Just In
জন্ম কুষ্টিতে থাকা শনির দোষ কাটাতে চান নাকি? তাহলে শনিবার এই নিয়মগুলি মেনে চলতে ভুলবেন না যেন!
শনি দেব হলেন গ্রহদের মধ্যে সবথেকে শক্তিশালী। তাই তো সূর্যপুত্রের পভাব থেকে বাঁচতে না পারলে কিন্তু বেজায় বিপদ।
শনি দেব হলেন গ্রহদের মধ্যে সবথেকে শক্তিশালী। তাই তো সূর্যপুত্রের প্রভাব থেকে বাঁচতে না পারলে কিন্তু বেজায় বিপদ। শাস্ত্র মতে শনিদেব কোনও কারণে যদি ক্ষুন্ন হন, তাহলে যে শুধু সাড়ে সাত বছর ধরে খারাপ সময় চলে, তা নয়। সেই সঙ্গে মহাদশার প্রকোপ শুরু হয়ে যায়, যার প্রভাবে দীর্ঘদিন শুভ কোনও ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা যায় কমে। সেই সঙ্গে কর্মক্ষেত্র থেকে সমাজিক জীবন সব ক্ষেত্রেই এত মাত্রায় বাঁধা আসতে শুরু করে যে জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠতে সময় লাগে না।
এখন প্রশ্ন হল শনি দেবের প্রকোপ থেকে বেঁচে থাকা যায় কীভাবে? এক্ষেত্রে যে যে নিয়মগুলি মেনে চলতে হবে, যেগুলি হল...
১. শনি তান্ত্রিক মন্ত্র:
শাস্ত্র মতে প্রতি শনিবার এক মনে শনি তান্ত্রিক মন্ত্র জপ করলে শনি দেব বেজায় প্রসন্ন হন। ফলে জন্ম কুষ্টিতে শনির গ্রহের প্রভাব কমতে সময় লাগে না। আর এমনটা যখন হয়, তখন জীবনে মারাত্মক কোনও বিপদের ঘটার সম্ভাবনা যেমন কমে, তেমনি জীবন পথে চলতে চলতে নানা বাঁধার সম্মুখিন হওয়ার আশঙ্কাও কমতে শুরু করে। প্রসঙ্গত, মন্ত্রটি হল "ওম প্রাম প্রম পোরাম সাহা শানশেখরাই নমহঃ"।
২. মহাদেবর কালভৈরব রূপের পুজো করতে হবে:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে নিয়মিত শ্রদ্ধা সহকারে দেবাদিদেব শিবের কালভৈরব রূপের অরাধনা করার পাশাপাশি মনে মনে ১০৮ বার যদি "ওম নম শিবায়" মন্ত্রটি জপ করা যায়, তাহলে শনি গ্রহের খারাপ প্রভাব কাটতে শুরু করে, সেই সঙ্গে দেবের আশীর্বাদে মনের ছোট থেকে ছোটতর ইচ্ছা পূরণ হতেও সময় লাগে না।
৩. অশ্বত্থ গাছের পুজো মাস্ট!
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে নিয়মিত অশ্বত্থ গাছের পুজো করলে জীবনে পজেটিভ শক্তির প্রভাব বাড়তে শুরু করে। সেই সঙ্গে শনি দেবও খুব খুশি হন। ফলে খারাপ কোনও ঘটনা ঘটার আশঙ্কা যায় কমে। প্রসঙ্গত, গৃহস্থের অন্দরে পজেটিভ শক্তির প্রভাব বাড়লে জীবনে সুখঃশান্তির ছোঁয়া লাগে, সেই সঙ্গে পরিবারের অন্দরে কোনও ধরনের বিবাদ বা কলহ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার আশঙ্কাও যায় কমে।
৪. প্রতি শনিবার সিঁদুর দিয়ে হনুমানজির পুজো করতে ভুলবেন না:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে প্রকি শনিবার সকাল সকাল স্নান সেরে সিঁদুর সহযোগে হনুমানজির পুজো করলে সাড়ে সাতির প্রকোপ কাটতে যেমন সময় লাগে না, তেমনি কোনও সময় শনি দেবের বক্র দৃষ্টি পরার আশঙ্কাও হ্রাস পায়। শুধু তাই নয়, গৃহস্থের অন্দরে পজেটিভ শক্তির প্রভাব এতটা বেড়ে যায় যে দুঃখ ধারে কাছেও ঘেংষতে পারে না।
৫. মন খুলে দান করা জরুরি:
শনি দেব হলেন কর্মের দেবতা। তাই তাঁর প্রকোপ থেকে যদি বাঁচতে চান, তাহলে মন খুলে লোকের সেবা করুন। সেই সঙ্গে ক্ষমতা অনুসারে দান-ধ্যানও খরুন। এমনটা করলে শনি দেব তো প্রসন্ন হবেনই, সেই সঙ্গে সুকর্মের প্রভাবে জীবন সুন্দর হয়ে উঠতেও দেখবেন সময় লাগবে না।
৬. শনি মন্ত্র জপ করতে ভুলবেন না যেন:
"ওম নীলাঞ্জন সমভাহাসাম রাবি পুত্রাম ইয়ামাগরাজান চায়া মার্তান্ডা-সামভুতাম তাম নমামি শানিশভারাম", এই মন্ত্রটি যদি প্রতি শনিবার পাঠ করার পাশাপাশি দেবের পুজো করতে পারেন, তাহলে শনিদেব বেজায় প্রসন্ন হন। ফলে কোনও দিন শনির মহাদশার প্রকোপ সওয়ার আশঙ্কা যায় কমে।
প্রসঙ্গত, উপরে আলোচিত নিয়মগুলি মেনে চলার পাশাপাশি শনিবার যদি এই জিনিসগুলি না কেনেন, তাহলে শনি গ্রহের খারাপ প্রভাব পরার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। প্রসঙ্গত, এক্ষেত্রে সপ্তাহান্তে যে যে জিনিসগুলি কেনা থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে, সেগুলি হল...
