Just In
গেঁটে বাতের জন্য কিছু ঘরোয়া প্রতিকার
আপনি কি আপনার মাকে গেঁটে বাত ভুগতে দেখেছেন? আপনি নিশ্চই দেখে থাকবেন যন্ত্রণার সাথে তার লড়াই। গেঁটে বাত আসলে একধরনের আর্থারাইটিস, যা কিনা দেহে অতিরিক্ত পরিমান ইউরিক অ্যাসিড জমা হওয়ার ফলে হয়ে থাকে।
ইউরিক অ্যাসিড একধরনের টক্সিন না অধিবিষ যা আসলে প্রাকৃতিক বর্জ্য; এবং যদি এই বর্জ্য আপনার দেহে জমা হতে থাকে, তবে তা সাংঘাতিক পরিমান ব্যাথার সৃষ্টি করে। গেঁটে বাতে উপশমের চিকিৎসা হিসাবে, আপনাকে দেহে ইউরিক অ্যাসিডের লেভেল কিভাবে কন্ট্রোলে রাখা যায় তা জানতে হবে।
ইউরিক অ্যাসিড যখন আপনার দেহে জমা হয় তখন তা কেলাস বা ক্রিস্টাল আকারে সঞ্চিত হয়, যা কিনা প্রচণ্ড ব্যাথার কারণ হয়। যদি আপনার দেহ ঐ ইউরিক অ্যাসিডের ক্রিস্টালগুলি কে দেহ থেকে বের করে দিতে সক্ষম না হয় তবে তা জমা হতে থাকে এবং হাত-পা ও জয়েণ্টে ফোলাভাব সৃষ্টি করে।
মূলত, ইউরিক অ্যাসিডের ক্রিস্টালগুলি, শরীরের জয়েন্টের যেখানে লুব্রিকেটিং ফ্লুইড থাকে, সে জায়গাগুলিকে আটকে দেয়। যখন ঐ লুব্রিকেটিং ফ্লুইডগুলি চলাচলের জায়গা না পেয়ে আটকে পরে, আপনার অংগ-প্রত্যঙ্গগুলি তখন অনমনীয় হয়ে পরে ও ফুলে ওঠে, এবং আপনি দুঃসহ যন্ত্রণার সম্মুখীন হন।
গাউট বা গেঁটে বাতের ব্যাথা জন বিশেষে আলাদা হয়। কিছুক্ষেত্রে আপনি হয়তো ফোলাভাব ও লাল হয়ে যাওয়া দেখবেন। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে, আপনি হয়তো তেমন কোন উপসর্গ খালি চোখে দেখতে পাবেন না অথচ ভয়ঙ্কর ব্যাথা অনুভূত হবে, এমনকি শুধুমাত্র সামান্য ছোঁয়া লাগলেও।
চিন্তা করবেন না। আপনি ঘরে বসেই, গেঁটে বাতের উপশমে বিভিন্ন ঘরোয়া প্রতিকার ব্যবহার করতে পারবেন। এর জন্য অবশ্যই আপনাকে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে এবং তার উপদেশ অনুযায়ী চলতে হবে।
আরো বিস্তারে জানতে পড়ুন।
১. অ্যাপেল সীডার ভিনিগার এবং জলঃ এই মিশ্রণটি গেঁটে বাতের উপশম করে। এই দুটি উপকরণের মিশ্রণ বানিয়ে দিনে তিনবার তা সেবন করুন। অথবা, গরম জলে অ্যাপেল সীডার ভিনিগার মিশিয়ে সেই জলে তুলোর প্যাড ভিজান ও তা দিয়ে জয়েন্টগুলোতে সেক দিন।
২. ভেজিটেবল জুসঃ গেঁটে বাত নিরাময়ে বীট, শসা এবং গাজর খুবই কার্যকরী। আপনি যে কোন একটি সব্জির জুস বা সবকটি সব্জির জুস একসাথে মিশিয়ে দিনে দুইবার খেতে পারেন।
৩.তেলের মিশ্রণঃ আপনার কাছে যদি এসেন্সিয়াল ওয়েল থাকে তবে তা গেঁটে বাতের ব্যাথা নিরাময়ে সক্ষম। ১৫ ফোঁটা ক্যামোমাইল ওয়েলের সাথে সমপরিমান ফ্র্যাংকিনসেন্স ওয়েল ও ৫ ফোঁটা পিপারমেন্ট ওয়েল মেশান। এবার এই তেলের মিশ্রণটি দিয়ে জয়েন্টে মালিশ করুন।
৪. আরেকটি এসেন্সিয়াল মিশ্রণঃ এক্ষেত্রে আপনার চাই, ল্যাভেন্ডার, রোজমেরি, মারজোরাম এবং দুই আউন্স তেল। এক্ষেত্রে অ্যারগন, নারকেল বা তিলের তেল ব্যবহার করতে পারেন। এবার সব উপকরণ একসাথে মিশিয়ে নিন। আপনি এই মিশ্রণটি বানিয়ে রেখেও দিতে পারেন। ব্যবহারে আগে ভালকরে ঝাঁকিয়ে নেবেন। এই মিশ্রনটি যে গেঁটে বাত নিরাময়ক তা প্রমানিত।
৫. আপেল খানঃ আপেল পরিপূর্ণ ম্যালিক অ্যাসিডে, যা কিনা স্পষ্টরূপে দেহ থেকে ইউরিক অ্যাসিড কমাতে সক্ষম। আপনি রোজ একটি আপেল খেতে পারে অথবা একটি আপেল সেদ্ধ করে, মলমের মতো করে প্রভাবিত জায়গাতে লাগাতে পারেন।
৬. কলাকে ভুলে যাবেন নাঃ গেঁটে বাতের অসহ্য বযাথা থেকে নিস্তার পেতে আপনাকে দিনে ২-৩ টি কলা খেতে হবে। গেঁটে ব্যাথার জন্য এটি সহজ একটি ঘরোয়া প্রতিকার, যা কিনা মালিশ বা প্রয়োগ করার প্রয়োজন নেই।
৭. ফ্রেঞ্চ বিনসঃ এক থেকে দুই মাস ফ্রেঞ্চ বিনসের জুস খেলে আপনি গেঁটে বাতকে সহজেই বিদায় জানাতে পারেন। বিশেষজ্ঞদের বলেন যে ফ্রেঞ্চ বিনসের জুস যে শুধু গেঁটে বাতের ব্যাথা নিরাময় করে তাই নয় এই জুস একমাসের মধ্যে এই অবস্থা থেকে আপনাকে সারিয়ে তোলে।
তাই যারা গাউট বা গেঁটে বাতের ব্যাথায় ভুগছেন তাদের সাথে এই ঘরোয়া প্রতিকারগুলি শেয়ার করে গেঁটে বাত নিরাময়ে সাহায্য করুন।