Just In
সাফল্যের সিক্রেট কী? জানালেন স্বয়ং বাবা রামদেব!
রামদেব বাবা বিশ্বাস করেন জীবনে সফলতা পেতে গেলে কোনও না কোনও মহান ব্যক্তিত্বের পদাঙ্ক অনুসরণ করা একান্ত প্রয়োজন
গত কয়েক দশকে সারা বিশ্বে যোগাসনের প্রচারে যে মানুষটির নাম বারে বারে সামনে এসেছে তিনি হলেন বাবা রামদেব। আর এখন তো তিনি শুধু যোগগুরু নন, তার হাতে ধরে শুরু হওয়া "আয়ুর্বেদিক বিপ্লব" আজ দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্বের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে পরেছে। তাঁর বিজনেস মডেল অনুসরণ করে তৈরি নানবিধ ভেষজ প্রডাক্ট জনপ্রিয়তার নিরিখে অনেক কর্পোরেটকে পিছনে ফেলে দিয়েছে। এদেশের পাশাপাশি তাঁর হাত ধরে পশ্চিমি দেশেও ছডিয়ে পরছে ভারতের আয়ুর্বেদ শাস্ত্র। তাই তো নানা মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে এমন আকাশ ছোঁয়া সাফল্যের পিছনের রহস্যটা কী?
একবার এই প্রশ্নটি করার সুযোগ হয়েছিল বাবা রামদেবকে। উত্তরে তিনি যা জানিয়েছিলেন তা এই প্রবন্ধে তুলে ধরার চেষ্টা করালাম মাত্র। আশা করি লেখাটি পড়ার পর জীবন সম্পর্কে আপনাদের ধারণাটা শুধু বদলে যাবে না, সেই সঙ্গে আশা করি জীবন যুদ্ধটাও অনেক সহজ হয়ে যাবে।
একটা সময় ছিল যখন বাবা রামদেব সাইকেলে চেপে আয়ুর্বেদিক ওষুধ বিক্রি করে বেরাতেন। সেখান থেকে আজ তিনি একটা ব্র্যান্ডে পরিণত হয়েছেন। এই জার্নিটা কিন্তু মোটেও সহজ ছিল না। কিন্তু কিছু আদর্শ এই লড়াইয়ে তাকে জয়ীর আসনে বসিয়েছে। কী ছিল সেই আদর্শ? চলুন চোখ ফেরানো যাক সেদিকে।
রোল মডেল থাকাটা জরুরি:
রামদেব বাবা বিশ্বাস করেন জীবনে সফলতা পেতে গেলে কোনও না কোনও মহান ব্যক্তিত্বের পদাঙ্ক অনুসরণ করা একান্ত প্রয়োজন। উনি যেমন সারা জীবন নেতাজি এবং ভগৎ সিং-এর দেখানো পথে চলার চেষ্টা করেছেন। তাঁর মতে আমাদের জীবনটা যদি একটা রাস্তা হয়, তাহলে সেই রাস্তাটা মহান মানুষেরা কেমনভাবে পেরিয়েছেন সে বিষয়ে জানাটা একান্ত প্রয়োজন।
স্বপ্নে বিশ্বাস থাকাটা জরুরি:
ছোট বেলায় রামদেব বাবা প্রায়ই তাঁর মাকে বলতেন একদিন এমন সময় আসবে যখন তিনি দেশের আইকন হয়ে উঠবেন। আর আজ দেখুন বাবা রামদেব বাস্তবিকই আমাদের দেশের অন্যতম জনপ্রিয় আইকন হয়ে উঠেছেন। এই ঘটনা প্রমাণ করে যে বিশ্বাসের সঙ্গে স্বপ্ন দেখলে এবং সেই স্বপ্ন পূরণের জন্য শ্রম করলে লক্ষ পূরণ হয়ই হয়। তাহলে বন্ধুরা, ভুলেও কিন্তু স্বপ্ন দেখা ছাড়বেন না। বরং স্বপ্নকে কীভাবে বাস্তবায়িত করা যায়, সে বিষয়ে ভাবনা শুরু করুন। দেখবেন একদিন ঠিক লক্ষে পৌঁছে গেছেন।
