Just In
National Youth Day 2024: স্বামী বিবেকানন্দের জন্মবার্ষিকীতে জেনে নিন তাঁর সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য
আজ, ১২ জানুয়ারি স্বামী বিবেকানন্দের ১৬১তম জন্মবার্ষিকী। এই দিনটি স্বামীজীর সম্মানে গোটা বিশ্বজুড়ে 'জাতীয় যুব দিবস' হিসেবেও পালিত হয়। তাই, আজ গোটা বিশ্বে তাঁর সম্মানে বিভিন্ন অনুষ্ঠান উদযাপিত হচ্ছে। ১৮৬৩ সালের আজকের দিনেই ভারতে এই মহান মনীষী তথা মহামানবের জন্ম হয় উত্তর কলকাতার এক কায়স্থ দত্ত পরিবারে। একজন হিন্দু সন্ন্যাসী, দার্শনিক, লেখক, সংগীতজ্ঞ এবং ঊনবিংশ শতাব্দীর ভারতীয় অতীন্দ্রি়য়বাদী রামকৃষ্ণ পরমহংসের প্রধান শিষ্য। বিবেকানন্দের পিতৃপ্রদত্ত নাম ছিল নরেন্দ্রনাথ দত্ত।
এটি জ্ঞাত সত্য যে, স্বামী বিবেকানন্দ সমস্ত বয়সের যুবকদের অনুপ্রাণিত করার জন্য এবং তাঁর দ্বারা তাদেরকে আত্মবিশ্বাসিত করার জন্য প্রাচীন যুগের বৈদিক জ্ঞানকে একটি আধুনিক আবরণে আবৃত করেছিলেন। তাই, তাঁর মৃত্যুর এত বছর পরেও তাঁর শিক্ষাগুলি প্রত্যেকে অনুসরণ করে চলেছে।
তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে হিন্দুধর্ম তথা ভারতীয় বেদান্ত ও যোগ দর্শনের প্রচারে প্রধান ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন এবং হিন্দুধর্মকে ব্যাপকভাবে প্রচার করেছিলেন। শিকাগোর বিশ্ব সংসদে অংশ নিতে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন।
বিবেকানন্দ সমগ্র ভারত সফর করেছিলেন এবং দরিদ্রদের সাহায্য করেছিলেন। তিনি কলকাতায় বিখ্যাত রামকৃষ্ণ মিশন এবং বেলুড় মঠ প্রতিষ্ঠা করেন যেখানে, এখনও নিষ্ঠার সহিত হিন্দু ধর্মকে জনপ্রিয় করার এবং অভাবীদের সাহায্য করা হয়।
স্বামী বিবেকানন্দ ছিলেন একজন অসাধারণ প্রতিভার মানুষ। আমেরিকার শিকাগোতে দাঁড়িয়ে গোটা বিশ্বের সামনে তাঁর বক্তৃতা আজও বিশ্বের মানুষের মনকে নাড়া দেয়। তিনি ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী ছিলেন। তাঁর প্রতিভা যুবক জাতিকে জেগে উঠতে এবং দেশের প্রতি কর্তব্য পালনে উদ্বুদ্ধ করেছিল। তবে, প্রকৃত স্বামী বিবেকানন্দকে আমরা কতটা জানি? হয়তো অনেকটাই কম।
আজ তাঁর জন্মবার্ষিকীতে এখানে তাঁর সম্পর্কে কয়েকটি বিরল তথ্য দেওয়া হল যা, আপনার মনকে নাড়িয়ে দেবে। দেখে নিন সেগুলি -
বিবেকানন্দ একজন সাধারণ ছাত্র ছিলেন
গোটা বিশ্ব তাঁর কথা, বক্তৃতা, তাঁর বাণী-র জন্য তাঁকে চেনে। কিন্তু আপনি কি জানেন যে, একজন ছাত্র হিসেবে স্বামী বিবেকানন্দ অত্যন্ত সাধারণ ছিলেন? তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশিকা স্তরের পরীক্ষায় মাত্র ৪৭ শতাংশ, FA-তে ৪৬ শতাংশ (পরে এই পরীক্ষাটি ইন্টারমিডিয়েট আর্টস বা IA হয়ে যায়) এবং BA পরীক্ষায় তিনি ৫৬ শতাংশ অর্জন করেছিলেন।
