Just In
- 35 min ago রাম নবমীতে করুন এই মন্ত্রগুলি জপ, জীবনের সমস্ত দুঃখ-অশান্তি মিটবে, আসবে সুখ
- 2 hrs ago শত্রুদের থেকে দুরে থাকতে হবে মিথুনকে, আর্থিক লাভ ধনুর, আজকের দিন কেমন যাবে জানতে দেখুন রাশিফল
- 18 hrs ago চৈত্র নবরাত্রিতে মেনে চলুন এই নিয়মগুলি, জীবনে আসবে সুখ-সমৃদ্ধি, হবে টাকার বৃষ্টি
- 20 hrs ago আপনি কি ডিপ্রেশনে ভুগছেন? শোবার আগে করুন ধ্যান, ফল পাবেন হাতেনাতে
শিশুদের নিউমোনিয়া : কারণ, লক্ষণ, চিকিৎসা ও প্রতিরোধ
প্রতি বছর ১২ নভেম্বর 'বিশ্ব নিউমোনিয়া দিবস' পালন করা হয়। প্রথম বিশ্ব নিউমোনিয়া দিবস ২০০৯ সালের ২ নভেম্বর পালিত হয়েছিল এবং তারপর থেকে দিনটি স্থানান্তরিত করে ১২ নভেম্বর করা হয়। এর মূল লক্ষ্য হল, নিউমোনিয়া সম্পর্কে মানুষকে তথ্য প্রদান এবং সচেতন করা। এছাড়া, প্রতিবছর নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে লাখ লাখ শিশুকে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচাতে সহায়তা করাও এর মূল লক্ষ্য। শিশুদের নিউমোনিয়ার বিরুদ্ধে গ্লোবাল কোয়ালিশন দ্বারা আয়োজিত এই দিনটি দাতা, নীতিনির্ধারক, স্বাস্থ্য সংক্রান্ত পেশার মানুষদের এবং সাধারণ মানুষের মনোযোগ আকর্ষিত করার চেষ্টা করে।
নিউমোনিয়া, শিশুদের বিশ্বের সবচেয়ে বড় মৃত্যুর কারণ হিসেবে বিবেচিত। নিউমোনিয়ার কারণে প্রতি ৩৯ সেকেন্ডে একটি শিশুর মৃত্যু হয়, তবুও এটি একটি উপেক্ষিত রোগ হিসেবে রয়ে গেছে।
বিশ্বের মৃত্যুর অষ্টম প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত এই রোগ। এর প্রতিরোধের পদ্ধতি সম্পর্কে মানুষকে শিক্ষিত করার প্রয়োজন আছে। যদিও, এই রোগ প্রতিরোধের জন্য ভ্যাকসিন পাওয়া যায় তবে, বাড়াবাড়ি হলে লড়াই করা কঠিন হতে পারে। চিকিৎসকরা ব্যথা এবং ফোলাভাব কমাতে সাধারণত কিছু অ্যান্টিবায়োটিক লিখে থাকেন। আসুন আমরা দেখে নিই এই রোগ কীভাবে ছোট শিশুদের প্রভাবিত করে।
নিউমোনিয়া কী ?
