Just In
রাশি অনুসারে কোন গ্রহগুলি পক্ষে রয়েছে আর কোনগুলি বিপক্ষে, সে সম্পর্কে জেনে না নিলে কিন্তু বিপদ!
জ্যোতিষ শাস্ত্র উল্লেখিত ৯ টি গ্রহ এবং নানাবিধ নক্ষত্রদের মধ্যে কারও কারও প্রভাবে আমাদের দারুন উপকার হয়।
আচ্ছা পরিবারের প্রতিটি সদস্যই কি আমাদের ভালবাসেন? একেবারেই নয়! কেউ তুমুল ভালবাসেন, তো কেউ এতটাই ঘৃনা করেন যে নানাবিধ ক্ষতি করতেও পিছপা হন না। একইভাবে জ্যোতিষ শাস্ত্র উল্লেখিত গ্রহ এবং নানাবিধ নক্ষত্রদের মধ্যে কারও কারও প্রভাবে আমাদের দারুন উপকার হয়, তো কেই কেউ এমন বক্রভাবে অবস্থান করে যে তাদের কুপ্রভাবে জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠতে সময় লাগে না। তাই তো রাশি অনুসারে কোন কোন গ্রহ বিগড়ে রয়েছে এবং কোনগুলি বেজায় সহায়, সে সম্পর্কে জেনে নিয়ে সেই মতো ব্যবস্থা না নিলে কিন্তু বেজায় বিপদ! যেমন ধরুন জন্ম কুষ্টিতে যদি বৃহস্পতি গ্রহের অবস্থান জোরাল না হয়, তাহলে কর্মক্ষেত্রে নানাবিধ বাঁধা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে, সেই সঙ্গে পরিবারিক জীবনও অশান্তির মেঘে ঢেকে যায়। একই ভাবে বুধ, শুক্র অথবা শনি গ্রহ বিগড়ে গেলেও কিন্তু নানাবিধ সমস্যা দেখা দেয়।
প্রসঙ্গত, চাঁদের অবস্থান পরিবর্তনের কারণে কিছু সময় অনেক রাশির ক্ষেত্রেই এমন কিছু গ্রহ বিগড়ে যায়, যারা আসলে বন্ধু ছিল। এমন পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় থাকে না। কিন্তু সাধারণ পরিস্থিতিতে প্রতিটি রাশির ক্ষেত্রে যে যে গ্রহ এবং নক্ষত্রগুলির প্রভাবে নানাবিধ ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, সেগুলি হল...
১. মেষরাশি:
বিশেষজ্ঞদের মতে এই রাশির সঙ্গে যে যে গ্রহের বেজায় ভাল বন্ধুত্ব রয়েছে, তারা হল চাঁদ এবং শনি। আর যে যে গ্রহ একেবারেই সহায় নয়, তারা হল শুক্র এবং বৃহস্পতি। প্রসঙ্গত, শুক্র গ্রহ দুর্বল হওয়ার কারণে মেষরাশির জাতক-জাতিকাদের পারিবারিক জীবন একেবারেই সুখের হয় না, আর বৃহস্পতি ঠিক না থাকার কারণে কর্মজীবনে নানাবিধ সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে।
২. বৃষরাশি:
এদের শনি গ্রহ বেজায় সহায়। কিন্তু চাঁদ দুর্বল হওয়ার কারণে ব্যক্তিগত জীবনে নানা সময় নানা অশান্তি মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে।
৩. মিথুনরাশি:
এই রাশির জাতক-জাতিকাদের উপর শনির প্রভাব খুব বেশি থাকে। তাই তো দুঃখ-কষ্টের মারে জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠার আশঙ্কা কম থাকে। কিন্তু চাঁদ এবং বৃহস্পতি গ্রহ দুর্বল হওয়ার কারণে ছোট ছোট বিষয়ে পরিবারের বাকি সদস্যদের সঙ্গে ঝগড়া-ঝাটি হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
৪. কর্কটরাশি:
আপনাদের জন্ম কুষ্টিতে মঙ্গল এবং বৃহস্পতি গ্রহের অবস্থান বেজায় জোরাল। কিন্তু শনি গ্রহ দুর্বল হওয়ার কারণে কর্মক্ষেত্রে নানাবিধ সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার আশঙ্কা থাকে। তাই তো এই বিষয়টি মাথায় রাখা একান্ত প্রয়োজন।
৫. সিংহরাশি:
