও একান্ত প্রয়োজন। তা হল, যাদের কুষ্টিতে বৃহস্পতি গ্রহের অবস্থান বেজায় দুর্বল, তারা উপোস এবং দেবের পুজো করার পাশাপাশি যদি পোখরাজ স্টোন পরতে পারেন, তাহলে কিন্তু দূরুন উপকার মেলে। কারণ এই স্টোনটি পরলে ধীরে ধীরে কুষ্টিতে গুরুর অবস্থানে পরিবর্তন আসতে শুরু করে। ফলে এই বিশেষ গ্রহের খারাপ প্রভাব কেটে যেতে সময় লাগে না।
বৃহস্পতি পুজোর সময় যে যে বিষয়গুলি মাথায় রাখতে হবে:
গুরু বৃহস্পতিকে প্রসন্ন করা তো বেজায় সোজা। কিন্তু তার পুজো করার সময় যদি এই নিয়মগুলি মেনে না চলেন, তাহলে কিন্তু বেজায় বিপদ! এক্ষেত্রে যে যে বিষয়গুলি মাথায় রাখা জরুরি, সেগুলি হল- পুজো করার সময় হলুদ জামা-কাপড় পরতে হবে, বৃহস্পতি দেবের ছবির সামনে কলা গাছ রেখে পাঠ করতে হবে বৃহস্পতি কথা, চানা ডাল এবং গুড় দিয়ে তৈরি করতে হবে প্রসাদ, ভুলেও এদিন কলা খাওয়া চলবে না এবং বৃহস্পতি পুজোর আগে বিবাহিত মহিলারা ভুলেও চুল ধোবেন না যেন!
উপোস করার নিয়ম:
যে দিন গুরু বৃহস্পতির পুজো করবেন সেদিন দিনে একবার মাত্র খাবার খেতে পারবেন, তাও সূর্যাস্তের পরে। বাকি সারা দিন উপোস করে থাকতে হবে। শুধু তাই নয়, এক্ষেত্রে আরেকটি জিনিস মাথায় রাখতে হবে, তা হল এদিন ভুলেও কিন্তু কলা এবং নুন খাওয়া চলবে না।