Just In
শুভ জন্মদিন শ্রেয়া ঘোষাল : জেনে নিন তাঁর সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য
বাংলা তথা ভারতের কোকিল কণ্ঠি, যাঁর সুরের যাদুতে প্রতিটি গান হয়ে ওঠে শ্রুতিমধুর, যিনি জন্মেছিলেনই সুরেলা কন্ঠ নিয়ে, আমজনতা থেকে স্টুডিয়োর প্রতিটি জায়গা যাঁর গানের যাদুতে মাতোয়ারা, তিনি আর কেউ নন আমাদের সকলের প্রিয় প্রখ্যাত গায়িকা শ্রেয়া ঘোষাল। তাঁর ভুবন ভোলানো সুরে স্তব্ধ হয়ে যায় বাচ্চা থেকে বুড়ো সকলে।
শ্রেয়া ঘোষাল হলেন একজন ভারতীয় বাঙালি সঙ্গীতশিল্পী। তিনি বলিউডের অসংখ্য চলচ্চিত্রে গান গেয়েছেন। হিন্দি ভাষা ছাড়াও তিনি বাংলা, নেপালি, তামিল, ভোজপুরি, তেলুগু, ওড়িয়া, গুজরাতি, মালয়ালম, মারাঠি, কন্নড়, পাঞ্জাবি ও অসমীয়া ভাষায়ও গান গেয়েছেন। তাঁর সুলেরা কণ্ঠের জন্য তিনি বহুবার নানান পুরষ্কারে ভূষিত হয়েছেন। আজ, ১২ মার্চ তাঁর জন্মদিনে আসুন এই প্রতিভাবান গায়িকা সম্পর্কে কিছু অজানা এবং আকর্ষণীয় তথ্য জেনে নেওয়া যাক -
১) ১৯৮৪ সালের ১২ই মার্চ পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুরে এক বাঙালি ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন শ্রেয়া ঘোষাল। তিনি রাজস্থানের কোটার নিকটবর্তী রাওয়াতভাতা শহরে বেড়ে ওঠেন। তাঁর পিতা বিশ্বজিৎ ঘোষাল পেশায় ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার এবং তাঁর মা শর্মিষ্ঠা ঘোষাল সাহিত্যে স্নাতকোত্তর।
২) মাত্র চার বছর বয়স থেকেই তিনি সঙ্গীত চর্চা শুরু করেন, তখন শ্রেয়ার গুরু ছিলেন তাঁর মা। তিনি প্রথম স্টেজ পারফরম্যান্স করেন তাঁদের ক্লাবের বার্ষিক অনুষ্ঠানে। এখান থেকেই তাঁর গানের ক্যারিয়ার গড়ার যাত্রা শুরু হয়েছিল।
৩) মাত্র ছয় বছর বয়স থেকেই তিনি হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় সংগীতের আনুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ শুরু করেন। তাঁর বাবা-মা তাঁকে মহেশচন্দ্র শর্মার কাছে হিন্দুস্তানী শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের আনুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণের জন্য ভর্তি করেন।
৪) তিনি কোটা এবং অনুশক্তিনগর (মুম্বই)-এ অ্যাটমিক এনার্জি সেন্ট্রাল স্কুল (AECS) থেকে পড়াশোনা করেছেন। স্নাতকের জন্য তিনি আর্টস স্ট্রিমে SIES কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন।
৫) ষোল বছর বয়সে তিনি জি টিভির সা রে গা মা পা সঙ্গীত প্রতিযোগিতার শিশুদের বিশেষ পর্বে অংশগ্রহণ করেন এবং বিজয়ী হন। সেই শো-টি পরিচালনা করেছিলেন খ্যাতনামা গায়ক সোনু নিগম। এইসময় তিনি এই প্রতিযোগিতার বিচারক ও সুরকার কল্যাণজী বীরজী শাহের নজর কাড়েন। কল্যাণজীর পরামর্শেই তাঁর পরিবার মুম্বইয়ে চলে আসে। শ্রেয়া কল্যাণজীর কাছে দেড় বছর তালিম গ্রহণ করেন এবং পরে মুক্তা ভিড়ের নিকট শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের তালিম চালিয়ে যান।
৬) তিনি দ্বিতীয়বার যখন সা রে গা মা পা-তে অংশ নিয়েছিলেন, তখন তিনি চলচ্চিত্র পরিচালক সঞ্জয় লীলা বনশালীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। ২০০০ সালে, সঞ্জয় লীলা বনশালী শ্রেয়াকে তাঁর চলচ্চিত্র 'দেবদাস'-এর প্রধান মহিলা চরিত্র পার্বতীর চরিত্রে কণ্ঠ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন, সেখানে পার্বতী অর্থাৎ পারো-র চরিত্রে অভিনয় ঐশ্বরিয়া রাই। সেই ছবিতে পাঁচটি গান গেয়েছিলেন শ্রেয়া ঘোষাল। এটিই ছিল তাঁর ফার্স্ট প্লেব্যাক গান।
৭) তিনি চারবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, চারবার কেরালা রাজ্য চলচ্চিত্র পুরস্কার, দুইবার তামিলনাড়ু রাজ্য চলচ্চিত্র পুরস্কার, সাতবার ফিল্মফেয়ার পুরস্কার, ও দশবার ফিল্মফেয়ার পুরস্কার দক্ষিণ অর্জন করেছেন।
৮) ২০১৩ সালের এপ্রিল মাসে তিনি লন্ডনে যুক্তরাজ্যের হাউজ অব কমন্সের সদস্যদের নিকট থেকে সম্মাননা লাভ করেন। তিনি পাঁচবার ফোর্বস-এর ভারতের শীর্ষ ১০০ তারকা তালিকায় স্থান করে নেন। ২০১৭ সালে প্রথম ভারতীয় সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে মাদাম তুসো জাদুঘরে ঘোষালের মোমের মূর্তি স্থাপিত হয়।
৯) ২০১৫ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি তাঁর শৈশবের বন্ধু শিলাদিত্য মুখোপাধ্যায়ের সাথে বাঙালি হিন্দু রীতিতে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের পূর্বে তাঁদের ১০ বছরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল।
১০) শ্রেয়া ঘোষাল শ্রেষ্ঠ প্লেব্যাক গায়িকা হিসেবেই সবচেয়ে বেশি পুরস্কার পেয়েছেন। ভারতের ইতিহাসে মাত্র ২৬ বছর বয়সে চারবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া একমাত্র গায়িকা হলেন তিনি ।