Just In
যমজ বাচ্চার যত্ন নিতে গিয়ে নাজেহাল অবস্থা? এই সহজ টিপসগুলি অনুসরণ করুন
সন্তান সুখ, প্রত্যেক মা-বাবার কাছেই খুব আনন্দের এবং মূল্যবান। আবার যদি যমজ সন্তান হয়, তাহলে তো আনন্দও দ্বিগুণ বেড়ে যায়। তবে যমজ সন্তানের যত্ন নেওয়া বা তাদের লালনপালন করা খুব একটা সহজ কাজ নয়। এর জন্য মা-বাবাকে বেশ কষ্ট করতে হয়।
যমজ সন্তানদের যত্ন নেওয়া মানে, দ্বিগুণ দায়িত্ব পালনের সাথে দ্বিগুণ কাজ বেড়ে যাওয়া। তবে কিছু সহজ টিপস অনুসরণ করলে, বাচ্চাদের যত্ন নেওয়ার প্রক্রিয়া অনেকটাই সহজ হয়ে উঠতে পারে। তাহলে দেখে নিন কীভাবে যমজ সন্তানদের যত্ন নেবেন।
১) সন্তানদের যত্নে সাহায্য নিন
বাচ্চাদের লালনপালনের ক্ষেত্রে আপনি আপনার বন্ধুবান্ধব, পরিবার-পরিজন এমনকি প্রতিবেশীদের সাহায্যও নিতে পারেন। বাচ্চাদের সঙ্গে খেলতে অনেকই পছন্দ করে। তাদের আমন্ত্রণ জানান, তারা যখন বাচ্চাদের সাথে খেলবে তখন আপনি কিছুটা বিশ্রাম নিতে পারবেন।
২) সময়সূচী মেনে চলুন
যমজ সন্তানদের যত্ন নেওয়ার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময়সূচী মেনে চলুন। প্রতিদিন একই সময়সূচী অনুসরণ করলে, সন্তানদের মধ্যে নিরাপদ বোধ গড়ে ওঠে, কারণ তারা জানে যে পরবর্তী সময়ে কী ঘটতে চলেছে। একই সময়ে ঘুম, খাওয়া, খেলা এবং অন্যান্য পরিচর্যা করলে, আপনি নিজের জন্যও সময় বের করতে পারবেন। এছাড়া বাচ্চাদের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময়সূচী অনুসরণ করা, একটি ভাল অভ্যাসের সূচনা হতে পারে। যখন যমজ শিশু বড় হবে, তখন তারাও একটি নির্দিষ্ট সময়সূচী অনুসরণ করতে অভ্যস্ত হবে।
৩) সন্তানদের ভিন্ন ব্যক্তিত্বের প্রতি শ্রদ্ধা রাখুন
যমজ সন্তান হওয়ার অর্থ এই নয়, যে তাদের ব্যক্তিত্বও এক হবে। যমজ সন্তান দেখতে একই রকম হতে পারে, তবে তাদের ব্যক্তিত্ব কিন্তু ভিন্ন হতেই পারে। অতএব, তাদের একভাবে বিবেচনা করা এড়িয়ে চলুন। বরং তাদের ভিন্ন ব্যক্তিত্ব স্বীকার করুন এবং তাদের স্বতন্ত্র অনুশীলনে সহায়তা করুন। সন্তানদের মধ্যে তুলনা অথবা পার্থক্য করা এড়িয়ে চলুন। ভিন্ন স্বভাব তাদের ভিন্ন ক্ষেত্রে পারদর্শী করে তুলতে পারে।
৪) অন্যান্য যমজ সন্তানের বাবা-মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন
যাদের যমজ সন্তান আছে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন। তারা তাদের যমজ সন্তানকে কীভাবে বড় করেছেন সেই অভিজ্ঞতা আপনাকে সাহায্য করতে পারে। বর্তমানে এই ধরনের অনেক স্থানীয় ক্লাব এবং কমিউনিটিও গড়ে উঠেছে।
আপনার বাচ্চা অপুষ্টির শিকার নয় তো? বুঝবেন কীভাবে? জেনে নিন অপুষ্টির কিছু লক্ষণ
৫) বাচ্চাদের কাঁদতে দিন
যমজ সন্তানের মায়েদের সবথেকে কঠিন বিষয়গুলির মধ্যে অন্যতম হল, দু'জন সন্তানকে একসাথে ১০০ শতাংশ সময় না দিতে পারার অপরাধবোধ। আর এই অপরাধবোধ আরও দৃঢ় হয় বাচ্চারা কান্নাকাটি করলে। যমজ সন্তানের ক্ষেত্রে, একটি সন্তানের পরিচর্যা করার সময় অন্য সন্তানের কেঁদে ওঠা, খুবই সাধারণ ব্যাপার। এতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। শিশুদের ক্ষেত্রে কান্না হল, এক ধরনের ভাষা। শিশুদের মুখে বুলি ফোটার আগে পর্যন্ত, শিশুরা তাদের চাহিদা কান্নার মাধ্যমে ব্যক্ত করে। শিশুদের কান্নার অর্থ হল, তাদের চাহিদা, ইচ্ছা আপনাকে শুনতে হবে এবং তাদের প্রতি বেশি মনোযোগও দিতে হবে।
৬) নিজের অবস্থান বজায় রাখুন
বাচ্চাদের মধ্যে নাটকীয় ভাবে জেদ করা, হাত-পা ছোঁড়ার প্রবণতা খুবই স্বাভাবিক। বাচ্চাদের মনে হয়, এরকম করলে তারা যা চাইবে তাই পাবে। বাচ্চারা খুব সহজেই মা-বাবার দুর্বলতা বুঝতে পারে। আর যমজ সন্তানের ক্ষেত্রে চিৎকার, আর্জি এবং কান্নাকাটি হয় দ্বিগুণ। তাই যমজ সন্তানের মায়েদের তুলনামূলক বেশি কঠোর হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। "না" মানে যে একদমই না, সেটা আপনার আচরণে দৃঢ় থেকে তাদের বুঝিয়ে দিন। আপনার এই দৃঢ়তাই সন্তান সামলানোর ক্ষেত্রে, আপনাকে সাহায্য করতে পারে।
৭) আলাদা আলাদাভাবে সময় কাটান
যমজ সন্তানের সঙ্গে আলাদা আলাদা সময় কাটানো তাদের পৃথক পরিচয় বিকাশের একটি আদর্শ উপায়। আপনার যমজ সন্তানদের সঙ্গে কিছুটা ব্যক্তিগত সময় কাটাতে ভুলবেন না। উভয়ের জন্য পৃথক পৃথক সময়সূচী তৈরি করুন এবং সেই অনুসারে বাচ্চাদের সঙ্গে সময় কাটান। এই সময়, আপনি আপনার সন্তানের স্বতন্ত্র প্রয়োজন সম্পর্কে অবগত হতে পারবেন এবং তাদের ব্যক্তিত্বও বুঝতে পারবেন।