Just In
প্রতিদিন অশ্বত্থ গাছের পুজো করা উচিত কেন জানা আছে?
জ্যোতিষ শাস্ত্রের উপর লেখা একাধিক বই অনুসারে এই গাছটির সঙ্গে নাকি বৃহস্পতি গ্রহের যোগ রয়েছে।
সারা বিশ্বে ভারতই এমন এক দেশ, যে দেশের মানুষের সঙ্গে, ধর্মের সঙ্গে প্রকৃতির যোগ বেজায় নিবিড়। তাই তো আমাদের দেশে পুজো করা হয় নানা গাছের। নানা পশু-পাখিকে দেখা যায় দেব-দেবীদের বাহন হিসেবে। আর গঙ্গা জলের কথা ভুলে গেলে চলবে কীভাবে! এই বিশেষ জলটি ছাড়া যে কোনও পুজো বা শুভ কাজই সম্ভব নয়। তাই তো ভারতীয় হিসেবে আমাদের গর্ব হওয়া উচিত। কারণ আমরা আমরা আমাদের ধর্মের সন্ধান পাই প্রকৃতির মাঝে।
অশ্বত্থ গাছের কথাই ধরুন না! জ্যোতিষ শাস্ত্রের উপর লেখা একাধিক বই অনুসারে এই গাছটির সঙ্গে নাকি বৃহস্পতি গ্রহের যোগ রয়েছে। তাই তো প্রতিদিন অশ্বত্থ গাছে জল দান করার পাশাপাশি "মূলে তো ব্রহ্মা রূপায় মাঝে তো বিষ্ণু রুপায় আগর্থ শিব রুপায় ব্রিকশ রাজায় নমো নমহ", এই মন্ত্রটি জপ করলে, বৃহস্পতি গ্রহ তো সন্তুষ্ট হনই, সেই সঙ্গে ব্রহ্মা, বিষ্ণু এবং মহেশ্বরও বেজায় প্রসন্ন হন। ফলে তিন শক্তির আশীর্বাদে নানা ধরনের উপকার হওয়ার পথ প্রশস্ত হয়। ফলে জীবনের ছবিটা বদলে যেতে সময় লাগে না, তা কী আর বলার অপেক্ষা রাখে।
প্রসঙ্গত, প্রতিদিন অশ্বত্থ গাছে জল দান করলে সাধারণত যে যে উপকারগুলি পাওয়া যায় সেগুলি হল...
১. মনোযোগ ক্ষমতার উন্নিতে ঘটে:
বিশ্বাস করতে কষ্ট হলেও শাস্ত্রে এমনটা দাবী করা হয়েছে যে অশ্বত্থ গাছের পুজো করা শুরু করলে ব্রেন পাওয়ার বৃদ্ধি পেতে সময় লাগে না। ফলে মনোযোগ ক্ষমতার বিকাশ তো ঘেটেই, সেই সঙ্গে বুদ্ধির ধার বারে চোখে পরার মতো। প্রসঙ্গত, এমনটাও বিশ্বাস করা হয় যে এই বিশেষ গাছটির পুজো করা শুরু করলে ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়। আর জীবন পথে চলতে চলতে নেওয়া বেশিরভাগ সিদ্ধান্তই যখন ঠিক হয়, তখন নানা কষ্ট কমে যেতে যে সময় লাগে না, তা কি আর বলার অপেক্ষা রাখে!