১. ঝাঁটা:
এমনটাও অনেকে বিশ্বাস করেন যে শনিবার ঝাঁটা কেনা উচিত নয়। কারণ সপ্তাহের এই বিশেষ দিনে লোহা বা নুন কিনলে যেমন পরিণতি হয়, ঝাঁটা কিনলেও তেমনটা হওয়ার আশঙ্কা থাকে। শুধু তাই নয়, বেশ কিছু প্রাচীন বইয়ে এমনটাও বলা হয়েছে যে শনিবার ঝাড়ুর মতো জিনিস কিনলে অর্থনৈতিক ক্ষতি হওয়ারও সম্ভাবনাও থাকে। তাই সাবধান!
২. করোসিন, দেশলাই এবং পেট্রল:
হিন্দু ধর্মে আগুনকে শুভ মনে করা হলেও শনিবার ভুলেও কেরোসিন, দেশলাই বা পেট্রোলের মতো দাহ্য বস্তু কেনা চলবে না। কারণ একথা বিশ্বাস করা হয় যে এইসব জিনিস শনিবার কেনার অর্থ হল খারাপ ভাগ্যকে ডেকে আনা। তাই এই বিষয়টি সুস্থ-সুন্দর জীবন পেতে চাইলে এই বিষয়টি মাথায় রাখবেন। দেখবেন আপনার তো বটেই, সেই সঙ্গে পরিবারেরও কোনও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা থাকবে না।
৩. লোহার কোনও জিনিস:
আয়রন দিয়ে বানানো কোনও কিছু দান করলে শনি দেব বেজায় খুশি হন বৈকি। কিন্তু ভুলেও শনিবার লোহা দিয়ে বানানো কোনও জিনিস কিনবেন না যেন! কারণ এমনটা করা নাকি একেবারেই উচিত নয়। আসলে শনিবার লোহা জাতীয় জিনিস কিনলে ধার-দেনায় ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। শুধু তাই নয়, অর্থনৈতিক ক্ষতি হওয়ার সম্ভবানাও বৃদ্ধি পায়।
৪. কালো তিল:
শাস্ত্র মতে শনিবার কালো তিল কেনাও উচিত নয়। কারণ এমনটা করলে শুভ কাজে বাঁধা আসার আশঙ্কা থাকে। শুধু তাই নয়, যে কোনও কাজ হতে হতে আটকে যাওয়ার সম্ভাবনাও বৃদ্ধি পায়। তাই ভুলেও শনিবার তিল কিনবেন না। বরং ওই দিন শনিদেবকে পুজো দেবেন কালো তিল দিয়ে।এমন করলে দেখবেন জীবনে কোনও দিন কোনও বাঁধা আসবে না।
৫. জুতো:
শনিবার কেনা জুতো পরে কোনও শুভ কাজে গেলে সাফল্য পেতে একেবারে নকের জলে, চোখের জলে হতে হয়। তাই যে কোনও পরিস্থিতিতেই শনিবার নতুন জুতো কেনা চলবে না।
৬. নুন:
অনেকেই শনিবার, রবিবার দুদিন ছুটি থাকে। তাই তো অনেকেরই শনিবার বরাদ্দ থাকে মাসকাবারি করার জন্য! আর মাসকাবারি মানেই চাল-ডাল, নুন, তেলের বিশাল ফর্দ। কি তাই তো! কিন্তু এবার থেকে যদি শনিবার বাজার করতে গেলে ভুলেও নুন কিনবেন না যেন! কারণ সপ্তাহের এই নির্দিষ্ট দিনে নুন কিনলে খারাপ সময় ঘারে চেপে বসে বলে মনে করেন অনেকে। এমনকি এই বিষয়ে একাধিক বইয়েও উল্লেখ পাওয়া যায়।