Just In
- 2 hrs ago প্রচণ্ড গরমে শরীর ঠাণ্ডা রাখতে খান সুপারফুড চিয়া সিড!
- 4 hrs ago কাঠফাটা গরমে শরীরে জলের ঘাটতি পূরণ করবে এই ফলগুলি!
- 6 hrs ago নতুন কাজে সাফল্য বৃষ ও কর্কটের, ৫ রাশির জন্য শুভ আজকের দিন, জানতে দেখুন রাশিফল
- 22 hrs ago অতিরিক্ত দই, বিস্কুট খাচ্ছেন? আপনার ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়াতে পারে, সতর্ক থাকুন
World Environment Day 2023: সাবধান! বায়ু দূষণেই মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে পরিবেশের, জানুন বাঁচার উপায়
World Environment Day 2023: প্রকৃতির গুরুত্ব মানুষকে স্মরণ করিয়ে দিতে, প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে ৫ জুন 'বিশ্ব পরিবেশ দিবস' পালিত হয়। এই দিনটি পালনের মাধ্যমে, পরিবেশ সম্পর্কে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং পরিবেশ রক্ষায় মানুষকে উৎসাহিত করা হয়। আমরা প্রত্যেকেই জানি যে, পরিবেশের ধ্বংসের সাথেই প্রাণী জগতের ধ্বংস জড়িয়ে। তাই প্রাণ বাঁচাতে চাইলে, পরিবেশ বাঁচানো খুবই প্রয়োজন।
আজকের যুগে পরিবেশ দূষণের মাত্রা ক্রমবর্ধমান। দূষণের মধ্যেই রোজ শ্বাস নিচ্ছি আমরা। দূষণ, ধীরে ধীরে মানবজাতিকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে। বায়ু দূষণ বৃদ্ধির ফলে স্বাস্থ্যের ক্ষতি, পরিবেশ এবং সম্পদও নষ্ট হচ্ছে। শিল্প, যানবাহন, জনসংখ্যার বৃদ্ধি এবং নগরায়ন বায়ু দূষণের কয়েকটি প্রধান কারণ। এখনই যদি মানুষ এনিয়ে সচেতন না হয়, তাহলে বিপদ আরও বাড়বে। আসুন জেনে নেওয়া যাক, বায়ু দূষণের ফলে প্রাণীজগত ও পরিবেশের কী কী ক্ষতি হচ্ছে। রইল এর থেকে বাঁচার কিছু টিপস।
১) গ্লোবাল ওয়ার্মিং
পরিবেশবিদ এবং বিজ্ঞানীদের আজ সবচেয়ে বড় চিন্তার কারণ হল, গ্লোবাল ওয়ার্মিং। গ্লোবাল ওয়ার্মিং হল গ্রীন হাউস এফেক্টের সরাসরি প্রভাব, যার ফলে বায়ুমন্ডলে CO2 এবং মিথেনের পরিমাণ অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। এগুলি বেশিরভাগই শিল্পের মাধ্যমে উৎপাদিত হয়।
২) জলবায়ুর পরিবর্তন
গ্লোবাল ওয়ার্মিং-এর আরেকটি প্রভাব হল, জলবায়ুর পরিবর্তন। যে হারে পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে, স্বাভাবিক জলবায়ু চক্রের মধ্যে ব্যাঘাত ঘটছে। এই জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মেরু অঞ্চলের হিমবাহ ও বরফ স্তর গলে যাচ্ছে, ফলে বন্যা দেখা দিচ্ছে এবং সমুদ্রের স্তরও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
৩) অ্যাসিড বৃষ্টি
শিল্পাঞ্চল, বিদ্যুৎ কেন্দ্র, বয়লার, জ্বালানি এবং বিভিন্ন যানবাহন থেকে নির্গত গ্যাসগুলি অত্যন্ত বিষাক্ত প্রকৃতির হয়। কলকারখানা, যানবাহন থেকে বাতাসে সালফার ডাই অক্সাইড, নাইট্রোজেন অক্সাইড নির্গত হয়। বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইড, সালফার ডাই অক্সাইড এবং নাইট্রোজেন অক্সাইড এর মাত্রা বেড়ে গেলে, জলীয় বাষ্পের সঙ্গে বিক্রিয়ায় সালফিউরিক অ্যাসিড এবং নাইট্রিক অ্যাসিড উৎপন্ন করে। জলের সঙ্গে ওই অ্যাসিড মিশে বৃষ্টির মাধ্যমে নেমে এলে তাকে অ্যাসিড বৃষ্টি বলা হয়।
৪) ধোঁয়াশা
কুয়াশা এবং ধোঁয়ার সংমিশ্রণে তৈরি হয় ধোঁয়াশা। ধোঁয়াশা বা স্মোগ সাধারণত দুই ধরনের হয় - সালফিউরাস স্মোগ এবং ফটোকেমিক্যাল স্মোগ, উভয়ই পরিবেশ এবং স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর। মূলত অনেক শিল্পে কয়লা ব্যবহারের কারণে সালফিউরাস স্মোগের উৎপত্তি হয়।
৫) প্রাণী প্রজাতির বিলুপ্তি