২. কর্মজীবনে সফলতা লাভের সম্ভাবনা বাড়ে:
শাস্ত্র মতে অশ্বত্থ গাছের পুজো করা শুরু করলে জন্ম কুষ্টিতে বৃহস্পতি গ্রহের অবস্থান জোরালো হতে শুরু করে। ফলে দেব গুরু বৃহস্পতির প্রভাবে কর্মজীবনে মাথা চাড়া দিয়ে ওঠা নানা সমস্যা যেমন মিটে যায়, তেমনি প্রতিপক্ষদের নিকেশ ঘটতেও সময় লাগে না। সেই সঙ্গে পদন্নতির একের পর এক দরজা খুলে যায় চোখের পলকে।
৩. বৈবাহিক জীবনে সুখ-শান্তির পরিবেশ বজায় থাকে:
বেশ কিছু সমীক্ষার দিকে যদি নজর ফেরালে দেখতে পাবেন আজকের দিনে কম বয়সিদের মধ্যে ডিভোর্সের হার বাড়ছে চোখে পরার মতো। এমন পরিস্থিতিতে বৈবাহিক জীবনে সুখ-শান্তি বাজায় রাখতে অশ্বত্থ গাছের পুজো করার প্রয়োজন যে বেড়েছে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই! আসলে অ্যাস্ট্রোলজির উপর লেখা একাধিক বই অনুসারে জন্ম কুষ্টির বিবাহ ঘরে যাদের শনি, রাহু, মঙ্গল, কেতু এবং সূর্যের প্রভাব বেশি রয়েছে, তারা যদি নিয়মিত অশ্বত্থ গাছের পুজো শুরু করেন, তাহলে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্কের উন্নতি ঘটতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে পরিবারে সুখ এবং সমৃদ্ধির ছোঁয়াও লাগে।
৪. বাবা-মা হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হবে:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে যাদের জন্মকুষ্টির পঞ্চম ঘরে শনি, মঙ্গল, সূর্য এবং কেতুর প্রভাব বেশি রয়েছে, তাদের বাচ্চা হওয়ার ক্ষেত্রে নানাবিধ সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। এমনকী মিসক্যারেজের সম্ভাবনাও থাকে। এমন পরিস্থিতিতে যদি অশ্বত্থ গাছের পুজো শুরু করা যায়, তাহলে এই সব গ্রহ-নক্ষত্রের প্রভাব কমতে শুরু করে। ফলে বাবা-মা হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হতে সময় লাগে না। তাই তো বলি বন্ধু, যারা হাজারে চেষ্টার পরেও ছেলে-মেয়ের সুখ পাচ্ছেন না, তারা একবার কোনও জ্যোতিষ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলে এই বিশেষ গাছটির পুজো শুরু করা শুরু করুন। এতে উপকার যে মিলবে, সে কথা হলফ করে বলা যেতে পারে।
৫. অর্থনৈতিক উন্নতি ঘটবে চেখের পলকে:
বিশেষজ্ঞদের মতে প্রতিদিন এক মনে অশ্বত্থ গাছের পুজো করলে টাকা-পয়সা সংক্রান্ত নানাবিধ ঝামেলা মিটে যেতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে অর্থনৈতিক উন্নতিও ঘটে চোখে পরার মতো। ফলে বড়লোক হয়ে ওঠার স্বপ্ন পূরণ হয় চোখের পলকে। আসলে এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে অশ্বত্থ গাছের পুজো করলে মা লক্ষ্মী এবং কুবের দেবের প্রবেশ ঘটে বাড়িতে। ফলে অর্থনৈতিক উন্নতি ঘটতে যেমন সময় লাগে না, তেমনি পরিবারে সুখের ঝাঁপি খালি হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়।
৬. দেবাদিদেব মহাদেব বেজায় প্রসন্ন হন:
যেমনটা আগেও আলোচনা করা হয়েছে যে অশ্বত্থ গাছের পুজো করলে মহাদেব বেজায় প্রসন্ন হন। ফলে দেবের আশীর্বাদে কোনও ধরনের বিপদ ঘটার আশঙ্কা যেমন কমে, তেমনি কর্মক্ষেত্র থেকে সামাজিক জীবন, সব ক্ষেত্রেই সম্মান বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে কালো যাদুর প্রভাব কমে যেতেও সময় লাগে না।
৭. রোগ-ব্যাধি দূরে পালায়:
নানাবিধ রোগের খপ্পরে পরে কি জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে? তাহলে বন্ধু অশ্বত্থ গাছে জল দান করতে ভুলবেন না যেন! কারণ এই গাছটির পুজো শুরু করলে পরিবারের প্রতিটি কোণায় পজেটিভ শক্তির মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। ফলে শরীর যেমন রোগমুক্ত হয়, তেমনি গুড লাক রোজের সঙ্গী হয়ে ওঠে। ফলে মনের চোট থেকে ছোটতর ইচ্ছা পূরণ হতেও সময় লাগে না।
৮. শনি গ্রহের প্রভাব কমে:
একথা তো নিশ্চয় জানা আছে যে কারও উপর যদি শনি দেবের বক্র দৃষ্টি পরে, তাহলে এত ধরনের সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে যে জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠতে সময় লাগে না। আর শনির সাড়ে সাতি কাটতে কাটতে কিন্তু সাত বছর লেগে যায় বন্ধু। তাই তো বলি, শনি দেবকে প্রসন্ন করে যদি জীবনকে সুন্দর করে তুলতে হয়, তাহলে অশ্বত্থ গাছে জল ঢালতে ভুলবেন না যেন! আসলে এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে এই বিশেষ গাছটির পুজো করা শুরু করলে শনি দেবের প্রভাব যেমন চটজলদি কেটে যায়, তেমনি জন্মকুষ্টিতে শনি গ্রহের প্রভাব পরার আশঙ্কাও কমে।