Just In
এবার মা আসছেন নৌকায়, যাচ্ছেন হাতির পিঠে চেপে! আর এই কারণে আমাদের জীবনের উপর কেমন প্রভাব পরবে জানেন?
শাস্ত্র মতে প্রতি বছরই মা অন্য নানা ধরনের বাহনে চেপে এই ধরাধামে আসেন। বাহন হয় কখনও নৌকা, তো কখনও হাতি বা ঘোড়া।
দেবী দুর্গার বাহন নিশ্চয় সিংহ। তবে শাস্ত্র মতে প্রতি বছরই মা অন্য নানা ধরনের বাহনে চেপে এই ধরাধামে আসেন। তবে সঙ্গে অবশ্যই থাকে জাঙ্গাল কিং। আর বাহন হয় কখনও নৌকা, তো কখনও হাতি বা ঘোড়া। তবে যেটা জানার বিষয়, তা হল বাহন ভেদে কিন্তু আমাদের জীবনের উপর নানা খারাপ-ভাল প্রভাব পরে থাকে। তাই তো কোন বছর মা কী বাহনে চেপে আসছেন এবং দশমীর পর কী বাহনে চেপে কৈলাশে ফেরত যাচ্ছেন, সে সম্পর্কে জেনে নাওয়াটা কিন্তু একান্ত প্রয়োজন।
প্রসঙ্গত, এবছর মা আসছেন নৌকায় চেপে এবং ফিরে যাবেন হাতির পিঠে সওয়ার হয়ে। আর ঠিক এই কারণেই এ বছর নবরাত্রির সময় এবং পরে আমাদের নানাবিধ সুফল মিলবে। যেমন ধরুন...
১. সব কষ্ট দূর হবে:
জ্যোতিষ বিশেষজ্ঞদের মতে মায়ের নৌকায় আসা এবং হাতির পিঠে চেপে ফিরে যাওয়ার ঘঠনা শাস্ত্র বেজায় শুভ লক্ষণ হিসেবে গণ্য করা হয়ে থাকে। কারণ এমনটা হওয়ার অর্থ হল এবছর চাষ খুব ভাল রকম ভাবে হবে। তাই যারা কৃষিকাজ সম্পর্কিত নানা কাজের সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের জীবনে এবার আর খুশির অভাব ঘটবে না। আর হাতির পিঠে চেপে মা ফিরছেন মানে আমাদের সবারই অর্থনৈতিক উন্নতি ঘটবে চোখে পরার মতো। শুধু তাই নয়, নিজের পরিশ্রমের ফলও মিলতে শুরু করবে...! তাই তো বলি বন্ধু, মায়ের আশীর্বাদে আমাদের সবারই বাকি বছরটা যে বেজায় আনন্দেই কাটবে, বিশেষত অর্থনৈতিক দিক থেকে, সে বিষয়ে কিন্তু কোনও সন্দেহ নেই।
২. নবরাত্রির নয় দিন:
জ্যোতিষ শাস্ত্র মতে এবারের দুর্গা পুজোটা আমাদের কাছে যে বেজায় শুভ, সে বিষয়ে কিন্তু কোনও সন্দেহ নেই। কেন এমন কথা বলছি তাই ভাবছেন নিশ্চয়? আসলে বন্ধু, নবরাত্রি মানে নয় দিন, দেবীর নয়টি রূপের পুজো করা হয়ে থাকে। কিন্তু প্রতি বছরই যে নবরাত্রি ঠিক ঠিক নয় দিনই উদযাপন করা হয়ে থাকে, এমন নয় কিন্তু। আসলে তিথি এবং নক্ষত্র দেখে কোনও কোনও বছর ৮ দিন, তো কোনও বছর ১০ দিনও টানা মা দুর্গার অরাধনা করা হয়ে থাকে। কিন্তু এবছর গ্রহ-নক্ষত্রের অবস্থান অনুযায়ী নবরাত্রির দিন সংখ্যা এসে দাঁড়িয়েছে একদম নয় দিনে, যা শাস্ত্র মতে বেজায় শুভ। এবার বুঝেছেন নিশ্চয়, এ বছর দুর্গা পুজোটা আমাদের এত ভাল যাবে কেন...!
