Just In
হাতের কবজিতে ধাগা তো নিশ্চয় পরেন! কিন্তু এই সব সুতো পরলে কী কী উপকার পাওয়া যায় জানা আছে?
বিপদতারিনী দেবীর ধাগা তো প্রায় প্রতিটি বাঙালিই পরে থাকেন। আর কখনও-সখনও তার সঙ্গে যোগ হয় আরও নানা দেব-দেবীদের পায়ে ছোঁয়ানো সুতো।
বিপদতারিনী দেবীর ধাগা তো প্রায় প্রতিটি বাঙালিই পরে থাকেন। আর কখনও-সখনও তার সঙ্গে যোগ হয় আরও নানা দেব-দেবীদের পায়ে ছোঁয়ানো সুতো। কিন্তু কখনও ভেবে দেখেছেন এই সব ধাগা পরলে আদৌ কোনও উপকার হয় কিনা। আর যদি হয়, তাহলে কেন হয়!
হিন্দু ধর্মের উপর লেখা একাধিক বইয়ে খারাপ শক্তিকে দূরে রাখার একাধিক পন্থা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে, যার মধ্যে অন্যতম হল ধাগা। এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে একেক রঙের ধাগা একেকটি কাজে লেগে থাকে। যেমন ধরুন লাল ধাগা যে কাজে লাগে, সাদা সেই কাজে লাগে না। আর যদি এই সব ধাগা পুজো করে পরতে পারেন, তাহলে তো কথাই নেই, সেক্ষেত্রে একাধিক উপকার মেলার সম্ভাবনা যায় বেড়ে, যে সম্পর্কে এই প্রবন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
হিন্দু শাস্ত্রে পাঁচ ধরনের ধাগার উল্লেখ পাওয়া যায়। সেগুলি হল লাল, কমলা, সাদা, কালো এবং হলুদ। এখন প্রশ্ন হল একেক রঙের ধাগা কী কী কাজে এসে থাকে?
১. সাদা ধাগা:
অনেক মন্দিরেই দেবে-দেবীর পুজো করার পর ভক্তদের সাদা ধাগা দেওয়া হয়ে থাকে। কিন্তু তখনও ভেবে দেখেছেন সাদা ধাগা পরলে কী কী উপকার মিলতে পারে? শাস্ত্র মতে সাদা রঙের ধাগা বা সুতো কবজিতে পরলে খারাপ কোনও ঘটনা ঘটার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। সেই সঙ্গে মনের জোড় এতটা বেড়ে যায় যে জীবন পথে চলতে চলতে সামনে আসা যে কোনও বাঁধা পেরতে সময় লাগে না। প্রসঙ্গত, পইতে অনুষ্ঠানের পর ব্রাহ্মণ পরিবারের ছোট ছেলেদের সাদা সুতো দিয়ে তৈরি পইতে পরানো হয়ে থাকে। জানেন কি সাদা সুতো কবজিতে পরলে যে যে উপকার পাওয়া যায়, পইতে পরার পরার পরেও কিন্তু সমান উপকার মেলে।
২. লাল সুতো:
বেশিরভাগ মন্দিরেই, বিশেষত কালি মাতার মন্দিরে পুজো করে লাল সুতো পরার রেওয়াজ বহু বছর ধরে চলে আসছে। এমন সুতো পরলে একদিকে যেমন দেব-দেবীদের আশীর্বাদ মেলে, তেমনি লাল রঙের প্রভাবে খারাপ শক্তি ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। ফলে নানাবিধ বিপদ ঘটার আশঙ্কা যায় কমে। সেই সঙ্গে রোগ-ব্যাধি দূরে পালায় এবং আরও সব উপকার মিলতে শুরু করে। যেমন ধরুন- পরিবারে সুখ-সমৃদ্ধির ছোঁয়া লাগে এবং অর্থনৈতিক উন্নতি ঘতে সময় লাগে না। প্রসঙ্গত, শাস্ত্র মতে শুক্লা চতুর্দশির দিন ঠাকুরের পায়ে ছুঁইয়ে যদি লাল সুতো কবজিতে পরা যায়, তাহলে আরও অনেক উপকার মিলতে শুরু করে। তাই তো বলি বন্ধু সুখে-শান্তিতে এবং নিরাপদে থাকতে কবজিতে লাল সুতো পরতে ভুলবেন না যেন! তবে এক্ষেত্রে একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে, তা হল পুরুষেরা এবং অবিবাহিত মহিলারা ডান হাতে এবং বিবাহিত মহিলাদের বাঁহাতে এই সুতো পরতে হবে, তাহলেই কিন্তু মিলবে নানাবিধ উপকার।
৩. কালো সুতো:
শাস্ত্র মতে কালো রঙের সুতো কবিজিতে বা গোড়ালিতে পরলে খারাপ শক্তি ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। ফলে কোনও ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা যেমন কমে, তেমনি পরিবারে কোনও ধরনের কলহ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার সম্ভাবনাও যায় কমে। সেই সঙ্গে মানসিক অশান্তির মার সহ্য করার আশঙ্কাও কমে। প্রসঙ্গত, এমনটাও বিশ্বাস করা হয় যে কালো সুতো হাতে বা শরীরের কোথাও পরা থাকলে কালো যাদুর প্রভাবে কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কাও কমে।
৪. কমলা রঙের সুতো:
পূর্ব ভারতে কমলা রঙের ধাগা পরার প্রচলন সেভাবে নেই ঠিকই, কিন্তু যদি পরতে পারেন, তাহলে কিন্তু দারুন সব উপকার মিলতে শুরু করে। আসলে উত্তর ভারতের মানুষেরা এমনটা বিশ্বাস করেন যে ডান হাতের কবজিতে কমলা রঙের ধাগা পরলে জনপ্রিয় হয়ে ওঠার সম্ভাবনা যায় বেড়ে। সেই সঙ্গে সামাজিক ক্ষমতাও বাড়ে। শুধু তাই নয়, কমলা রঙের প্রভাবে খারাপ শক্তিও ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। ফলে জীবনে কখনও দুঃখের খপ্পরে পরার আশঙ্কা যায় কমে।
৫. হলুদ রঙের ধাগা:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে হলুদ রঙের সুতো কবজিতে বাঁধলে গুড লাক রোজের সঙ্গী হয়ে ওঠে। ফলে মনের ছোট থেকে ছোটতর ইচ্ছা পূরণ হতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে কর্মক্ষেত্রে থেকে সামাজিক জীবন, সব ক্ষেত্রেই সম্মান বৃদ্ধির সম্ভাবনা যায় বেড়ে। শুধু তাই নয়, এমনও ধারণা আছে যে বিয়ের সময় হলুদ সুতো পরলে শুভ কাজ দারুনভাবে সম্পন্ন হয়। সেই সঙ্গে স্বামী-স্ত্রীর আয়ুও বৃদ্ধি পায় চোখে পরার মতো। প্রসঙ্গত, হিন্দু শাস্ত্রের উপর লেখা বেশ কিছু বই অনুসারে হলুদ রঙের ধাগা হাতে পরলে চাকরি এবং ব্যবসায় চোখে পরার মতো উন্নতি লাভের পথ প্রশস্ত হয়। তাই তো বলি বন্ধু, চরম সফলতা এবং সুখি জীবনের স্বাদ যদি পেতে চান, তাহলে হলুদ সুতো পরতে ভুলবেন না যেন!