মেরু অঞ্চলের বরফ গলে যাওয়া এবং সমুদ্রের স্তর বাড়ার সাথে সাথে, অনেক প্রাণী প্রজাতির অস্তিত্ব আজ হুমকির সম্মুখীন। স্রোতে পরিবর্তন, সমুদ্রের তাপমাত্রার পরিবর্তন, পরিযায়ী চক্রের পরিবর্তন, বনজঙ্গল ধ্বংস, এই সব কারণে আজ অনেক প্রাণীই অজানা পরিবেশে, খাদ্যের সন্ধানে যেতে বাধ্য হচ্ছে। এমনকি অনেক বন্য প্রজাতির আচরণে ভারসাম্যহীনতাও লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
৬) শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা
এটি সম্ভবত মানুষের জন্য, সবচেয়ে বড় উদ্বেগজনক প্রভাব। বায়ুদূষণের ফলে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা, অ্যালার্জি, কাশি, হাঁপানি এবং ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে। বায়ুতে থাকা বিষাক্ত গ্যাসগুলি, শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে ফুসফুস ও শরীরের অন্যান্য অঙ্গগুলিতে ছড়িয়ে পড়ে এবং সরাসরি প্রভাব ফেলে। এমনকি অক্সিজেনের সমস্যার কারণে কার্ডিওভাসকুলার সমস্যার জন্ম হয়।
৭) ত্বকের উপর ক্ষতিকারক প্রভাব
ওজোন স্তর সূর্যের ক্ষতিকারক অতিবেগুনী রশ্মি থেকে পৃথিবীকে রক্ষা করে। তবে আজ ওজন স্তর ক্ষয়ের ফলে, অতিবেগুনি রশ্মি পরিবেশে ছড়িয়ে পড়ছে এবং সরাসরি ত্বকের উপর প্রভাব সৃষ্টি করছে। ফলে নানা ধরনের ত্বকের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। ত্বকের বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক হল, স্কিন ক্যান্সার।
বায়ুদূষণ কমানোর উপায়
যদি এই সবকিছু বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তবে বায়ুদূষণের ক্ষতিকারক প্রভাবগুলি পরিবেশ ধ্বংসের দিকটিকে আরও প্রশস্ত করে তুলবে। তাই, আপনার ছোট্ট পদক্ষেপ পরিবেশকে অনেকটাই রক্ষা করতে পারে। বায়ুদূষণ কমাতে কিছু নিয়ম মেনে চলতে পারেন।
১) ইলেকট্রিক্যাল সরঞ্জাম কম ব্যবহার করুন, এর মাধ্যমে বিদ্যুৎ শক্তি বাঁচানো যাবে। যতটা সম্ভব লাইট, ফ্যান, টিভি, ফ্রিজ, এসি বন্ধ করে রাখুন।
২) কাঠের উনুনের ব্যবহার করা বন্ধ করুন। কারণ এর থেকে নির্গত ধোঁয়া বায়ুর সঙ্গে মিশে আমাদের স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে।
৩) গাড়ির সংখ্যা যত বাড়ছে, ততই বেড়ে চলেছে দূষণ। যানবাহন থেকে নির্গত ধোঁয়া বায়ুর সঙ্গে মিশে দূষণ বাড়িয়ে তুলছে। তাই যানবাহনের ব্যবহার যতটা কম করা যায় ততই ভালো। দূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে সাইকেল ব্যবহার করতে পারেন।
৪) গ্লোবাল ওয়ার্মিং ও বায়ু দূষণের কারণে বাস্তুতন্ত্র প্রভাবিত হচ্ছে। ফলে গাছপালা, প্রাণী জগতের উপর খারাপ প্রভাব পড়ছে। তাই বাস্তুতন্ত্রকে সুস্থ রাখার বিষয়ে জোর দিন।
৫) বৃক্ষরোপণ করুন এবং বনসৃজনের দিকে নজর দিন।
৬) নির্বিচারে গাছ কাটা এবং বন-জঙ্গল ধ্বংস করা বন্ধ করুন।
৭) বাড়ি-ঘর পরিষ্কার করতে কেমিক্যাল যুক্ত সামগ্রীর ব্যবহার কম করুন। পরিবর্তে ঘরোয়া জিনিস ব্যবহার করতে পারেন। কীটনাশকের ব্যবহারও কম করা উচিত। বাড়িতে মাকড়সা, টিকটিকি, মশা, আরশোলা বা পোকামাকড় মারার জন্য কেমিক্যাল যুক্ত স্প্রে ব্যবহারের পরিবর্তে, ঘরোয়া উপায়ে তৈরি সামগ্রী দিয়ে পোকামাকড় তাড়াতে পারেন।
৮) প্লাস্টিকের বোতল-বালতি, কাঁচের জিনিস, খবরের কাগজ ফেলে না দিয়ে, সেগুলি পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তুলতে পারেন। এর ফলে আবর্জনা জমে দূষণ ছড়াবে না।
৯) যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলবেন না। নির্দিষ্ট জায়গায় ময়লা ফেলুন।