Just In
আপনার বাচ্চা কি সবকিছু ভুলে যায়? দেখুন স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর সহজ টিপস
প্রত্যেক বাচ্চারই জীবনে অগ্রগতির জন্য স্মৃতিশক্তি শক্তিশালী হওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ জীবনে সাফল্য পাওয়া না-পাওয়ার অনেকটাই নির্ভর করে স্মৃতিশক্তির উপর। স্মৃতি শক্তিশালী হলে নতুন কিছু শিখতে, মনে রাখতে খুব সহজ হয় এবং বাচ্চারা স্কুলে ভালো পারফরম্যান্সও করতে পারে। শুধু পড়াশোনা নয় জীবনে অভিজ্ঞতা সঞ্চয়েও সাহায্য করে তুখোড় স্মৃতিশক্তি। তবে আমরা কেউই কিন্তু প্রখর স্মৃতিশক্তি নিয়ে জন্ম নিই না। অন্য সব দক্ষতার মতো এটিও অর্জন করতে হয়। তাই এই আর্টিকেলে আজ আমরা আপনাদের কিছু কৌশল জানাব, যার মাধ্যমে আপনি আপনার বাচ্চার স্মৃতিশক্তি শক্তিশালী করতে পারেন, জানুন সেগুলি।
১) শিশুকে প্রশ্ন করতে সেখান
আমরা তখনই কোনও জিনিস মনে রাখতে পারি যখন সেটা ভালভাবে বুঝতে পারি। তাই আপনার বাচ্চার মধ্যে যাতে কোনও কিছু জানার আগ্রহ থাকে এবং ভালভাবে জানার জন্য প্রশ্ন করে, সে বিষয়ের দিকে নজর রাখুন। যত প্রশ্ন করবে ততই বিষয়টি গভীরভাবে উপলব্ধি করবে সে। এর ফলে শিশুর স্মৃতিশক্তি শক্তিশালী হয়ে উঠবে।
২) গান, ছড়া তৈরি করতে শেখান
শিশু যা শিখছে সেগুলো দিয়ে তাকে ছড়া, গান তৈরি করতে শেখান। মানুষের মস্তিষ্ক মিউজিক এবং প্যাটার্ন মনে রাখতে পারে দ্রূত। তাই মিউজিক বা ছড়া শিশুকে কিছু শেখালে সে তাড়াতাড়ি সবকিছু মনে করতে পারবে।
৩) লাইব্রেরি, মিউজিয়ামে নিয়ে যান
আপনি যদি চান আপনার বাচ্চা পড়াশোনা মনে রাখুক তাহলে তাকে এক জায়গায় বসিয়ে পড়াবেন না, বরং ঘুরতে ঘুরতে শেখান। লাইব্রেরিতে নিয়ে গিয়ে বই দেখাতে পারেন। মিউজিয়াম বা আর্ট গ্যালারিতেও নিয়ে যান। শিশু যেটা পড়ছে সেটায় আগ্রহ তৈরি হওয়া জরুরি, আগ্রহ নিয়ে পড়লে তবেই মনে থাকবে।
৪) শিশুর সঙ্গে আলোচনা করুন
বিভিন্ন বিষয়ে শিশুর সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। তারা কি ভাবছে জানতে চান। এভাবে তাদের চিন্তাধারার যেমন উন্নতি হবে তেমন স্মৃতিশক্তিও বাড়বে।
শিশুদের জন্য বিপজ্জনক কিছু পণ্য, যা প্রত্যেক পিতা-মাতার এড়ানো উচিত
৫) ছবির মাধ্যমে মনে রাখতে শেখান শিশুকে
শিশুকে কিছু শেখানোর সময় ছবির ব্যবহার করুন। তাহলে শিশুর মনে রাখতে সুবিধা হবে।
৬) বাচ্চাকে বলুন আপনাকে শেখাতে