একাগ্রতা জরুরি:
যে কাজই করুন না কেন তাতে মন প্রাণ ঢেলে দিতে হবে। এমনটা করলে দেখবেন সাফল্য আসবেই আসবে। রামদেব বাবা মাত্র দেড় বছরে বেদ এবং উপনিষদ সম্পর্কিত তাঁর পড়াশোনা শেষ করেছিলেন, যা সাধারণ মানুষের পক্ষে করা অসম্ভব। তাহলে উনি কীভাবে করলেন? তিনি জানাচ্ছেন, "কোনও মানুষ যদি তার লক্ষে পৌঁছানোর জন্য় দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হন, তাহলে পৃথিবীর কোনও শক্তিই সেই পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না।"
স্রোতের বিপরীতে চলতে হবে:
ভিড়ে মিশে থাকলে চলবে না। নিজের কাজকে এমন উচ্চতায় নিয়ে যেতে হবে যে ভিড়ের চোখ থাকবে তোমাদের দিকে। এই আদর্শকে সব সময় জীবনে চলার পথে মেনে এসেছেন রামদেব। তাই না হাজার বছরের পুরানো যোগ বিদ্যাকে একেবারে নিজের মতো করে পরিবেশন করে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন। যদি উনি আর পাঁচজনের মতো যোগাসন শেখাতেন, তাহলে কী এমন সাফল্য পেতেন, যা তিনি আজ পয়েছেন? মনে তো হয় না!
বিশ্বাস থাকাটা জরুরি:
রামদেব বাবা মনে করেন কোন কাজ যদি এই বিশ্বাসের সঙ্গে করা যায় যে, "আমি সফল হবই"। তাহলে সফলতা আসতে সময় লাগে না। কারণ মানুষ যখন কোনও কিছুতে বিশ্বাস করে, তখন তাতে নিজের সবটুকু দিয়ে দেয়। ফলে সাফল্য হাতের মুঠোয় চলে আসে। এ বিষয়ে রামদেব বাবা নিজের একটা অভিজ্ঞতার কথা প্রায়শই বলে থাকেন। যখন তিনি আসনের মাধ্যমে ডায়াবেটিস এবং হার্টের রোগ সারিয়ে তোলার দাবি করেছিলেন। তখন অনেকে সে কথা বিশ্বাস করেননি। কিন্তু বাবা রামদেব জানতেন তিনি যে কথা বলছেন তাতে কোনও মিথ্যা নেই। এমনটা বাস্তবিকই সম্ভব। আজ দেখুন সারা বিশ্ব মেনে নিয়েছে যে সত্যিই আসনের মাধ্যমে ডায়াবেটিস এবং হার্টের রোগকে লাগাম পরানো সম্ভব।
মাটিকে ভুলে গেলে চলবে না:
কোথা থেকে উঠে এসে আমরা সাফল্যের শৃঙ্গ জয় করেছি, তা কখনও ভুলে যাওয়া উচিত নয়। তাই তো বাবা রামদেব কখনও আয়ুর্বেদ শাস্ত্রকে ভোলেননি। আর আজ দেখুন তাঁর তৈরি ব্যান্ড সারা দুনিয়া কাঁপাচ্ছে।
মন খারাপের কোনও জায়গা নেই:
জীবনের পথ কখনও মসৃণ হয় না। সে পথে কাঁটা এবং বোল্ডার বেছানো থাকবেই। এমন বাঁধাকে ধীরে ধীরে পেরিয়ে এগিয়ে যেতে হবে লক্ষের দিকে। চুরান্ত সাফল্য পাওয়ার আগে অনেক বার হার স্বীকার করতে হবে। কিন্তু সেই হারকে মনে নিয়ে বসে থাকলে চলবে না। মন খারাপকে প্রশ্রয় দেওয়া মানে মৃত্যুর সমান। এমন ধরণাকে সম্বল করে বেড়ে ওঠা রামদেব বাবা সেই কারণেই তো মন খারাপের চির বিরোধী।