Just In
গর্ভপাতের ধাক্কা মানসিকভাবে সামলে উঠবেন কীভাবে?
কীভাবে গর্ভপাতের মতো দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতি ভুলে নতুন করে সাধারণ জীবনে ফিরে আসবেন তার উপর আজকের প্রতিবেদন রইলো।
দাম্পত্যজীবন আমাদের কাছে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। দুজন মানুষ একসাথে পথ চলার প্রতি দায়বদ্ধ হয়। এই দাম্পত্যজীবন পূর্ণতা পায় যখন একটা সন্তান আসে। নিজেদের চাওয়া পাওয়া, সুখ দুঃখ সব কিছু নতুন অতিথিকে ঘিরে আবর্তিত হয়। এক অন্য অনুভূতি, ভালোলাগা শুরু হয় সেই প্রথম দিন থেকে যেদিন আপনি খুশির খবর জানতে পারেন। তারপর দশ মাস দশ দিন ধরে নতুন অতিথির আসার অপেক্ষা। তিলে তিলে নিজেকে গড়ে তোলা। কিন্তু কোন শারীরিক সমস্যার কারণে বা অন্য কোন কারণে গর্ভের সন্তান পৃথিবীর আলো দেখতে না পেলে সেটা চরম দুঃখের কারণ হতে দাঁড়ায়। মানসিক এবং শারীরিক উভয় দিক থেকেই অবসাদ আপনাকে গ্রাস করে। মায়েদের ক্ষেত্রে এই অবসাদ অনেক বেশি। এর ফলে মা তার নিজের উপর ভরসা, আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলতে থাকেন। অনেক সময় এই অবসাদের মাত্রা এতটাই বেশি হয় যে কেউ কেউ মানসিক অশান্তিতে ভুগতে থাকেন, পারিবারিক সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চান, আবার কেউ আত্মহননের পথ পর্যন্ত খুঁজে নিতে চান।
এটা সত্যি দুঃখের বিষয় যদি কেউ এই পরিস্থিতির মধ্যে পড়েন। কিভাবে বেরিয়ে আসবেন এই সময়কে অতিক্রম করে কীভাবে গর্ভপাতের মতো দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতি ভুলে নতুন করে সাধারণ জীবনে ফিরে আসবেন তার উপর আজকের প্রতিবেদন রইলো।
১. নিজের সীমা জানুন
এই সময় মানসিক ভাবে ভেঙে পড়া স্বাভাবিক। তবে একা থাকাটাও ভালো নয়। কারণ তাতে একাকিত্ব গ্রাস করতে পারে। অনেকে এই সময় বলেন পারিবারিক অনুষ্ঠানে যেতে। কাছের লোকজনের মাঝে থাকলে অনেক সময় সাময়িক শান্তি লাগতে পারে। যদি নিজের মন থেকে সত্যি সায় দিলে তবেই অংশ নিন এইসব অনুষ্ঠানে। যদি ভালো না লাগে তাহলে জোর করে যাওয়ার দরকার নেই। শুভেচ্ছা পত্র দিয়েও নিজের সামাজিকতা রক্ষা করতে পারেন। বারবার একই সহানুভূতি মাখানো কথা সবার থেকে পেতে ভালো নাও লাগতে পারে। কিংবা অন্যের ছোট বাচ্চা দেখলে আপনার মধ্যে সেই খারাপ লাগাটা আরো বাড়তে পারে। যদি একান্তই যেতে হয় সেক্ষেত্রে নিজের মত করে খুঁজে নিন নিরিবিলি জায়গা, যেখানে নিজেকে নিজে সময় দিতে পারবেন।
২. দানশীল কোন কাজে যুক্ত হন
ভালো কোন কাজ করলে মন ভালো থাকে। সমাজসেবামূলক কোন কাজে নিজেকে নিযুক্ত করতে পারেন। নিজের সেবামূলক কাজ দিয়ে যদি অন্যের মুখে হাসি ফোটাতে পারেন, সেই আনন্দ আপনার মানসিক অবসাদ কাটাতে অনেকটাই সাহায্য করবে। গরীব অনেক বাচ্চা আছে যাদেরকে খাওয়াতে পারেন। কোনো অনাথ আশ্রমে বাচ্চাদের জামা কাপড় দিতে পারেন। অনেকগুলো বাচ্চার একদিনের খুশির কারণ হতে পারলেও আপনি নিজেকে অনেকটা শান্তি দিতে পারেন।
৩. নিন্দুকদের থেকে দূরে থাকুন
প্রায় সবাই এই অসময়ে আপনার পাশে থাকলেও কিছু লোক আছে, যারা আপনার সমালোচনা করবেই। অহেতুক সমস্যার কথা বলে আপনাকে আরো চিন্তায় ফেলবে। কারণ ছাড়াই দোষের ভাগীদার বানাতে পিছপা হবে না। এইসব ব্যক্তির থেকে দূরে থাকতে চেষ্টা করুন। সমবেদনার খোলসে মোড়া সমালোচনা এই সময় কোনোভাবেই কাম্য নয়। এইসব লোকেদের এবং তাদের কথা ও কাজকে এড়িয়ে চলুন।
৪. অন্য কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখুন
চুপচাপ বসে না থেকে নিজেকে অন্য কাজে ব্যাস্ত রাখুন। নিজের ভালোলাগে যেসব কাজ করতে, নিজেকে খুঁজে পান যেসব কাজে, সেগুলো করুন। ছবি আঁকা, কবিতা পড়া বা অন্য যা কিছু। মনকে শান্ত রাখতে মেডিটেশন বা ধ্যানও করতে পারেন। মন চাইলে কোথাও অল্পদিনের জন্যে ঘুরেও আসতে পারেন।
৫. চিকিৎসকের সাথে কথা বলুন
সর্বোপরি চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করুন। তাদের কাছে মত নিন। অভিজ্ঞ পরামর্শ আপনাকে জীবনে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে। কিভাবে নিজের শূন্যস্থান পূরণ করতে পারেন তা নিয়েও সুচিন্তিত মতামত জ্ঞাপন করতে পারেন।