মঙ্গল এবং শুক্র গ্রহ সহায় হওয়ার কারণে সুখে-শান্তিতেই কেটে যাবে আপনাদের জীবন। কিন্তু যে বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে তা হল আপনাদের বৃহস্পতি গ্রহ কিন্তু বেজায় দুর্বল। তাই তো এর প্রভাবে বৈবাহিক জীবন যেমন অশান্তিতে ভরে উঠতে পারে, তেমনি পড়াশোনা এবং কর্মজীবনেও খারাপ সময়ের সাক্ষী থাকতে হতে পারে।
৬. কন্যারাশি:
শুক্র এবং বুধ বেজায় শক্তিশালী আপনার জন্ম কুষ্টিতে। তাই তো আপনাদের পরিবারিক জীবন যেমন নিশ্চিন্তে কাটবে, তেমনি পড়াশোনা এবং কমর্ক্ষেত্রে চরম সফলতা লাভের যোগ রয়েছে। কিন্তু আপনাদের মঙ্গল এবং বৃহস্পতি গ্রহ কিন্তু খুবই দুর্বল।
৭. তুলারাশি:
এই রাশির জাতক-জাতিকাদের সঙ্গে শুক্র গ্রহের দারুন বন্ধুত্ব। কিন্তু মঙ্গল গ্রহ এদের একেবারেই দেখতে পারে না। তাই তো মাঝে মধ্যেই মঙ্গলের কুপ্রভাবে এদের শরীর খারাপ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। সেই সঙ্গে বৈবাহিক জীবনে নানাবিধ সমস্যাও লেজুড় হয়।
৮. বৃশ্চিকরাশি:
সূর্য এবং চাঁদ আপনাদের উপর নেক দৃষ্টি রাখলেও শুক্র এবং বুধের অবস্থান দুর্বল হওয়ার কারণে আপনাদের শরীরে যেমন একেবারেই ভাল যাবে না, তেমনি নানাবিধ সমস্যায় জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠার আশঙ্কাও রয়েছে।
৯. ধনুরাশি:
আপনাদের ক্ষেত্রে সূর্য এবং চাঁদ বেজায় সহায়। কিন্তু বুধের খারাপ প্রভাব থাকার কারণে পারিবারিক এবং কর্মজীবনে নানা সময় নানা সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে।
১০. মকররাশি:
এই রাশির জাতক-জাতিকাদের উপর বুধ এবং শুক্রের প্রভাব খুব বেশি মাত্রায় থাকে। তবে আপনাদের জন্ম কুষ্টিতে সূর্য এবং চাঁদের অবস্থান কিন্তু বেজায় দুর্বল।
১১. কুম্ভরাশি:
শুক্র এবং মঙ্গল গ্রহ আপনাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতালেও সূর্যের কুপ্রভাব রয়েছে আপনাদের উপরে। তাই তো এই রাশির জাতক-জাতিকাদের শরীরের দিকে নজর দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। না হলে কিন্তু বেজায় বিপদ!
১২. মীনরাশি:
মঙ্গল এবং বৃহস্পতির সুপ্রভাবে আপনাদের জীবন সুখে-শান্তিতে ভরে উঠবে। কিন্তু বুধ এবং শুক্রের অবস্থান কিন্তু বেজায় দুর্বল, তাই এদিকে খেয়াল রাখাটা একান্ত প্রয়োজন।
প্রসঙ্গত, যে যে গ্রহ এবং নক্ষত্রগুলি দুর্বল রয়েছে তাদের যদি কোনওভাবে সন্তুষ্ট রাখা যায়, তাহলে কিন্তু নানাবিধ বিপদ ঘটার সম্ভাবনা কমে। তাই তো বলি বন্ধু আপনার রাশির উপর যাদের বক্র দৃষ্টি রয়েছে তাদের শান্ত রাখার নানাবিধ নিয়মগুলি সম্পর্কে জেনে নেওয়াটা একান্ত প্রয়োজনচি। আর ঠিক এই কারণেই বাকি প্রবন্ধটা না পড়লে কিন্তু ভুল করবেন...
১. সূর্য দেবকে প্রসন্ন করতে:
যাদের জন্মকুষ্টিতে সূর্য দেব হঠাৎ করে বক্র দিশা নিয়েছে, তারা নানাবিধ বিপদ থেকে যদি বেঁচে থাকতে চান, তাহলে বেশ কতগুলি বিষয় মাথায় রাখতে হবে, যার অন্যতম হল প্রতিদিন সাকল সকাল উঠে কয়েক মিনিট সূর্যের আলো গায়ে লাগাতে ভুলবেন না। সেই সঙ্গে যতক্ষণ না সূর্যাস্ত হচ্ছে, ততক্ষণ খাবার খেতে পারেন, কিন্তু একবার সূর্য অস্ত গেলে নো ফুড। সেই সঙ্গে জল খেতে হবে তামার পাত্রে। আর যতদিন না সূর্য দেবের অবস্থান শক্তিশালী হচ্ছে, ততদিন যতটা সম্ভব কাঠের আসবাব ব্য়বহার করতে ভুলবেন না। আসলে এই নিয়মগুলি মানলে দেখবেন উপকার মিলতে একেবারেই সময় লাগবে না!