নিউমোনিয়া মূলত আমাদের ফুসফুসে সংক্রমণের কারণে হয়। যখন আমাদের ফুসফুসে বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের সংক্রমণ হয়, যা আমাদের শ্বাসযন্ত্রকে আক্রমণ করে, তখন একে বলা হয় নিউমোনিয়া। এটি ফুসফুসের এক বা উভয় অংশকে প্রভাবিত করতে পারে।
নিউমোনিয়ার ভাইরাস ফুসফুসের মাধ্যমে আমাদের শরীরে প্রবেশ করে এবং বায়ুথলিতে এসে থেকে যায়। এর ফলে, বায়ুথলিগুলিতে শ্লেষ্মা, পুঁজ ও অন্যান্য তরলে ভরে যায়, যার কারণে শ্বাস নেওয়া কঠিন হয়ে ওঠে।
সাধারণ উপসর্গ হল কাশি, যা ফুসফুস থেকে গাঢ় শ্লেষ্মার সঙ্গে হয়, যা সবুজ, বাদামি বা রক্তের ছিটেযুক্ত হতে পারে। মানুষের ঠান্ডা বা ফ্লু এবং প্রায়ই শীতকালের পরে নিউমোনিয়ার বিকাশ হয়।
শিশুদের নিউমোনিয়া হওয়ার কারণ
নিউমোনিয়া বিভিন্ন জীবাণু দ্বারা সৃষ্ট হতে পারে, যেমন, ভাইরাস, ব্যাকটিরিয়া, ছত্রাক এবং পরজীবী - বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নিউমোনিয়া অ্যাডেনোভাইরাস, রাইনো ভাইরাস, ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস, শ্বাসযন্ত্রের সিনসিটিয়াল ভাইরাস এবং প্যারাইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের কারণে হয়।
শিশুদের নিউমোনিয়ার কারণগুলি বয়স অনুসারে পরিবর্তিত হতে পারে। অর্থাৎ, শ্বাসকষ্টের ভাইরাসজনিত নিউমোনিয়া, স্ট্রেপ্টোকোকাস নিউমোনিয়া এবং হেমোফিলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা পাঁচ বছরের কম বয়সের শিশুদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। মাইকোপ্লাজমা নিউমোনিয়া প্রায়শই ৫ থেকে ১৩ বছর বয়সের বাচ্চাদের মধ্যে দেখা যায়।
ব্যাক্টেরিয়াজনিত নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুরা সাধারণত দ্রুত অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং যারা ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয় তাদের লক্ষণগুলি ধীরে ধীরে দেখা দেয় এবং কম মারাত্মক হয়।
শিশুদের মধ্যে নিউমোনিয়ার লক্ষণ
শিশুদের মধ্যে লক্ষণগুলি কম সুনির্দিষ্ট হতে পারে এবং তারা বুকে সংক্রমণের স্পষ্ট লক্ষণ দেখাতে পারে না। শিশুদের মধ্যে সংক্রমণের কয়েকটি সাধারণ লক্ষণ হল -
ক) জ্বর
খ) শক্তির অভাব
গ) দ্রুতগতিতে অগভীর শ্বাস। শ্বাসের সাথে জোরে জোরে শব্দ
ঘ) খাওয়ানোতে অসুবিধা হওয়া
ঙ) ক্লান্তি বা ঝিমুনি ভাব
শিশুদের নিউমোনিয়ার চিকিৎসা
নিউমোনিয়া বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বাড়িতেই চিকিৎসা করা যায়। তবে, বাচ্চাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করতে হতে পারে।
হাসপাতালের চিকিৎসার মধ্যে ইন্ট্রাভেনাস অ্যান্টিবায়োটিক এবং শ্বাসযন্ত্রের থেরাপি (শ্বাস প্রশ্বাসের চিকিৎসা) অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। গুরুতর ক্ষেত্রে আই সি ইউ -তে চিকিৎসা করা যেতে পারে।
শিশুদের ক্ষেত্রে নিউমোনিয়া প্রতিরোধ
শিশু বা বাচ্চাদের এই সংক্রমণের ঝুঁকি হ্রাস করতে নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি গ্রহণ করা যেতে পারে -
ক) বাচ্চার প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে স্তন্যপান করান
খ) ঘরের পরিবেশ গরম এবং ভাল বায়ু চলাচল যাতে করে সে ব্যবস্থা করুন
গ) সর্দি, ফ্লু বা অন্যান্য সংক্রমণ রয়েছে এমন ব্যক্তির সাথে যোগাযোগ এড়ান
ঘ) সময়মতো টিকা দিন
সংক্রমণের সাথে লড়াই করার জন্য শরীর যখন কাজ করে তখন শিশুর প্রচুর পরিমাণে বিশ্রাম নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে। যদি আপনার সন্তানের ব্যাকটিরিয়াজনিত নিউমোনিয়া হয় এবং চিকিৎসক বিভিন্ন অ্যান্টিবায়োটিক নির্ধারণ করেন, সেই ওষুধগুলি সময়মতো দিন, যা আপনার শিশুকে দ্রুত সুস্থ হতে এবং সংক্রমণ ছড়ানো রোধ করতে সহায়তা করবে। শিশুর তাপমাত্রা প্রতিদিন সকালে এবং সন্ধ্যেয় কমপক্ষে একবার দেখে নিন। যদি তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের বেশি হয় তবে ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।