Just In
কোজাগরী লক্ষ্মী পুজো: মায়ের আশীর্বাদ লাভ করতে রাশি অনুযায়ী দেবীর এই রূপটির আরধনা করতে হবে কিন্তু!
এই লেখায় প্রতিটি রাশি অনুসারে জাতক-জাতিকাদের মা লক্ষ্মীর কোন রূপের অরাধনা করা উচিত, সে বিষয়টির উপর আলোকপাত করার চেষ্টা করা হয়েছে।
কোনও বিশেষ দিনে কোনও বিশেষ দেবীর পুজো হওয়ার পিছনে কিন্তু একটা শাস্ত্রগত লজিক থাকে। কিন্তু আমরা অনেকেই সে সম্পর্কে জানার চেষ্টা করি না। বরং বাকি অনেকে যা করছে, সেই মতো অন্ধের মতো নানা দেব-দেবীর আরাধনা করে থাকি। শুধু তাই নয়, এমন অনিয়ম-বেনিয়ম মেনে পুজো করার পর দেব-দেবীদের আশীর্বাদ লাভ করার স্বপ্নও দেখি। কিন্তু জেনে রাখুন বন্ধু, ঠিক ঠিক নিয়ম মেনে যদি সর্বশক্তিমানের অরাধনা করা না যায়, তাহলে কোনও সুফলই তো মেলেই না, উল্টে ঠাকুরের রোষে পরার ভয় থাকে। তাই তো বলি বন্ধু এবছর লক্ষ্মী পুজো করার আগে এই লেখাটি একবার পড়ে ফলতে ভুলবেন না যেন! কারণ...
আসলে এই লেখায় প্রতিটি রাশি অনুসারে জাতক-জাতিকাদের মা লক্ষ্মীর কোন রূপের অরাধনা করা উচিত, সে বিষয়টির উপর আলোকপাত করার চেষ্টা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে সেই সব মন্ত্রের উল্লেখ করা হয়েছে, যা রাশি অনুযায়ী পাঠ করলে দেবীর আশীর্বাদে নানাবিধ সুফল মেলার সম্ভাবনা যায় বেড়ে। যেমন ধরুন- যে কোনও অর্থনৈতিক সমস্যা মিটে যেতে সময় লাগে না, পরিবারে সুখ-সমৃদ্ধির ছোঁয়া লাগে, ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনায় উন্নতি ঘটে, কর্মক্ষেত্রে চরম সফলতা লাভের পথ প্রশস্ত হয়, বৈবাহিক জীবনে সুখ-শান্তি বজায় থাকে এবং আরও অনেক উপকার মেলে।
তাহলে এখন প্রশ্ন হল এত সব উপকার পেতে কোন রাশির মা লক্ষ্মীর কোন রূপের অরাধনা করতে হবে...?
১. মেষরাশি:
এই রাশির জাতক-জাতিকাদের মা লক্ষ্মীর "রামা" স্বরূপের আরাধনা করতে হবে এবং দেবীর আরাধনা করার সময় জপ করতে হবে "আম শ্রী লক্ষ্মী দেবায়া নমহ", এই মন্ত্রটি। এমনটা যদি করতে পারেন, তাহলে সুফল মিলতে দেখবেন সময় লাগবে না।
২. বৃষরাশি:
এদের আরাধনা করতে হবে মায়ের "মোহিনী" সরূপকে এবং পাঠ করতে হবে "আম শ্রিম হ্রিম শ্রিম কমলে কমলাল্যে প্রসিদা প্রাসিদ, শ্রিম হ্রিম শ্রিম মহালক্ষ্মী নমহঃ", এই মন্ত্রটি।
৩. মিথুনরাশি:
এই রাশির জাতক-জাতিকারা যদি চান অল্প দিনেই তাদের জীবনে সুখ এবং সমৃদ্ধির ছোঁয়া লাগুক, তাহলে মায়ের "পদ্মলক্ষ্মী" রূপের পুজো করতে হবে। আর নিয়মিত পাঠ করতে হবে "লক্ষ্মী চাল্লিশা"। তাহলেই দেখবেন কেল্লা ফতে...!
৪. কর্কটরাশি:
এই রাশির জাতক-জাতিকাদের কনকধারা সোত্রা পাঠ করার পাশাপাশি মায়ের "কমলা" রূপের পুজো করতে হবে। এমনটা যদি করতে পারেন, তাহেল দেখবেন জীবনের ছবিটা বদলে যেতে সময় লাগবে না।
৫. সিংহরাশি:
এদের পুজো করতে হবে দেবীর "ক্রান্তিমতি" রূপের। আর পুজোর সময় পাঠ করতে হবে "আম শ্রিম হ্রিম মহালাক্ষ্মী নমহ", এই মন্ত্রটি।
৬. কন্যারাশি:
এই রাশির অধিকারীরা যদি মা লক্ষ্মীর "অপরাজিতা" স্বরূপের আরাধনা করতে পারেন, তাহলে সুফল মিলতে সময় লাগে না। আর মায়ের পুজো করার সময় এক্ষেত্রে যে মন্ত্রটি পাঠ করতে হবে, সেটি হল "আম মহালক্ষ্মী চ বিদমাহে, বিষ্ণুপত্নী চ ধিমহী। তন্মো লক্ষ্মী প্রাচোদায়াত!"