২. চাঁদের অবস্থানকে শক্তিশালী করতে:
খেয়াল করে দেখা গেছে গ্রহণের পর পরই অনেকের কুষ্টিতেই চাঁদের অবস্থান বেজায় দুর্বল হয়ে পরে। ফলে মাথা চাড়া দিয়ে ওঠা নানা সমস্যা। তাই তো এই সময় বিপদ এড়াতে ঠান্ডা খাবার একেবারে খাবেন না। এড়িয়ে চলার চেষ্টা করবেন প্যাকেটজাত খাবারও। পরিবর্তে রোজের ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে বেশি করে ফল এবং সবজিকে। কারণ এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে এই ধরনের খাবার বেশি করে খেলে শরীর এবং মনের উপর চাঁদের খারাপ প্রভাব পরার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। প্রসঙ্গত, এই সময় আরও কতগুলি বিষয় মাথায় রাখতে হবে। যেমন ধরুন- ভুলেও জলের অসম্মান করা চলবে না এবং কোনও নদীতে স্নান করতে যাওয়ার সময় প্রথমে নদীর জল অল্প করে হাতে নিয়ে মাথায় ছুঁইয়ে তারপর পায়ে লাগাতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে আরও একটি বিষয় সম্পর্কে, তা হল চাঁদ দুর্বল থাকার সময় ভুলেও মায়ের হাতে খাবার খাবেন না যেন! কারণ এমনটা করলে আপনার এবং মায়ের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা যাবে বেড়ে।
৩. মঙ্গল গ্রহকে প্রসন্ন করতে:
এক্ষেত্রে প্রতিদিন হনুমান চাল্লিশা পাঠ করার পাশাপাশি মাটিতে শুতে হবে এবং যতটা সম্ভব খাবারে নুন দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। পরিবর্কে বেশি করে খেতে হবে গুড় এবং সিরিয়াল জাতীয় খাবার। প্রসঙ্গত, এই নিয়মগুলি মানলে মঙ্গলের খারাপ প্রভাব কমে যেতে দেখবেন সময় লাগবে না।
৪. বুধের দোষ কাটাতে:
এমন পরিস্থিতিতে নানাবিধ বিপদ থেকে দূরে থাকতে যে যে বিষয়গুলির দিকে নজর ফেরাতে হবে, সেগুলি হল- প্রতিদিন স্নান করে পছন্দের দেব-দেবীর আরাধনা করতে হবে, খাবারে যতটা সম্ভব সবুজ শাক-সবজির মাত্রা বাড়াতে হবে এবং নিয়ম করে হালকা মিউজিত শুনতে হবে। কারণ এমনটা করলে মন এবং মস্তিষ্ক শান্ত হবে, ফলে বুধের প্রভাবে কোনও ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে নেওয়ার আশঙ্কা যাবে কমে।
৫. বৃহস্পতি গ্রহকে বন্ধু বানাতে:
বিশেষজ্ঞদের মতে জন্ম কুষ্টিতে বৃহস্পতি গ্রহ দুর্বল হয়ে পরলে পরিবারের অন্দরে নানাবিধ জটিলতা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার সম্ভাবনা যেমন বৃদ্ধি পায়, তেমনি অর্থনৈতিক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কাও থাকে। তাই তো গুরু বৃহস্পতিকে সদা শান্ত রাখাটা একান্ত প্রয়োজন। আর এই কাজটি করবেন কীভাবে? এক্ষেত্রে আমিষ খাবার একেবারে এড়িয়ে চলতে হবে, উল্টে বেশি করে খেতে হবে সবুজ শাক-সবজি এবং হলুদ। সেই সঙ্গে প্রতি বৃহস্পতিবার গুরু বৃহস্পতির পুজো করার পাশাপাশি ভগবান বিষ্ণুর আরাধনা করতে হবে এবং কপালে পরতে হবে ছোট্ট একটা হলুদ টিপ। তাহলেই দেখবেন উপকার মিলতে সময় লাগবে না।
৬. শুক্র গ্রহকে শক্তিশালী করে তুলতে:
এক্ষেত্রে যতটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকার চেষ্টা করুন। এসময় ভুলেও কিন্তু অপরিষ্কার জামা-কাপড় পরা চলবে না। কারণ এমনটা করলে বিপদ ঘটার আশঙ্কা বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে গ্রহের অবস্থান আরও দুর্বল হয়ে পরে। ফলে নানা বাঁধার সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কা যায় বেড়ে। প্রসঙ্গত, শুক্র গ্রহকে শক্তিশালী করে তুলতে দই খাওয়া শুরু করুন। সেই সঙ্গে দাড়ি-গোঁফ কেটে ফেলুন, দেখবেন উপকার পাবেই পাবেন!
৭. শনির প্রভাব কমাতে:
প্রতি শনিবার কালো তিল, সরষের তেলের সঙ্গে মিশিয়ে দেবের সামনে পরিবেশ করুন। সেই সঙ্গে শুরু করুন প্রতিদিন হানুমান চল্লিশা পাঠ করা। তাহলেই দেখবেন শনির প্রভাব কেটে যেতে শুরু করেছে। প্রসঙ্গত, এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে দান করলে শনি দেব খুব প্রসন্ন হন। তাই তো বলি বন্ধু জন্ম কুষ্টিতে যদি শনির প্রভাব কমাতে হয়, তাহলে মন খুলে দান করতে ভুলবেন না যেন!