Just In
বাড়িতে থেকে বাচ্চার দুষ্টুমি বেড়ে গিয়েছে? জানুন বাচ্চাকে বাড়িতে ব্যস্ত রাখার কৌশল
নিউ নর্মালে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে জীবন। অনেক অফিস খুলে গিয়েছে। শপিং মল, সিনেমা হলও চালু হয়ে গিয়েছে। তবে সতর্কতা হিসেবে এখনও স্কুল খোলেনি। উঁচু ক্লাসের ছাত্র-ছাত্রীরা স্কুলে গেলেও ছোট বাচ্চারা এখনও ঘরবন্দি। অনলাইন ক্লাস আর বাড়ির মধ্যেই সীমাবদ্ধ এখন তাদের পৃথিবী। দীর্ঘদিন ধরে বাড়িতে থাকতে থাকতে বাচ্চারা বিরক্ত হয়ে পড়ছে। যার ফল অতিরিক্ত দুষ্টুমি। ফোন, কম্পিউটারের প্রতি ঝোঁক বাড়ছে। বাচ্চাদের সামলানো কঠিন হয়ে পড়ছে। তাই আজকের এই আর্টিকেলে এমন কিছু টিপস দেওয়া হল, যেগুলি বাচ্চাদেরকে বাড়িতে ব্যস্ত রাখবে।
ছোট বাচ্চাদের জন্য
ছোট বাচ্চা যা প্লে স্কুলে যায় তারা প্রায় এক বছর ধরে স্কুলের মুখ দেখেনি। স্কুলে যাওয়ার সময় তাদের রুটিন, অভ্যাস আলাদা ছিল। সেগুলো ফিরিয়ে আনার কোনও দরকার নেই, বরং তাদের জন্য নতুন রুটিন তৈরি করুন।
১) বাবেলস গেম
বাবেলস নিয়ে খেলতে সব বাচ্চা পছন্দ করে। রাস্তাঘাটে বেরোলেই বাবেলস কিনতে চায় তারা। এখন বাইরে বেরোনো বন্ধ তাই বাড়িতেই বাচ্চাকে বানিয়ে দিন। ১/২ কাপ corn সিরাপ, ৩ কাপ জল ও ১ কাপ বাসন মাজার সাবান। প্রথমে corn সিরাপ জলের সঙ্গে মেশান। তাতে বাসন মাজার সাবান অ্যাড করুন। তরলটা একটা জায়গায় ভরে বাবেলস স্টিক দিয়ে বাচ্চার হাতে দিয়ে দিন। ঘরের মধ্যে, ছাদে বা বারান্দায় সেটা নিয়ে খেলবে খুদেটা। সেও যেমন মজা পাবে তেমন আপনিও কিছুক্ষণ নিশ্চিন্তে কাজ করতে পারবেন।
২) রং করা
আঁকতে বা রং করতে সব বাচ্চা পছন্দ করে। বাচ্চাকে কালার বুক কিনে দিন। রং করতে বলুন। আপনিও ছোট ছোট জিনিস এঁকে দিতে পারেন রং করার জন্য।
৩) বাড়িতে খেলার জায়গা বানিয়ে দিন
বাচ্চারা ছোটাছুটি, দৌড়ঝাপ করতে ভালোবাসে। এক জায়গায় শান্ত হয়ে তারা বসতেই চাইবে না। করোনা কালে পার্কে যাওয়া ভুলে গিয়েছে ছোটরা। তাই বাড়িতে তাদের জন্য খেলার জায়গা বানিয়ে দিন। ছোট জিনিস রেখে তার ওপর দিয়ে লাফাতে বলুন বা তার চারপাশে ঘুরতে বলুন।
৫-৭ বছরের শিশুদের জন্য
এই বয়সের শিশুদের নতুন নতুন জিনিসের প্রতি ঝোঁক থাকে বেশি। তারা সবসময় নতুন কিছু জানতে, শিখতে চায়। তাই ৫-৭ বছরের শিশুদের এই ধরণের খেলায় ব্যস্ত রাখতে পারেন -
১) রান্না করা
বাচ্চারা মায়ের সঙ্গে রান্নাঘরে থাকতে পছন্দ করে। রান্নাঘরের জিনিস নিয়ে তারা খেলতে বসে যায়। তাই আপনি যখন রান্না করতে যাবেন তাদেরও কিছু কাজে ব্যস্ত করে দিন। আগুন থেকে অবশ্যই দূরে রাখবেন, ছোট বাচ্চার হাতে ছুরি দেবেন না। এর বাইরে কিছু কাজ যেমন সবজি এগিয়ে দেওয়া, রান্নার বাসন বা মশলার জায়গাটা দিতে বললেন। ছোট ছোট কাজগুলো করতে বাচ্চা যেমন আনন্দ পাবে তেমনি এর মধ্যে দিয়ে সহযোগিতার মনোভাবও তৈরি হবে।