৩. গ্রহ-নক্ষত্রে অবস্থানে পরিবর্তন আসতে চলেছে:
নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর আমাদের জন্ম কুষ্টিতে গ্রহ-নক্ষত্রদের অবস্থা বদলে যায়। আর সেই মতো আমাদের জীবনেও নানা খারাপ-ভাল ঘটনা ঘটে থাকে। তখনও গ্রহদের প্রভাবে নানা উপকার হয়, তো কখনও নানাবিধ বিপদ ঘটার আশঙ্কা যায় বেড়ে। কিন্তু এ বছর দুর্গাপুজোর সময় যে যে প্ল্যানেটারি মুভমেন্টগুলি হতে চলেছে, তাতে আমাদের তো কোনও ক্ষতি হবেই না, উল্টে নানা উপকার মিলবে। বিশেষত কর্মক্ষেত্রে উন্নতি লাভের পথ যেমন প্রশস্ত হবে, তেমনি নিজের বাড়ি হওয়ার স্বপ্ন পূরণের সম্ভাবনাও বাড়বে। এবারের নবরাত্রির সময় পাঁচটি শুভ যোগ রয়েছে। অর্থাৎ এই সময়গুলিতেই গ্রহ-নক্ষত্রের অবস্থান যা হবে, তার প্রভাবে নানাবিধ উপকার মিনতে শুরু করবে। প্রসঙ্গত, প্রথম যোগটি শুরু হবে অক্টোবরের ১০ তারিখ, যা প্রতিপদ রবি যোগ নামে পরিচিত। ১২অক্টোবর, মানে আগামী কাল শুরু হবে চতুর্থি রবি যোগ। আর ১৩ তারিখ হল পঞ্চমী রবি যোগ শুরু হওয়ার দিন। ১৪ অক্টোবর শুরু হবে ষষ্ঠী রবি য়োগ এবং সর্বরত সিদ্ধি যোগ। সব শেষে ১৫ তারিখ আসবে শেষ যোগের পালা। এদিন শুরু হবে সপ্তমী রবি যোগ।
৪. শুক্রের প্রভাবে অফুরন্ত আনন্দের সন্ধান পাবেন:
দুর্গা পুজোর সময় এমনিতেই আমাদের সবারই মন বেজায় চাঙ্গা হয়ে ওঠে। তবে এবারের পুজোটা যে সবারই কাছেই স্পেশাল হতে চলেছে, সে বিষয়ে কিন্তু কোনও সন্দেহ নেই! কারণ পুজোর কটা দিন শুক্র গ্রহের যা অবস্থান হতে চলেছে, তার প্রভাবে সবারই কর্মজীবনে নতুন নতুন সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে, সেই সঙ্গে মনের মতো জীবনসঙ্গীর খোঁজও মিলবে। শুধু তাই নয়, নানাবিধ ঝামেলার কারণে যাদের বিয়ে আটকে রয়েছে, এবার শুক্রের প্রভাবে সেই সব সমস্যাও দেখবেন মিটে যেতে শুরু করবে। তাই তো বলি বন্ধু আগামী ৮-৯ দিন বেজায় শুভ। তাই এই সময় নতুন উদ্যোগে নিজের জীবনকে সুন্দর ভাবে গড়ে তুলতে কোনও খামতি রাখবেন না যেন!
৫. নবরাত্রির সময়কার বৃহস্পতি পুজো:
বিশেষজ্ঞদের মতে এবারের নবরাত্রির সময় দুটি বৃহস্পতি বার আসবে। এক তো আজকের দিনটা। আর পরেটা আসবে ১৮ তারিখ। এই দুদিন উপোস করে মা দুর্গার আরাধনা করার পাশপাশি যদি এক মনে ভগবান বিষ্ণুর হাজার বার নাম নেওয়া যায়, তাহলে কিন্তু দ্বিগুণ সুফল মিলবে। এক্ষেত্রে দেবী দুর্গা এবং ভগবান বিষ্ণুর আশীর্বাদে খারাপ সময় কেটে যেতে যেমন সময় লাগবে না, তেমনি মনের সব ইচ্ছাও পূরণ হবে চোখের পলকে। শুধু তাই নয়, এমন বিশেষ পুজোর আয়োজন করলে অর্থনৈতিক উন্নতিও ঘটবে চোখে পরার মতো। তাই তো বলি বন্ধু, বাকি জীবনটা যদি সুখে-শান্তিতে এবং আনন্দে কাটাতে হয়, তাহলে এই নিয়মটি মানতে ভুলবেন না যেন!
৬. এই নিয়মগুলি মানলে মিলবে আরও উপকার:
শাস্ত্র মতে নবরাত্রির সময় যদি বিশেষ কিছু নিয়ম মেনে চলা যায়, তাহলে মায়ের আশীর্বাদ মিলতে সময় লাগে না। আর যে ভক্তের উপর মায়ের নেক নজর পরে, তার জীবনটাই যে বদলে যাবে, তা কি আর বলার অপেক্ষা রাখে। তাই এক প্রশ্ন হল দুর্গা পুজোর সময় মাকে খুশি করতে কী কী বিষয় মাথায় রাখতে হবে? এক্ষেত্রে যে যে নিয়মগুলি মানতে হবে, সেগুলি হল-
ক. পুজোর চারদিনই মায়ের পুজোর আয়োজন করতে হবে। এক্ষেত্রে ঘটা করে মায়ের আরাধনা করার প্রয়োজন নেই। বরং দেবীর সামনে ফুল এবং প্রসাদ চড়িয়ে, ধূপ-ধুনো সহকারে এক মনে মা দুর্গার নাম নিলেই দেখবেন কেল্লা ফতে!
খ. নবরাত্রির সময় সম্ভব হলে আমিষ খাবার খাবেন না।
গ. দেবীর ছবি বা মূর্তির সামনে ২৪ ঘন্টা একটা প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে এই প্রদীপ যেন না নেভে।
ঘ. নবরাত্রির এক একদিনে মাকে এক এক ধরনের প্রসাদ চড়াতে হবে। যেমন ধরুন- প্রথম দিনে ঘি দিয়ে বানানো প্রসাদ নিবেদন করলে দেবীর আশীর্বাদে শরীর চাঙ্গা হয়ে উঠতে দেখবেন সময় লাগবে না। দ্বিতীয় দিনে চিনি এবং ফল, প্রসাদ হিসেবে চড়ালে আয়ু বাড়বে চোথে পরার মতো। তৃতীয় দিনে মায়ের প্রসাদ হতে হবে দুধ অথবা দুধ দিয়ে বানানো যে কোনও মিষ্টি। চতুর্থ দিনে যদি দেবীর সামনে প্রসাদ হিসেবে মালপোয়া রাখতে পারেন, তাহলে ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়ার আশঙ্কা যাবে কমে। পঞ্চম দিনে কলা নিবেদন করতে হবে। সপ্তম দিনে প্রসাদ হতে হবে মধু দিয়ে বানানা যে কোনও পদ। আর অষ্টমীর দিন মাকে খাওয়াতে হবে নারকেল নাড়ু। একেবারে শেষ দিনে, অর্থাৎ নবমীর দিন মায়ের প্রসাদ হওয়া চাই তিল দিয়ে বানানো যে কোনও পদ।