Just In
কোভিড-১৯ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধিতে পুলিশের অভিনব উদ্যোগ
বিশ্বব্যাপী মারণ করোনা ভাইরাস মহামারীর কারণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গোটা দেশে ২১ দিনের লকডাউন জারি করেছেন, তাই প্রত্যেকেই দেশ ও প্রিয়জনদের কথা ভেবে নিজের বাড়িতে একরকম আটক-ই আছে বলা যেতে পারে। ইচ্ছা থাকা সত্বেও কেউ কোথাও বেরোতে পারছে না। অনেকেই সাধারণ জীবনযাত্রা থেকে বেরিয়ে সর্বক্ষণ বাড়িতে থাকতে পছন্দ করছেন না। এনিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় নানারকম পোষ্ট-ও ঘোরাফেরা করছে।
কিন্তু, কিছু মানুষ আছেন যারা সাম্প্রতিক পরিস্থিতিটি বোঝার মুডে নেই বলে মনে হয়। অনেকেই লকডাউন না মেনেই বাড়ির বাইরে বেরিয়ে পড়ছেন। এনিয়ে পুলিশের তরফ থেকে জনগণকে বাড়ির ভিতরে থাকতে এবং অকারণে বাইরে যাওয়া এড়াতে বলা হচ্ছে। পুলিশ মানুষকে বোঝানোর জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন যে, এই পরিস্থিতিতে ঘরে থাকটা কতটা জরুরি।
আপনি হয়তো এমন কিছু ভিডিয়ো দেখে থাকবেন যেখানে পুলিশরা অযথা বাইরে বেরোনো লোকেদের ধমক দিচ্ছেন বা বকছেন বা অন্য উপায় ব্যবহার করছেন।
এরকম একটি ভিডিয়ো দেখা গেছে IPS অফিসার তবারক ফতিমা-র, যিনি কোভিড-১৯ সম্পর্কে সচেতনতা ছড়াতে গান গাইছেন। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং বাড়ির অভ্যন্তরে থাকা কেন গুরুত্বপূর্ণ সে সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করার জন্য তিনি এই গানটি গেয়েছেন। তাঁকে 'উই শ্যাল ওভারকাম' গানটির সুরে 'উই শ্যাল স্যানিটাইজ, উই শ্যাল স্যনিটাইজ' গানটি গাইতে দেখা গেছে। তাঁর এই গানের মধ্যে 'উই শ্যাল ওয়্যার মাস্ক এভরি ডে' লাইনটিও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
Sarah Fatima, IPS is the Assistant Commissioner of Police, Bangalore (East). Listen to her. #Covid19India pic.twitter.com/aO3bUAb2zU
— Nirupama Menon Rao, निरुपमा राउ, بینظیر (@NMenonRao) March 25, 2020
কেবলমাত্র তবারক ফতিমা-ই নন, বিলাসপুরের একজন পুলিশম্যান অভিনব পাণ্ডে-কেও 'এক পেয়ার কা নগমা হ্যায়' গানটির সুরে একটি গান গাইতে দেখা গেছে। গানের লাইনগুলি হল, 'ঘর ম্যায় হি রেহেনা হ্যায়, বাহার নেহি জানা হ্যায়' এর অর্থ 'আমরা আমাদের ঘরে থাকব এবং বাইরে যাওয়া এড়িয়ে চলব।'
#WATCH Chhattisgarh: A policeman, Abhinav Upadhyay sings a song to spread awareness about #COVID19 in a residential area of Civil Lines in Bilaspur. A woman had tested positive for the disease in the city after returning from Saudi Arabia. There are 7 COVID-19 cases in state. pic.twitter.com/I15yNosPvj
— ANI (@ANI) March 30, 2020
চেন্নাই-এর আরেক পুলিশ ইন্সপেকটর রাজেশ বাবু-কে করোনা ভাইরাসের আণুবীক্ষণিক চেহারার সাথে সাদৃশ্যযুক্ত হেলমেট পরা অবস্থায় দেখা গিয়েছে। পুলিশ যানবাহন ও পথচারীদের থামিয়ে তাদেরকে বাড়িতে থাকার প্রয়োজন সম্পর্কে বোঝাচ্ছিল। একজন লাল আর একজন একই রকম সবুজ রঙের হেলমেট পরে করোনা ভাইরাস কীভাবে ছড়িয়ে পড়ে সে সম্পর্কে ছোট অভিনয়ের মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করছিল।
VIDEO: From traffic police dancing and donning coronavirus shaped helmets to painted horses, creative stunts by these Indian police say they are promoting safety and awareness for the coronavirus, urging citizens to stay indoors during the three-week long lockdown pic.twitter.com/ozHRQRLG3K
— AFP news agency (@AFP) April 1, 2020
এই ধারণাটি চেন্নাই বেসড অর্গানাইজেশন, আর্ট কিংডমের প্রতিষ্ঠাতা বি.গৌথাম পরামর্শ দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
মানুষ করোনা ভাইরাস সম্পর্কে সতর্কত হচ্ছে না এবং স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখছে না, এই দেখে গৌথাম এই অনন্য হেলমেটটি প্রস্তুত করেছিলেন। তিনি হেলমেট প্রস্তুত করতে পুলিশ স্টেশন গিয়েছিলেন অনুমতি চাইতে। খবরের কাগজ এবং টিস্যু ব্যবহার করে হেলমেটটি তৈরি করা হয়েছে। এই হেলমেট তৈরির পিছনে উদ্দেশ্য ছিল, পুলিশ বিভাগকে সচেতনতা ছড়ানোয় সহায়তা করা।
শুধু এটিই নয়, হায়দরাবাদের ট্রাফিক পুলিশকে ট্র্যাফিক সিগন্যালে সঠিক স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে সচেতনতা ছড়াতে দেখা গেছে। তারাও জনগণকে অ্যালকোহল ভিত্তিক স্যানিটাইজারের সাহায্যে সঠিকভাবে হাত পরিষ্কার করার আহ্বান জানিয়েছেন।
অন্য একটি ভাইরাল ভিডিয়োতে দেখা গেছে যে, একজন পুলিশ মহিলাদের অনুরোধ করছেন যেন তারা তাদের স্বামীদের বাড়ির কাজ করতে দেয়। তিনি বলেছেন, পুরুষরা যদি বাড়ির কাজকর্মে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় তবে তারা বোর ফিল করবেন না এবং বাইরে যাওয়া এড়াবেন।
This Punjab cop telling women to put men to work at home during #lockdownindia wins the Internet. Go home yo!!! pic.twitter.com/kwHtBPMuit
— Nistula Hebbar (@nistula) March 27, 2020
এমনকি, একজন স্প্যানিশ পুলিশ কর্মকর্তাকে লকডাউনের সময় মানুষের জন্য গান গাইতে দেখা গেছে। একজন পুলিশ আধিকারিক গিটার বাজিয়ে গান গাইছেন। অন্যদিকে, সাধারণ মানুষও পুলিশ অফিসারের গাওয়া গান উপভোগ করছে বলে মনে হচ্ছে।
এটি বলা বাহুল্য যে, স্বাস্থ্যকর্মী এবং পুলিশরা কোভিড-১৯ ছড়ানো নিয়ন্ত্রণ করার যথাসাধ্য চেষ্টা করছে। দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে, আমাদেরও তাদের অনুরোধগুলি মেনে চলতে হবে এবং অন্যের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বাড়িতে থাকতে হবে।