Just In
- 51 min ago কাঠফাটা গরমে শরীরে জলের ঘাটতি পূরণ করবে এই ফলগুলি!
- 2 hrs ago নতুন কাজে সাফল্য বৃষ ও কর্কটের, ৫ রাশির জন্য শুভ আজকের দিন, জানতে দেখুন রাশিফল
- 18 hrs ago অতিরিক্ত দই, বিস্কুট খাচ্ছেন? আপনার ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়াতে পারে, সতর্ক থাকুন
- 19 hrs ago গরম থেকে বাঁচতে দেদার খাচ্ছেন ডাবের জল? ডেকে আনছেন না তো বড় বিপদ!
১৯৯৯-এর কার্গিল যুদ্ধ, কেমন ছিল সেই অভিজ্ঞতা? জানালেন কর্নেল দীপক রামপাল
২৬ জুলাই, এই দিনটি ভারতের ইতিহাসে একটি স্মরণীয় দিন। কারণ এই দিনেই কার্গিল যুদ্ধে জয়লাভ করে ভারত। ১৯৯৯ সালে প্রায় দু'মাস ধরে চলেছিল এই যুদ্ধ এবং সেই বছর ২৬ জুলাই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কার্গিল যুদ্ধে জয় হয় ভারতের। কার্গিলে ভারতের পতাকা উত্তোলন করে ভারতীয় সেনা। ভারতে এই লড়াইকে 'অপারেশন বিজয়' নামেও উল্লেখ করা হয়। জম্মু ও কাশ্মীরের কার্গিল দ্রাস সেক্টরে হয়েছিল এই যুদ্ধ। পাকিস্তানি সেনারা নিয়ন্ত্রণ রেখা অতিক্রম করে ভারতের সীমান্তে ঢুকে পড়ে। তাদেরকে পিছু হঠাতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে শুরু করা হয় 'অপারেশন বিজয়'। এই যুদ্ধে বহু ভারতীয় সেনা শহীদ হয়েছিলেন।
আজ, এই কার্গিল যুদ্ধের একজন যোদ্ধা কর্নেল দীপক রামপাল-এর থেকে তাঁর সেই সময়ের অভিজ্ঞতার কথা জানব। ১৯৯৯ সালে পাকিস্তানের সাথে যুদ্ধে তিনি বীরচক্র পেয়েছিলেন। মাশকোহ-তে মেজর হিসেবে তিনি তাঁর দলের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করেছিলেন।
দীপক রামপাল বলেন, "আমি পুরো যুদ্ধতেই ছিলাম। কার্গিল যুদ্ধে আমার হাতেই বহু সেনা প্রাণত্যাগ করেছেন। শত্রুরা বিভিন্নভাবে আমাদের উপর অ্যাটাক করেছে, কিন্তু আমাদের সকলের প্রথম থেকেই দৃঢ় মনোবল ছিল, সাহস ছিল। আমাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল, দেশকে রক্ষা করা, মাতৃভূমিকে বাঁচানো। কার্গিল যুদ্ধে অনেক যোদ্ধা তাঁদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। যাঁদের কথা মনে করলে এখনও চোখ ভিজে যায়। কিন্তু আমাদের কারুর মধ্যে হেরে যাওয়ার ভয় ছিল না।"
তিনি বলেন, "আমি তার আগে জম্মু-কাশ্মীরে ছিলাম। অনেকদিন পর বাড়ি যাওয়ার জন্য ছুটি পেয়েছিলাম। তখন এপ্রিল শেষ হয়ে মে মাস শুরু হয়েছে সবে। আমি যুদ্ধের কথা আঁচ করতে পেরে আমার স্ত্রীকে জানাই, এখনই আমায় যেতে হবে, সময় এসেছে দেশের হয়ে কাজ করার, সেনাদের পাশে দাঁড়ানোর, যাতে তাদের আমি সঠিক দিক নির্দেশনা দিতে পারি এবং সকলের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করতে পারি। এতে আমার স্ত্রীও সম্মতি জানায়। আমার বাবা-মা পাঠানকোটে থাকতেন, আগে আমি সেখানে পৌঁছাই। পিতা-মাতার আশীর্বাদ নিয়ে আমি রওনা দিই। শ্রীনগর পৌঁছে সোজা আমি দ্রাস-এ যাই, যেখানে আমার ইউনিট ছিল। তারপরে আমি কার্গিল যুদ্ধে যোগ দিই।"
অনুজ নায়ার-এর প্রসঙ্গে তিনি জানান, অনুজ নায়ার সবচেয়ে ইয়ং অফিসার ছিলেন, সবে দু'বছর সার্ভিস করেছিলেন। যুদ্ধের বেশ কিছুদিন আগেই তাঁর এনগেজমেন্ট সম্পন্ন হয়। যুদ্ধের জন্য রওনা দেওয়ার সময় আমাদের বসের হাতে অনুজ নিজের এনগেজমেন্ট রিং ও হবু পত্নীর ছবি রেখে দিয়েছিলেন। ফিজিক্যালি অত্যন্ত ফিট ছিলেন, একজন ভাল স্পোর্টস ম্যানও ছিলেন। এই যুদ্ধে, অনুজ ও তাঁর সহযোদ্ধারা পাকিস্তানি অনুপ্রবেশকারীদের পিছনে হটতে বাধ্য করে।
১৭ জাট রেজিমেন্টের ক্যাপ্টেন অনুজ নায়ার-কে টাইগার হিলের পশ্চিমে পয়েন্ট ৪৮৭৫-এর এক অংশ পিম্পল কমপ্লেক্স খালি করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। পিম্পল ২-তে ১৭ জাট প্রায় বিজয়ী হয়ে গিয়েছিল। ক্যাপ্টেন অনুজ নায়ার মেশিনগান দিয়ে পাকিস্তানি বাঙ্কারও ধ্বংস করেছিলেন। কিন্তু বিজয়ের পতাকা উত্তোলনের জন্য তিনি এগিয়ে যাচ্ছিলেন যখন, তখন শত্রুদের একটি গ্রেনেড সরাসরি তাঁর উপর পড়ে এবং তিনি শহীদ হন।
পয়েন্ট ৪৮৭৫ কার্গিল যুদ্ধে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কার্গিল যুদ্ধের সময় গুরুত্বপূর্ণ 'পয়েন্ট ৪৮৭৫' উদ্ধার করতে গিয়ে শহীদ হন ক্যাপ্টেন বত্রা। মরণোত্তর পরম বীর চক্রে সম্মানিত করা হয় তাঁকে। কার্গিল যুদ্ধের সময়, তাঁর নেতৃত্বে একটি দল শত্রুদের হাত থেকে 'পয়েন্ট ৫১৪০' উদ্ধার করে। তারপর টার্গেট ছিল 'পয়েন্ট ৪৮৭৫' উদ্ধার করা। শত্রুর গুলিতে আহত হন তিনি, কিন্তু সেই অবস্থাতেও লড়াই চালিয়ে যান। যদিও শেষ পর্যন্ত গুলির আঘাতে তাঁর মৃত্যু হয়। তবে পয়েন্ট ৪৮৭৫ উদ্ধার করে দেশের পতাকা উড়িয়ে দেন ক্যাপ্টেন বত্রার সহযোদ্ধারা।