৭. তুলারাশি:
"আম মহালক্ষ্মী নমহঃ", এই মন্ত্রটি জপ করতে করতে তুলারাশির জাতক-জাতিকারা যদি মায়ের "পদ্মবতী" রুপের আরাধনা করেন, তাহলে অল্প দিনেই দারুন সুফল মিলবে।
৮. বৃশ্চিকরাশি:
এদের পুজো করতে হবে দেবীর "রাধা" স্বরূপের। আর পাঠ করতে হবে "শ্রী শুক্ত" মন্ত্র।
৯. ধনুরাশি:
সুখে-শান্তিতে থাকতে এবং অনেক অনেক টাকার মালিক হয়ে উঠতে ধনুরাশির অধিকারীদের মায়ের "বিশ্বলক্ষ্মী" রূপের পুজো করতে হবে। প্রসঙ্গত, এক্ষেত্রে একটা বিষয় জেনে রাখা একান্ত প্রয়োজন। তা হল, মায়ের পুজো করার সময় যদি নিয়মিত হোমের আয়োজন করা যায় এবং তাতে ঘি এবং ড্রাই ফল নিবেদন করা যেতে পারে, তাহলে আরও বেশি মাত্রায় সুফল মেলার সম্ভাবনা থাকে।
১০. মকররাশি:
মা লক্ষ্মীর যে মূর্তি সচরাচর পাওয়া যায়, তা বাড়িতে এনে প্রতিষ্টিত করে শুরু করতে হবে পুজো। সেই সঙ্গে আরাধনার সময় দেবীকে নিবেদন করতে হবে গোলাপের মালা।
১১. কুম্ভরাশি:
এই রাশির জাতক-জাতিকাদের মা লক্ষ্মীর "রুক্মিনী" রূপের আরাধনা করতে হবে এবং পুজোর সময় মাকে নিবেদন করতে হবে বেল ফল। তাহলেই দেখবেন মনের ছোট থেকে ছোটতর ইচ্ছা পূরণ হতে সময় লাগবে না।
১২. মীনরাশি:
এরা যদি দেবীর "বিলক্ষণা" রূপের পুজো করেন, তাহলে দারুন সব সুফল মেলার সম্ভাবনা যায় বেড়ে।
কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোর সময়:
শাস্ত্র মতে এবার এই বিশেষ পুজোর লগ্ন শুরু হচ্ছে আগামী কাল, মানে ২৩ তারিখ রাত ১০:৫৫ থেকে ১১:৪৬ পর্যন্ত। তবে পূর্ণিমা তিথি শুরু হচ্ছে ২৩ তারিখ রাত ১০:৩৬ মিনিটে, আর শেষ হচ্ছে ২৪ তারিখ রাত ১০:১৪ মিনিটে।
আরও কিছু নিয়ম:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোর দিন সারা দিন উপোস করে রাত্রে বেলা দেবীকে ভোগ নিবেদন করে যদি উপোস ভাঙা যায়, তাহলে দেবী এতটাই প্রসন্ন হন যে যে কোনও সমস্য়া মিটে যেতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে আরও নানাবিধ উপকার মেলার পথও প্রশস্ত হয়। তাই মায়ের আগমণ ঘটুক বাড়িতে, এমনটা যদি চান, তাহলে উপোস করতে ভুলবেন না যেন। তবে একান্ত যদি সম্ভব নাহয়, তাহলে আগামীকাল ফল ছাড়া আর কিছু খাবেন না যেন!
ডালায় রাখতে হবে রকমারি জিনিস:
শাস্ত্র মতে কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোর দিন দেবীর আরাধনা করার সময় তাঁর সামনে সাজানো ডালা রাখতে ভুলবেন না যেন! আর তাতে রাখতে হবে সরষে বীজ, গঙ্গা মাটি, হলুদ, সুগন্ধি, শস্য দানা, ফুল, পাঁচ ধরনের ফল, দই, ঘি, সিঁদুর, কড়ি, মধু এবং চাল।
লক্ষ্মীর ঘট:
মায়ের অরাধনা করার সময় মাটি বা পিতলের ঘটে গঙ্গা জল নিয়ে তাতে আম পল্লব, পান পাত এবং সুপুরি রাখতে ভুলবেন না যেন! আসলে এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে পুজোর সময় দেবী এই ঘঠেই অবস্থান করেন। তাই লক্ষ্মীর ঘট ছাড়া কোজাগরী সক্ষ্মী পুজো সম্ভবই নয়...!