Just In
Don't Miss
জ্বলছে আমাজন অরণ্য, উদ্বিগ্ন দেশবাসী
হঠাৎ ঘটে যাওয়া অগ্ন্যুৎপাতের মতো এবার বিশ্ব বৃহত্তম ব্রাজিলের আমাজন অরণ্যে দানবীয় অগ্নিকাণ্ড। পৃথিবীর যে অংশ থেকে ২০ শতাংশ অক্সিজেন সারা বিশ্বে আমদানি হয় সেই অংশই এখন আগুন, ধোঁয়া ও কার্বন ডাই অক্সাইড-এর খেলার মাঠে পরিপূর্ণ। আগুনের শক্তি এতটাই বৃদ্ধি পেয়েছে যে দিনের বেলাতেই নেমেছে ঘন অন্ধকার। আগুনের তীব্রতা এতটাই যে ধোঁয়ায় ঢেকে গিয়েছে হাজার হাজার মাইল দূরের ব্রাজিলের জনবহুল শহর সাও পাওলোর আকাশ। মুখ ঢাকা পড়েছে সূর্যেরও। যাকে আমরা 'পৃথিবীর ফুসফুস ' বলে জানি সেই ফুসফুসই এখন বিপন্ন আগুনের লেলিহান শিখায়।
ছবি:Pixabay
দক্ষিণ আমেরিকার আমাজন নদের পাশে প্রায় ৫৫ লাখ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে গড়ে উঠেছে সুবিশাল বৃষ্টি-অরণ্য (রেন ফরেস্ট) আমাজন। ক্রমেই দানবীয় আগুন গিলে খাচ্ছে আমাজনের সবুজকে। কেড়েছে বহু পশু-পাখীর প্রাণও। এই ভয়াবহ আগুন আশেপাশের শহর গুলিকেও গ্রাস করছে আস্তে আস্তে। আগুন ঘিরে রীতিমতো শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এখন একটা প্রশ্নই ঘোরাফেরা করছে, তাহলে কি সত্যিই এবার সঙ্কটের দিকে এগোচ্ছে মানব সভ্যতা?
এ বছর আমাজন বৃষ্টি-অরণ্যে ৭২,৮৪৩টি দাবানলের ঘটনা সামনে এসেছে। ২০১৩ সালের পর এই প্রথম ব্রাজিলে এতগুলি দাবানলের ঘটনা হয়েছে। ব্রাজিলের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা আইএনপিই জানিয়েছে, ২০১৮ তুলনায় আমাজনে ৮৩% অগ্নিকাণ্ড বেড়েছে। এর অন্যতম কারণ অপর্যাপ্ত বৃষ্টি। দাবানলে প্রতি মিনিটে আমাজনের প্রায় ১০,০০০ বর্গমিটার এলাকা পুড়ে যাচ্ছে।
বছরের এই সময়ে আমাজন অরণ্যে দাবানল নতুন কোনও ঘটনা নয়। শীতকালের শুষ্ক আবহাওয়ার জন্য জুলাই-অগাস্টে এখানে অসংখ্য ছোট-বড় দাবানল হয়। বছরে গড়ে তিন-চার হাজার দাবানলেরও খবর পাওয়া যায়। সেই সংখ্যাটা এবার ৯০০০ ছাড়িয়েছে বলে দাবি আইএনপিই - এর ।
বিশাল এলাকা জুড়ে বিস্তৃত এই বৃষ্টি-অরণ্য, যা কিনা বাড়তে থাকা বিশ্ব উষ্ণায়ণের যুগে বাতাস থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড শুষে নেওয়ার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তার এরকম অবস্থায় চিন্তিত দেশের গবেষক, পরিবেশবিদ এবং সরকারি আধিকারিকরা ।
গত কয়েকদিন ধরে আগুন এতটাই ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে যে, এই ঘন ধোঁয়া নজরে আসছে মহাকাশ থেকেও। এই জঙ্গলের দাবানল নিয়ে চিন্তিত গোটা পৃথিবী। এই ঘটনায় ব্রাজিল সরকারের জমি ব্যবহারের নীতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারোর দাবি, আমাজনের ভয়াবহ আগুনের নেপথ্যে রয়েছে এনজিওগুলি। সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার জন্য এনজিওরাই এমন কাজ ঘটাচ্ছে। পাশাপাশি তাঁর ক্ষোভ গিয়ে পড়েছে পরিবেশবিদদের ওপরেও। আমাজনের আগুন নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসও।