Just In
গণেশ চতুর্থি: বাড়িতে গণেশ ঠাকুরকে স্থাপন করার পর ভুলেও এই কাজগুলি করবেন না যেন! না হলে কিন্তু...
যতদিন সর্বশক্তিমান আপনার বাড়িতে অতিথি হয়ে রয়েছেন, ততদিন কিন্তু এই প্রবন্ধে আলোচিত নিয়মগুলি অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলতে হবে। না হলে কিন্তু...
শুক্লা চতুর্থির, চতুর্থ দিনে বাড়িতে নিয়ে আসা হয় বাপ্পাকে। আর ঠিক সে সময় থেকেই শুরু হয়ে যায় গণেশ চতুর্থির রাজকীয় আয়োজন। চলে প্রায় দশ দিন ধরে। কিন্তু চাইলে আপনি দশের পরিবর্তে দেড় দিন, তিন দিন অথবা সাত দিনও বাড়িতে আসন পাততে পারেন গণপতির। তবে যতদিন সর্বশক্তিমান আপনার বাড়িতে অতিথি হয়ে রয়েছেন, ততদিন কিন্তু এই প্রবন্ধে আলোচিত নিয়মগুলি অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলতে হবে। না হলে কিন্তু কোনও সুফলই পাবেনি না। উল্টে নানাবিধ ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা যাবে বেড়ে।
এত দূর পড়ার পর প্রশ্ন করতেই পারেন বাপ্পকে প্রসন্ন করার প্রয়োজন কী? তাহলে উত্তরে বলবো বন্ধু, এই মানব জীবনে আমাদের যা যা চাই, সে সব কিছু পাওয়ার পথ প্রশস্ত হতে শুরু করে যদি গণপতি প্রসন্ন হন তো। শুধু তাই নয়, গণেশ ঠাকুরের মন জয় করতে পারলে মেলে আরও অনেক উপকার। যেমন ধরুন- নিমেষে বড়লোক হয়ে ওঠার স্বপ্ন পূরণ হয়, যে কোনও ধরনের কষ্ট কমে যেতে সময় লাগে না, রোগ-ব্যাধি সব দূরে পালায়, কর্মজীবনে সফলতা আসে, গৃহস্থে খারাপ শক্তির প্রভাব কমতে শুরু করে এবং মনের ছোট থেকে ছোটতর ইচ্ছা পূরণ হতেও সময় লাগে না।
এবার বুঝেছেন তো বন্ধু, এ জীবনে খুশি থাকতে গেলে বাপ্পার আরাধনা করতেই হবে। তাই যদি সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে আর দুদিন পরেই বাপ্পার আগমণ ঘটাবেন বাড়িতে, তাহলে যে যে বিষয়গুলি মাথায় রাখা জরুরি, সেগুলি হল...
১. পিঁয়াজ-রসুন থেকে দূরে থাকতে হবে:
আপনার বাড়িতে যতদিন গণেশ ঠাকুর থাকবেন, ততদিন কোনও মতেই পিঁয়াজ এবং রসুন খাওয়া চলবে না। আর যদি এই দুটি জিনিস বাড়িতে আনাই বন্ধ করে দেন, তাহলে তো আরও ভাল! প্রসঙ্গত, নানা রোগের চিকিৎসাতেও অনেক সময় রসুনকে কাজে লাগিয়ে থাকেন অনেকে। দয়া করে এই সময় এমনটাও করবেন না। কারণ পিঁয়াজ এবং রসুনকে আমিষ খাবারের তালিকায় রাখা হয়। আর দেব যখন অতিথি তখন তো আমিষ খাবার নৈব নৈব চ!
২. গণেশজিকে প্রথমে তারপর সবাইকে:
আপনার বাড়িতে বাপ্পা যতদিন আসন পেতেছেন, ততদিন যে কোনও কিছু খাওয়ার আগে প্রথমে তা দেবকে নিবেদন করতে হবে, তারপর আপনি খেতে পারবেন। আসলে শাস্ত্রেই তো লেখা আছে "অতিথি দেব ভব"। তাই অতিথিকে ভুখা রেখে আপনি যদি খেয়ে নেনে, তাহলে তো তা পাপ, তাই না!
