Just In
নবজাতকের যত্ন নিতে অবশ্যই মেনে চলুন এই ৮ টিপস!
নবজাতকের যত্ন নেওয়া মোটেই সহজ ব্যাপার নয়। প্রত্যেক মায়ের কাছেই এটি অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। শিশুর যত্ন নেওয়ার ক্ষেত্রে সব দিকেই অতিরিক্ত সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়। তাছাড়া নবজাতকদের স্বাস্থ্য ও ত্বক বড়দের তুলনায় অনেক বেশি সংবেদনশীল হয়। তাই একটুও অসাবধানতা নবজাতকের ত্বকের ক্ষতির পাশাপাশি, স্বাভাবিক বিকাশের বড়োসড়ো ক্ষতি করতে পারে।
তাহলে আসুন দেখে নেওয়া যাক, সদ্যোজাত শিশুর যত্ন নিতে কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজনীয়।
১) খাওয়ানো
নবজাতক শিশুদের সময়মতো খাওয়ানো একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ। নবজাতককে সারাদিনে প্রতি ২-৩ ঘণ্টা অন্তর খাওয়ানো উচিত অর্থাৎ প্রায় ৮-১২ বার। তাছাড়া নবজাতকের জন্মের পর প্রথম ৬ মাস কেবলমাত্র স্তন্যপান করানো উচিত। স্তন্যদুগ্ধেই নবজাতকের প্রয়োজনীয় পুষ্টি এবং অ্যান্টিবডি থাকে, যা শিশুর স্বাভাবিক বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয়। তবে শিশু যদি স্তন্যপান করতে না পারে, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো খাওয়ানোর চেষ্টা করুন।
২) ঢেকুর তোলানো
নবজাতককে খাওয়ানোর পর ঢেকুর তোলানো অত্যন্ত জরুরি। শিশুরা খাওয়ার সময় বাতাস গিলে ফেলে, যা পেটে গিয়ে গ্যাস তৈরি করে। তাই বার্পিং বা ঢেকুর তোলানো, এই অতিরিক্ত বাতাসকে বের করে দিয়ে, হজম করাতে সহায়তা করে। খাওয়ার পরে বাচ্চাকে ঢেকুর তোলানোর জন্য, প্রথমে এক হাত দিয়ে শিশুকে কাঁধে ধরে রাখতে হবে। তারপর অন্য হাত দিয়ে খুব আলতো করে বাচ্চার পিঠে চাপড় মারুন।
৩) নবজাতককে কীভাবে ধরবেন
নবজাতককে সামলাতে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। শিশুকে ধরার সময়, নবজাতকের মাথা এবং ঘাড় এক হাত দিয়ে ধরে রাখতে হবে। কারণ ওই সময় বাচ্চাদের ঘাড়, মাথা এবং মেরুদন্ড সেভাবে মজবুত হয় না। জন্মের কমপক্ষে ৩ মাস পর থেকে ঘাড়, মাথা ও মেরুদন্ড ধীরে ধীরে মজবুত হতে শুরু করে।
৪) আম্বিলিক্যাল কর্ড স্টাম্পের যত্ন নিন
জন্মের পর প্রথম এক মাস নবজাতকের নাভি তথা আম্বিলিক্যাল কর্ড স্টাম্পের বিশেষ যত্ন নেওয়ার প্রয়োজন হয়। নাভির জায়গা পরিষ্কার ও শুকনো রাখুন। শিশুর ডায়াপার ভাঁজ করে রাখুন যাতে স্টাম্প শুকাতে পারে। নাভির জায়গায় হাত দেওয়ার আগে আপনার হাত জীবাণুমুক্ত করুন। নাভি পরিষ্কার করতে, একটি স্যাঁতসেঁতে কাপড় ব্যবহার করুন এবং একটি পরিষ্কার কাপড় দিয়ে আলতো হাতে মুছে দিন। কর্ড-স্টাম্প এলাকায় যাতে কোনওভাবে সংক্রমণ না হয়, সেদিকে অবশ্যই খেয়াল রাখুন। যদি নাভিতে লালচেভাব, ফোলাভাব, দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব বা পুঁজ ও রক্তপাত হয়, তবে শিশুকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান।
৫) ম্যাসাজ করুন
নবজাতকের ত্বক, পেশী এবং হাড়ের যত্নের ক্ষেত্রে ম্যাসাজ অত্যন্ত জরুরি। ম্যাসাজ শিশুর ভাল ঘুম, রক্ত সঞ্চালন ও হজমের উন্নতিতে সাহায্য করে। হাতে অল্প পরিমাণে বেবি অয়েল বা লোশন নিন। তারপর আলতো করে বেবির শরীরে মালিশ করুন। শিশুর শরীর ম্যাসাজ করার সময় তার সঙ্গে কথা বলুন। স্নানের আগে শিশুকে ম্যাসাজ করা সবচেয়ে ভাল।
৬) শিশুকে স্নান করান
নবজাতকদের অতিরিক্ত স্নান করানো একেবারেই উচিত নয়। নবজাতকদের সপ্তাহে ২-৩ বার স্নান করানোই যথেষ্ট। স্নান করানোর সময়, মাইল্ড সাবান বা বডি ওয়াশ এবং ঈষদুষ্ণ জল, নরম তোয়ালে ব্যবহার করুন। স্নান করানোর পর বেবি কেয়ার ক্রিম কিংবা লোশন অবশ্যই ব্যবহার করুন।
৭) ডায়াপার জনিত সমস্যা থেকে সাবধান
শিশুকে অবশ্যই পরিষ্কার ডায়াপার পরানোর চেষ্টা করুন। যদি আপনার শিশু পর্যাপ্ত বুকের দুধ বা ফর্মুলা পায়, তাহলে সে নিয়মিত মলত্যাগের পাশাপাশি দিনে অন্তত ৬ থেকে ৮ বার প্রস্রাব করবে। তাই, ঘন ঘন আপনি ডায়াপার পরিবর্তন করুন। নোংরা ডায়াপার থেকে শিশুর নানারকম সমস্যা হতে পারে। তবে শিশুর ত্বক যেন সবসময় ডায়াপারে আবদ্ধ না থাকে সেদিকেও নজর রাখতে হবে।
৮) ঘুমানো
প্রতিটি শিশুরই আলাদা আলাদা ঘুমের চক্র রয়েছে। নবজাতকদের প্রথম দুই মাসে দিনে প্রায় ১৬ ঘণ্টা ঘুমানোর প্রয়োজন পড়ে। তারা সাধারণত ২-৪ ঘণ্টা টানা ঘুমায় এবং ক্ষুধার্ত হলে বা প্রস্রাব করে ফেললে জেগে ওঠে। যেহেতু শিশুকে প্রতি ৩ ঘণ্টা পরপর খাওয়ানো দরকার, তাই আপনার তাকে ঘুম থেকে জাগিয়ে খাওয়ানোর প্রয়োজন হতে পারে।