Just In
ক্যাভিটি থেকে মুক্তি পেতে চান? জেনে নিন দশটি ঘরোয়া উপায়
দাঁতের সমস্যায় আমরা কম বেশি সকলেই ভুগি। পোকা হওয়া, মাড়ির সমস্যার পাশাপাশি দাঁতের আরও এক সমস্যা হল ক্যাভিটি। বাচ্চা, বয়স্ক অনেকের দাঁতেই দেখা যায় ছোট ছোট গর্ত। দাঁতের শক্ত জায়গায় ছোট গর্ত হয়, এগুলোকে ক্যাভিটি বলে। এটি ব্যাকটিরিয়ার কারণে হয়ে থাকে। প্রতিবার খাবার খাওয়ার পর আমরা অনেকেই দাঁত পরিষ্কার করি না, ভালভাবে মুখ ধুই না। এর ফলে দাঁতের মধ্যে খাবার জমতে থাকে।
সারাদিনের খাবার ও পানীয় থেকে খাদ্যের খুব ছোট ছোট কণা দাঁতের মধ্যে জমা হতে থাকে, ফলে দাঁতে ব্যাকটিরিয়া হতে শুরু করে। এই ব্যাকটিরিয়া থেকেই প্লাক নামক একটি পুরু স্তর তৈরি হয় দাঁতে। এই স্তরটি আমাদের দাঁতে ক্ষয় সৃষ্টি করে। স্ট্রেপ্টোকোকাস মিউট্যানস নামক এক ধরনের ব্যাকটিরিয়া, যা সব থেকে বেশি ক্ষতি করে দাঁতের।
যে জায়গাগুলোয় সব থেকে বেশি ক্যাভিটি হয় -
দাঁতের মধ্যে ফাটল, খাঁজ
দাঁতের মাঝখানে
দাঁতের ফিলিংয়ের আশেপাশে
মাড়ির কাছাকাছি
শুরুতেই ক্যাভিটির চিকিৎসা না করা হলে ক্ষয় বাড়তে শুরু করে। দাঁতের ভিতরের স্তরে পৌঁছায়, যাকে ডেন্টিন বলে। ক্যাভিটি হচ্ছে বুঝতে পারলে সময় নষ্ট না করে চিকিৎসা শুরু করুন। ক্যাভিটি প্রাথমিক স্তরে থাকলে বাড়িতেই সারিয়ে তুলতে পারেন। জেনে নিন সহজ পদ্ধতিগুলি।
১) সুগার ফ্রি চিউইং গাম
খাবারের পর সুগার ফ্রি গাম চিবোলে এনামেল পুনরায় তৈরি হবে। গবেষণায় দেখা গেছে, গামে থাকে জাইলিটল যা লালা প্রবাহকে উদ্দীপিত করতে পারে, প্লাক-এর পিএইচ বাড়াতে এবং এস. মিউটানস হ্রাস করে। সুগার ফ্রি গামে casein phosphopeptide-amorphous calcium phosphate (CPP-ACP) নামে একটি যৌগ থাকে, যা এস. মিউটানস কমাতে জাইলিটলযুক্ত চিউইং গামের থেকে বেশি ভালো কাজ করে!
২) ভিটামিন ডি
আপনি যে খাবার খাচ্ছেন তা থেকে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস সংগ্রহ করতে সাহায্য করে ভিটামিন ডি। গবেষণায় দেখা গেছে, ভিটামিন ডি ক্যাভিটির সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে!
৩) ফ্লুরাইড টুথপেস্টের ব্যবহার
ফ্লুরাইড ক্যাভিটির সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে এবং দাঁতের এনামেল রক্ষা করতে দারুন কাজ করে। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন ফ্লুরাইড টুথপেস্ট দিয়ে দাঁত মাজলে ক্যাভিটি হয় না।
৪) মিষ্টি খাবার কম খাওয়া
মিষ্টি জাতীয় খাবার বেশি খাওয়া বন্ধ করুন। মিষ্টি জাতীয় জিনিস দাঁতের সব থেকে বেশি ক্ষতি করে, এটা আমরা সবাই শুনেছি। তাই ক্যাভিটি থেকে বাঁচতে মিষ্টি জিনিস থেকে দূরে থাকতে বলেন চিকিৎসকরা।
৫) তেল লাগানো
তেল লাগালে ক্যাভিটি থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। তিল বা নারকেল তেল ১০ মিনিটের মতো দাঁতে লাগিয়ে রাখুন। তারপর কুলকুচি করে ধুয়ে ফেলুন। ক্লিনিকাল ট্রায়ালে দেখা গেছে, তিলের তেল দিয়ে এটা করলে প্লাক, জিঞ্জিভাইটিস এবং মুখের ব্যাকটেরিয়া কমায়!
৬) লবঙ্গ
ক্যাভিটি সারাতে লবঙ্গ দারুন উপকারি। এর মধ্যে থাকা অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি এবং অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান ক্যাভিটি ছড়াতে দেয় না।
৭) রসুন
কাঁচা রসুন খেলে ক্যাভিটি থেকে মুক্তি পাবেন। এতে থাকা অ্যান্টি-ফাংগাল এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করে।
৮) নুন জল
দাঁতের সমস্যায় খুব সাধারণ একটা ঘরোয়া প্রতিকার হল নুন জল। এটা মুখের ভিতরে ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে দেয় না, ক্যাভিটি সারিয়ে তোলে। নুন জল অ্যাসিড সরিয়ে আমাদের মুখে পিএইচ স্তরকে নিরপেক্ষ করে।
৯) লেবু
ভিটামিন সি সমৃদ্ধ লেবু জীবাণু মারতে সাহায্য করে। ক্যাভিটি থেকে যন্ত্রণা হলে সেটাও সরিয়ে তোলে লেবু। মুখে এক টুকরো লেবু নিয়ে চিবোতে থাকুন। তারপর পরিষ্কার জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নিলেই হবে।
১০) নিম
নিম কাঠি দিয়ে অনেকেই দাঁত মাজেন, এটি দাঁত ভালো রাখে। নিমে থাকা ফাইবার দাঁতে প্লাক হতে দেবে না। কয়েকটা নিম পাতা চিবিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। তেতো স্বাদের জন্য নিম অনেকে পছন্দ না করলেও এটা ক্যাভিটি সারানোর মহৌষধ!