বাবা-মা, বন্ধুবান্ধব, ভাই-বোনের কাছ থেকে একজন বাচ্চা অনেক কিছু শেখে, সে যা শিখছে সেগুলো জানতে চান। আপনাকে বোঝানোর মাধ্যমে শিশুর স্মৃতিশক্তি বাড়বে।
৭) প্রাণায়াম
প্রাণায়াম করলে মন শান্ত হয়, একাগ্রতা বাড়ে। ভ্রমরী প্রাণায়াম করলে মন শান্ত থাকবে, সমস্ত খারাপ চিন্তা দূর হবে, একাগ্রতা এবং স্মৃতিশক্তি বাড়বে। নাড়ী শোধন প্রাণায়াম করলে স্নায়ুতন্ত্র ঠিক থাকবে এবং মনোযোগ বাড়বে। এই প্রাণায়াম শিশুকে কেবল শান্ত করে না, পাশাপাশি তাদের স্মৃতিশক্তি বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে। কীভাবে ধ্যান করতে হয় তা আপনার শিশুকে অল্প বয়স থেকে শেখান।
৮) শরীরচর্চা
শারীরিক কসরত শরীর ও মন দুই ভাল রাখে। মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়াতে সহায়তা করে। শরীরচর্চা প্রতিদিনের তালিকায় রাখা উচিত। শিশুদের প্রতিদিন শরীরচর্চার অভ্যাস থাকলে খুব ভাল।
৯) নিউট্রিশন
শিশুকে কী খাওয়াচ্ছেন তার ওপর মস্তিষ্কের কার্যকারিতা নির্ভর করে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, মিনারেল, ভিটামিন সমৃদ্ধ টাটকা ফলমূল ও সবজি খাওয়ান বাচ্চাকে। আপনার বাচ্চা পর্যাপ্ত পরিমাণ জল খাচ্ছে কিনা সেদিকে নজর রাখুন। ডিহাইড্রেশন হলে স্মৃতিশক্তি হ্রাস পায়।
আপনার সন্তান কি খুব একদমই শৃঙ্খলাবদ্ধ নয়? সন্তানকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করতে রইল কিছু টিপস্
১০) ডিজিটাল ডিটক্স
বিভিন্ন গ্যাজেটের অত্যাধিক ব্যবহার শিশুর মস্তিষ্কের কাঠামো পরিবর্তন করতে পারে। এটি শিশুদের দীর্ঘ সময়ের জন্য তথ্য ধরে রাখার ক্ষমতা হ্রাস করে। তাই আপনার বাচ্চার গ্যাজেট ব্যবহার সীমাবদ্ধ করুন। এর পরিবর্তে তাদের বই পড়া এবং অন্যান্য কাজে উৎসাহিত করুন।
১১) রঙ
শিশুকে পড়ানোর সময় রঙের ব্যবহার করুন। রঙ ব্যবহার করে শিশুকে পড়ালে তার মস্তিষ্কে তথ্য দীর্ঘস্থায়ী হবে। বিভিন্ন রঙ দিয়ে বইয়ের গুরুত্বপূর্ণ লাইন বা প্যারাগুলি হাইলাইট করুন। নোট ব্যবহার করতে পারেন। পাঠ্যপুস্তকে নোট রেখে দিন, এতে শিশু মনে রাখতে পারবে দ্রূত।
১২) ব্যক্তিগত উদাহরণ
এছাড়া আপনার বাচ্চাকে কোনও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ব্যাখ্যা করার সময় তাকে ব্যক্তিগত উদাহরণ দিন। এতে স্মৃতিশক্তি মজবুত হবে। পরবর্তী সময়ে ওই বিষয়টি তাড়াতাড়ি মনে পড়বে। দ্রুত মুখস্থ করার এটি একটি মজাদার উপায়।
সহজ এই টিপসগুলো মেনে চললে আপনার শিশুর স্মৃতিশক্তি তুখোড় হবে!