Just In
ইন্দিরা গান্ধী : আজ তাঁর জন্মবার্ষিকীতে জেনে নিন কিছু তাঁর সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য
ভারতের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী এবং অত্যন্ত ব্যক্তিত্ববান মহিলা হলেন ইন্দিরা গান্ধীর। আজ, ১৯ নভেম্বর তাঁর ১০৪তম জন্মবার্ষিকী। তিনি পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু এবং কমলা নেহেরুর একমাত্র কন্যা ছিলেন। তাঁর পিতা ছিলেন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। ১৯১৭ সালে তিনি জন্মগ্রহণ করেন ইন্দিরা গান্ধী, পিতার পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দীর্ঘস্থায়ী প্রধানমন্ত্রী হন তিনি।
প্রভাবশালী নেহেরু পরিবারে জন্মগ্রহণ করায়, তিনি এক রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে বেড়ে ওঠেন। তাঁর পিতামহ মতিলাল নেহেরু ছিলেন একজন প্রথম সারির কংগ্রেস নেতা। আজ এই বিশেষ দিনে আসুন আমরা তাঁর সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য জেনে নিই।
ইন্দিরা গান্ধীর প্রাথমিক জীবন
১) তিনি ১৯১৭ সালের ১৯ নভেম্বর এলাহাবাদে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
২) বিশ্বকবি 'রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর' তাঁকে প্রিয়দর্শিনী নাম দিয়েছিলেন এবং তাই তাঁর পুরো নাম ছিল ইন্দিরা প্রিয়দর্শিনী।
৩) শৈশবকালে, তিনি দেখেছিলেন ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং বুঝতে পেরেছিলেন যে, বিদেশী পণ্যগুলি ব্রিটিশদের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করছে। তাই, তিনি ইংল্যান্ডে তৈরি হওয়া তাঁর সমস্ত খেলনাগুলি পুড়িয়ে ফেলেছিলেন।
৪) ইউরোপে তাঁর অসুস্থ মা মারা যাওয়ার পর তিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে যান।
তাঁর বিবাহিত জীবন
১) তিনি ১৯৪২ সালে ফিরোজ গান্ধীকে বিয়ে করেছিলেন। এরপর, তিনি ইন্দিরা প্রিয়দর্শিনী গান্ধী হন এবং সবথেকে বেশি তিনি খ্যাতি লাভ করেছিলেন ইন্দিরা গান্ধী নামে।
২) তাঁর দুই পুত্র, রাজীব গান্ধী (জন্ম ১৯৪৪ সালে) এবং সঞ্জয় গান্ধী (১৯৪৬ সালে জন্ম)। তিনি সঞ্জয় গান্ধীকে তাঁর উত্তরাধিকারী হওয়ার জন্য বেছে নিয়েছিলেন।
৩) ১৯৬০ সালে হার্ট অ্যাটাকে মারা যান ফিরোজ গান্ধী। তাঁদের বিবাহিত জীবন মাত্র ১৮ বছরের ছিল।
প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী
১) প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে তিনি তাঁর পিতা এবং তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুর অফিস সহকারী হিসেবে কাজ করছিলেন।
২) জওহরলাল নেহেরুর মৃত্যুর পর তিনি রাজ্যসভার সদস্য হিসেবে নিয়োগ হন। তখন তিনি লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর মন্ত্রীসভায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন।
৩) লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর হঠাৎ মৃত্যুর পর ১৯৬৬ সালে ইন্দিরা গান্ধী ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
৪) ১৯৬৯ সালের ১৯ জুলাই তিনি ১৪টি বেসরকারি ব্যাঙ্কের জাতীয়করণ করেছিলেন। ১৪টি ব্যাঙ্কের মালিকানা হস্তান্তরিত হয়েছিল কেন্দ্রের হাতে। তাঁর বিশ্বাস ছিল, ব্যাঙ্কগুলির জাতীয়করণ হলে দেশবাসীর সুবিধা হবে।
৫) ১৯৭১ সালের লোকসভা নির্বাচনে, তিনি 'গরিবি হটাও' (দারিদ্র্য নির্মূল) জনপ্রিয় স্লোগান দিয়েছিলেন। এতে, বিপুল সংখ্যক ভোট পেয়ে দ্বিতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন ইন্দিরা গান্ধী।
৬) ১৯৭১ সালে ভারত পাকিস্তান যুদ্ধে ভারত তাঁর নেতৃত্বে জয়লাভ করে৷ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তাঁর অবদান অভিনব৷
৭) ১৯৭৫ সালে দেশে শান্তিশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে বিশেষ জরুরি আইন জারি করেন৷ এজন্য সমালোচিতও হন ইন্দিরা গান্ধী৷ এরপর, ১৯৮০ সালে পুনরায় লোকসভা নির্বাচনে বিজয়ী হন এবং প্রধানমন্ত্রী হন।
৮) ১৯৮৪ সালে ইন্দিরা গান্ধীর আদেশে শিখদের পবিত্র ধর্মাশালা স্বর্ণ মন্দিরে ভারতীয় সেনা হানা দেয়, যা অপারেশন ব্লু স্টার নামে পরিচিত ছিল।
৯) সেই বছরই ৩১শে অক্টোবর তিনি তাঁর নিজের দেহরক্ষীর হাতে মৃত্যুবরণ করেন৷