Just In
রিউমাটয়েড আর্থারাইটিসের ব্যাথা থেকে মুক্তির উপায়
রিউমাটয়েড আর্থারাইটিস সারানোর সঠিক পদ্ধতি চিকিৎসকই বলতে পারবেন। কিন্তু কয়েকটি পদক্ষেপ করে এর ব্যাথার উপসম করা যেতে পারে।
রিউমাটয়েড আর্থারাইটিস এখন খুবই প্রচলিত একটি অসুখ। ঠিক কী কারণে এই সমস্যা হয়, তা নিয়ে বিশেষজ্ঞরাও একমত নন। কিন্তু পরিসংখ্যান বলছে পুরুষদের থেকে মেয়েদের এই সমস্যা বেশি হয়। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক, কাকে রিউমাটয়েড আর্থারাইটিস বলে। এটা এক ধরনের অটোইমিউন ডিসঅর্ডার। শরীরের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা যখন সুস্থ কোষকে আক্রমণ কে, তাকে ধ্বংস করতে থাকে, তখনই এই সমস্যার সূত্রপাত হয়। কিন্তু ঠিক কী কারণে শরীর এভাবে ভুল সিদ্ধান্ত নিতে থাকে, তা এখনও পরিষ্কার নয়। শরীরে তৈরি হওয়া অতিরিক্ত অ্যান্টিবডি এই সময় হাড়ের সংযোগস্থলে জমা হয়। এবং সেই সংযোগস্থল ঘিরে থাকা পেশিতন্তুকে আক্রমণ করে। ফলে ওই স্থানগুলোতে ব্যথা হয়। একেই চিকিৎসার পরিভাষায় রিউমাটয়েড আর্থারাইটিস বলে।
এই রোগ সারানোর সঠিক পদ্ধতি চিকিৎসকই বলতে পারবেন। কিন্তু কয়েকটি পদক্ষেপ করে এর ব্যাথার উপসম করা যেতে পারে।
১। ঠান্ডা-গরম
অনেকেই মনে করেন, ঠান্ডা এবং গরম ট্রিটমেন্টই এই রিউমাটয়েড আর্থারাইটিস সারানোর সেরা দাওয়াই। যদি ঠান্ডা ট্রিটমেন্ট করতে চান, তাহলে বরফের প্যাক নিতে পারেন। ব্যাথার জায়গায় এই প্যাক মিনিট ১৫ ধরে লাগান। এর চেয়ে বেশিক্ষণ না রাখাই ভালো। দু'বার আইস প্যাক ব্যবহারের মাঝে অন্তত আধ ঘণ্টার ব্যবধান রাখবেন। যদি ঠান্ডার বদলে গরম ট্রিটমেন্ট করতে চান, তাহলে সেঁক দিতে পারেন। হাড়ের সংযোগস্থলে উত্তাপের প্রয়োগে পেশির কিছুটা প্রসারণ হবে। এতে ব্যাথার নিরাময় হবে। মনে রাখবেন, কখনওই খুব বেশি গরম সেঁক দেবেন না। ততটা দেবেন, যতটা আপনার ত্বক সহ্য করতে পারে।
২। ম্যাগনেট বা চুম্বক
বহু ওষুধের দোকানেই অস্টিওআর্থারাইটিসের জন্য ম্যাগনেটের প্লেট বা বেল্ট বিক্রি করা হয়। ম্যাগনেটের ব্রেসলেট, নেকলেসও পাওয়া যায়। অস্টিওআর্থারাইটিসের ক্ষেত্রে এই ম্যাগনেট দারুণ কাজে লাগলেও, রিউমাটয়েডের ক্ষেত্রে কতটা কাজে লাগে, তা নিয়ে দ্বিমত রয়েছে। তবে ব্যাতার উপসম যে হয়, তা বলচে পরিসংখ্যান।
৩। আকুপাংচার
চিনার এই প্রাচীন বিদ্যা রিউমাটয়েড আর্তারাইটিসের ব্যাথা কমাতে খুবই কার্যকরী। ব্যাথার জায়গায় বা প্রেসার পয়েন্টে সূচ ফুটিয়ে স্নায়ুকে শিথিল করা হয়। তাতে ব্যাতার উপসম হয়।
৪। অ্যারোমাথেরাপি
সুগন্ধ সরাসরি শরীরের ব্যাথা কমাতে পারে না। কিন্তু মন ভালো করার ক্ষেত্রে সুগন্ধের বড় ভূমিকা আছে। মন ভালো থাকলে, ব্যাথার অনুভূতি কিছুটা হলেও কমে। তাই এসেনশিয়াল অয়েল বা অন্য সুগন্ধি তেল মাসাজের তেলের সঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করলে মন ভালো হয়, মুড ভালো হয়। কাটা জায়গায় এই তেল কোনওভাবেই লাগাবেন না।
৫। ব্যায়াম
রিউমাটয়েড আর্থারাইটিস থাকলে যে কোনও মানুষের পক্ষেই নড়াচড়া অসম্ভব। কিন্তু এটা মোটেও ভালো কথা নয়। কারণ নড়াচড়া কমে গেলে এই ধরনের আর্থারাইটিস বাড়বে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে কিছু যোগাসন বা ব্যয়াম করতে হবে। তাতে ব্যাথার এলাকার পেশিতন্তুর ফ্লেক্সিবিলিটি বা নমনীয়তা বাড়বে।
৬। মাসাজ
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে বা রিউমাটয়েড আর্থারাইটিস সম্পর্কে জানেন পেশাদারকে দিয়ে মাসাজ করাতে পারেন। তাতে এই ব্যাতার পরিমাণ কমে। মাসাজ থেরাপিস্টরা আপনার সমস্যা বুঝে এগোবেন।
৭। সাপ্লিমেন্ট
বাজারে নানা ধরনের সাপ্লিমেন্ট পাওয়া যায়। কিন্তু তার কোনটা কতটা নিরাপদ আপনি জানেন না। বিশেষজ্ঞদের মধ্যেও এ নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। তাই মেডিকেটেড সাপ্লিমেন্টের দিকে না এগিয়ে প্রাকৃতিক ভাবে চিকিৎসা করতে পারেন। খাবারে কাঁচা হলুদের পরিমাণ বাড়াতে পারেন। তাতে এই ব্যাতার পরিমাণ কমবে।