স্বামী বিবেকানন্দ ছিল এক অর্জিত নাম
সন্ন্যাসী হওয়ার পরে তিনি যে নামটি গ্রহণ করেছিলেন সেটাই ছিল ‘স্বামী বিবেকানন্দ'। মূলত, তাঁর মা তাঁকে বীরেশ্বর নামে ডাকতেন এবং ছোটবেলায় তাঁকে 'বিলে' বলেও ডাকা হত। পরে তাঁর নাম রাখা হয়েছিল নরেন্দ্রনাথ দত্ত।
স্বামীজির পরিবারে ছিল চরম দারিদ্র্যতা
পিতার মৃত্যুর পরে স্বামীজির পরিবার চরম দারিদ্র্যতা নেমে এসেছিল। তখন একদিনের খাবার জোগাড় করতেই তাঁদের অনেক কষ্ট করতে হত। প্রায়ই স্বামীজি খাবার খেতেন না, যাতে পরিবারের অন্যরা পর্যাপ্ত পরিমাণে খেতে পারে।
একটি গোপন বিষয়
ক্ষেত্রি-এর মহারাজা অজিত সিংহ স্বামী বিবেকানন্দের ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং শিষ্য ছিলেন। তিনি তাঁর আর্থিক সমস্যা মোকাবিলার জন্য নিয়মিত স্বামীজির মায়ের কাছে ১০০ টাকা পাঠাতেন। এটি ছিল নিবিড় গোপনীয় বিষয়।
চা-এর প্রতি বিবেকানন্দের প্রেম ছিল
যখন হিন্দু পণ্ডিতরা চা পান করার বিরোধিতা করেছিলেন, তখন তিনি তাঁর আশ্রমে চা প্রবর্তন করেছিলেন।
স্বামীজি ও লোকমান্য
একবার স্বামীজী, লোকমান্য বাল গঙ্গাধর তিলককে বেলুড় মঠে চা বানাতে রাজি করান। মহান মুক্তিযোদ্ধা তাঁর সাথে জায়ফল, এলাচ, লবঙ্গ এবং কেশর দিয়ে সবার জন্য মুঘলাই চা প্রস্তুত করেন।
তিনি রামকৃষ্ণদেবকে পুরোপুরি বিশ্বাস করেননি
রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব ছিলেন স্বামী বিবেকানন্দের গুরু। স্বামীজি তাঁর শিক্ষকের কাছে শিক্ষার নেওয়ার প্রাথমিক দিনগুলিতে, কখনই রামকৃষ্ণদেবকে পুরোপুরি বিশ্বাস করেননি। রামকৃষ্ণদেব যা যা বলেছিলেন তার সমস্ত কিছু পরীক্ষা করেছিলেন স্বামীজি। অবশেষে, তিনি তাঁর সমস্ত উত্তর পেয়েছিলেন।
স্বামীজি তাঁর নিজের মৃত্যুর ভবিষ্যৎবাণী করেছিলেন
তিনি বলেছিলেন যে, ৪ জুলাই তিনি মারা যাবেন। সত্যিই তিনি ৪ জুলাই, ১৯০২ সালে মারা যান।
স্বামীজী মারা যাওয়ার আগে ৩১টি রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন
প্রখ্যাত বাঙালি লেখক শঙ্করের রচিত ‘দ্য মঙ্ক অ্যাজ ম্যান' বইটি অনুসারে, স্বামী বিবেকানন্দ ৩১ টি রোগে ভুগেছিলেন। বইটিতে - অনিদ্রা, লিভার ও কিডনির রোগ, ম্যালেরিয়া, মাইগ্রেন, ডায়াবেটিস এবং হার্টের অসুস্থতা, ইত্যাদির কথা উল্লেখ রয়েছে। এমনকি তিনি হাঁপানিতেও ভুগতেন যা তাঁর জীবনকে অসহনীয় করে তুলেছিল।