৩. বাপ্পাকে একা ছাড়া চলবে না:
শাস্ত্রকে যদি মেনে নেন, তাহলে এই নিয়মটিকেও মেনে চলতে হবে। কী নিয়ম? এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে বাড়িতে গণেশ ঠাকুরকে প্রতিষ্টিত করার পর তাঁকে কখনই একা ছাড়া উচিত নয়। অর্থাৎ এই সময় পরিবারের কাউকে না কাউকে বাড়িতে থাকতেই হবে। তাই তো এই সময় ভুলেও বাড়ি একেবারে খালি রেখে কোথাও যাওয়ার প্ল্যান বানাবেন না যেন!
৪. তাস বা জুয়া খেলা চলবে না:
ভারতের বেশ কিছু জায়গায় উৎসবের দিনে পরিবারের সবাই মিলে বসে তাস বা মজা করেই জুয়ো খেলার চল রয়েছে। কিন্তু আপনি যেন ভুলেও এই কাজটি করতে যাবেন না। কারণ এমনটা অনেকেই বিশ্বাস করেন যে গণেশ ঠাকুর বাড়িতে থাকাকালীন তাস বা জুয়া খেলেল বাপ্পা বেজায় অসন্তুষ্ট হন। ফলে নানাবিধ খারাপ ঘটনা ঘটার আশঙ্কা যেমন বেড়ে যায়, তেমনি সুখের ঝাঁপি খালি হতেও সময় লাগে না।
৫. ভুলেও কাউকে ঠকাবেন না যেন!
মারাত্মক অর্থনৈতিক ক্ষতি হোক, এমনটা যদি না চান, তাহলে ভুলেও গণেশ উৎসবের সময় কাউকে ঠকাতে যাবেন না যেন! কারণ বাড়িতে গণেশ ঠাকুর থাকাকালীন কাউকে ঠকালে বা কারও ক্ষতি করলে বাপ্পা এতটাই রেগে যান যে তার প্রকোপে একের পর এক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়।
৬. ঝগড়া-ঝাটি বন্ধ করতে হবে:
বাড়িতে কোনও গেস্ট এলে কি তার সামনেই ঝগড়া-ঝাটিতে জড়িয়ে পরেন নাকি, নিশ্চয় নয়! একই ভাবে আপনার বাড়িতে যেদিন দূর্গা তনয়ের অগমণ ঘটবে, সেদিন থেকে যতদিন বাপ্পা আপনার বাড়িতে আছে, ততদিন ভুলেও কারও সঙ্গে ঝগড়া করতে যাবেন না যেন! শুধু তাই নয়, খারাপ চিন্তাকেও যতটা সম্ভব এই সময় দূরে রাখারই চেষ্টা করবেন। কারণ রাগ, চিন্তা এ সবই খারাপ শক্তি, যা আদতে গৃহস্থে উপস্থিত পজেটিভ শক্তির প্রভাবকে কমিয়ে ফেলে। ফলে হাজারো পুজো-পাঠ করেও কিন্তু কাঙ্খিত ফল মেলার সম্ভবনা কমে যায়।
৭. নো মাংস, নো অ্যালকোহল:
যেমনটা আগেও আলোচনা করা হয়েছে যে গণেশ ঠাকুরের পুজো করার সময় ভুলেও যেমন মাংস বা আমিষ জাতীয় খাবার খাওয়া চলবে না, তেমনি অ্যালকোহল সেবন থেকেও শত হস্ত না হলেও যতটা সম্ভব দূরে থাকতে হবে। তবে এই সব নিয়ম তখনই মানার প্রয়োজন পরবে, যখন আপনি চান যে বাপ্পার আশীর্বাদে আপনার জীবনের ছবিটা আরও কিছুটা রঙিয়ে উঠুক। না হলে বাকিটা আপনার সিদ্ধান্ত!
৮. রাগকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে:
বাপ্পার সংস্পর্শে এলে এমনিতেই মন ঠান্ডা হয়ে যায়। কিন্তু আপনার যদি এমনটা না হয় থাকে, তাহলে ম্যানুয়াল মোডেই আপনাকে রাগকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে হবে। কারণ রাগ মানেই নেগেটিভিটি। আর পজেটিভিটির প্রতীক, গণপতি বাপ্পাকে যখন বাড়িতে আমন্ত্রণ জানিয়ে নিয়ে আসা হচ্ছে, তখন নেগেটিভ বা খারাপ শক্তির সঙ্গে যোগ রয়েছে এমন কোনও কিছুকেই প্রশ্রয় দেওয়া মানে যে পাপ, তা কি আর বলে দিতে হবে!