এছাড়া ফলমূল, সবজি ধুতে বলুন বাচ্চাকে বা শুকনো জিনিস কোনও জায়গায় ঢালতে বলতে পারেন।
২) স্ক্যাভেন্জার হান্ট
স্ক্যাভেন্জার হান্ট এই বয়সের বাচ্চারা খুব উপভোগ করে। তাদের হাতে একটি তালিকা ধরিয়ে দিন। তারা সারা বাড়ি ঘুরে জিনিসগুলো খুঁজবে। একটু শক্ত খেলা মনে হলে তাদের ক্লু দিতে পারেন।
৩) কিছু তৈরি করতে বলুন
বাচ্চাকে একটি বাস্কেটে খালি জুতো বা টিস্যু বাক্স, পেপার, আঠা, স্ক্র্যাপ কাঠ, পাইপ - এরকম কিছু জিনিস দিয়ে দিন। তারপর বাড়ি, গাছ, একটা ছোট শহর বা নিজের পছন্দমতো কিছু বানাতে বলুন। অনেকটা সময় ব্যস্ত থাকবে সে।
৪) বাড়ির কাজ
বড়রা যা করছে সেই কাজ সব সময় করতে ভালোবাসে ছোটরা। তাই তাকে নিজের সঙ্গে ব্যস্ত রাখুন ঘরের কাজে। ছোট ছোট জামা কাপড় গোছানো, সাবান শেষ হয়ে গেলে সাবান রাখা, ঘর পরিষ্কার করা, বাচ্চাকে নিজের বিছানা ঠিক করতে বলুন।
৫) অ্যাক্টিভ থাকা
ঘরে বসে বসে ক্যালোরি খরচ হচ্ছে না আমাদের। একই অবস্থা বাচ্চাদেরও। তাই বিকেলের দিকে তাকে একটু ছাদে দৌড়াদৌড়ি করান। স্কিপিং করা বা সাইকেল চালানো শেখাতে পারেন।
৬) বাচ্চাকে তার পছন্দের কার্টুন চরিত্র সাজতে বলুন
সব বাচ্চারই এক একটা প্রিয় কার্টুন চরিত্র থাকে। একদিনের জন্য তাকে তার প্রিয় চরিত্রের মতো সাজতে বলুন।
শিশুদের জন্য বিপজ্জনক কিছু পণ্য, যা প্রত্যেক পিতা-মাতার এড়ানো উচিত
৮-১০ বছরের বাচ্চাদের জন্য
এই বয়সের বাচ্চারা নিজের কাজ করতে শিখে যায়। তার মানে এই নয় বাচ্চা তার নিজের রুটিন তৈরি করে নিতে পারবে। করোনার জেরে বাচ্চা বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে গল্প করতে পারছে না, কথা বলতে পারছে না। তাই তাকে ব্যস্ত রাখতে হবে অন্য কাজে।
১) চিঠি লিখতে বলুন
বাচ্চা বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে সামনে সামনি কথা নাই বা হল, মনের কথা চিঠি লিখে জানাতে বলুন। বন্ধুবান্ধব ছাড়া কাছের মানুষ যারা বাচ্চার সঙ্গে নেই তাদের কাছে চিঠি লিখতে উৎসাহ দিন।
২) কমিক বুক
কমিক বুক পড়তে সব বাচ্চা পছন্দ করে। তবে শুধু পড়া নয় তাদের কমিক বুক লিখতে বলুন। বাচ্চারা সব থেকে বেশি কল্পনাপ্রবণ হয়। তারা কিন্তু সহজেই কমিক চরিত্র তৈরি করে ফেলতে পারবে।
৩) গার্ডেনিং
বাড়িতে বাগান থাকলে বা ইন্ডোর গার্ডেন-এর কাজে বাচ্চাকে লাগান। তাকে গার্ডেনিং শেখাতে পারেন। তবে ধারালো জিনিস হাতে দেবেন না। তাকে গাছে জল দেওয়া বা গাছের যত্ন নিতে বলতে পারেন।
এইসবের মধ্যে দিয়ে ঘরে থাকার একঘেয়েমি অনেকটা দূর হবে বাচ্চাদের।