Just In
Don't Miss
World Disability Day : আপনার সন্তান কি সবসময় চোখ পিটপিট করে? ট্যুরেট সিনড্রোমে আক্রান্ত নয় তো?
ট্যুরেট সিনড্রোম এক ধরনের বহুমুখী স্নায়বিক ডিজঅর্ডার। সাধারণত ৬, ৮ বছরের বাচ্চাদের মধ্যে রোগের লক্ষণগুলি ফুটে উঠতে শুরু করে। যাদের পারিবারিক ইতিহাসে ট্যুরেট সিনড্রোম রয়েছে, তাদের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। আর, পুরুষদের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় তিন থেকে চার গুণ বেশি। এখনও এই রোগের উপসর্গ বা চিকিৎসা সম্পর্কে মানুষের মধ্যে ধারণার অভাব রয়েছে।
এই রোগের প্রধান উপসর্গ মুদ্রাদোষ বা টিক্স। কিন্তু টিক্স থাকা মানেই সেটা ট্যুরেট সিনড্রোম নয়। ট্যুরেট সিনড্রোমে মূলত দু'ধরনের টিক্স দেখা যায় - মোটর টিক্স এবং ভোকাল টিক্স।
মোটর টিক্স
চোখ পিটপিট করা, কাঁধ ঝাঁকানো, নাক কাঁপানো, বারবার জিভ বার করা, বারবার ভ্রু উঁচু করা, আঙুল মটকানো, হাত মুঠো করা, লাথি মারা, নাক দিয়ে ফোঁস ফোঁস আওয়াজ করা - এগুলি মোটর টিক্স বলে গণ্য হয়।
ভোকাল টিক্স
গলা খাঁকারি দেওয়া, নাক সিটকানো, কাশি, গলা দিয়ে বিভিন্ন ধরনের আওয়াজ করা, বারবার ঢেকুর তোলা, শিস দেওয়া - এগুলি ভোকাল টিক্সের মধ্যে পড়ে। এই সমস্যা বাড়াবাড়ি হলে রোগী নিজের মনে গালিগালাজও করতে পারেন। টিক্সের তীব্রতা সময় বিশেষে কমতে বা বাড়তে পারে। এটি ৩০ শতাংশেরও কম রোগীদের মধ্যে দেখা যায়।
কাদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি?
ট্যুরেট সিন্ড্রোমের সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ হল টিক্স। এই রোগ সাধারণত ১৮ বছর বয়সের আগেই দেখা যায়। ৫-১০ বছরের বাচ্চাদের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এই টিক্সগুলি দিনে অনেকবার ঘটে, প্রায় প্রতিদিন এবং এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলতে থাকে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বয়স বাড়ার সাথে সাথে উপসর্গগুলি ধীরে ধীরে হ্রাস পায়।
ট্যুরেট সিন্ড্রোম নির্ণয়
ট্যুরেট সিন্ড্রোম নির্ণয়ের জন্য কোন ল্যাব বা ইমেজিং পদ্ধতি নেই। এই রোগ ক্লিনিক্যালি নির্ণয় করা হয়। এই রোগের ডায়গনোসিস হয় মূলত রোগের ইতিহাস শুনে এবং রোগীকে দেখে। ট্যুরেট সিনড্রোম মানেই রোগীর টিকস থাকবে। মূলত ৪টি বিষয়ের উপরে এই রোগ নির্ণয় নির্ভর করে। এই ৪টি লক্ষণ থাকলে তবেই গণ্য হবে রোগীর ট্যুরেট সিনড্রোম আছে।
১) ব্যক্তির বয়স ১৮-র নীচে হবে।
২) মোটর এবং ভোকাল টিক্সের একাধিক উপসর্গ থাকবে।
৩) টিক্স দেখা দেওয়ার পরে এক বছর অবধি উপসর্গগুলি থাকবে।
৪) রোগীর টিক্সের কারণ কোনও ওষুধ বা অন্য কোনও নার্ভের অসুখ নয়।
ট্যুরেট সিনড্রোমে আক্রান্তদের মধ্যে যে যে ডিজঅর্ডার দেখা যায়
১) অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপারঅ্যাকটিভিটি ডিজঅর্ডার (ADHD), ট্যুরেট সিন্ড্রোমের ৬০ শতাংশ রোগীর মধ্যে দেখা যায়। এর লক্ষণ হল - বিভ্রান্তি, অমনোযোগিতা এবং হাইপারঅ্যাক্টিভিটি।
২) অবসেসিভ-কম্পালসিভ ডিজঅর্ডার (OCD), ট্যুরেট সিনড্রোমে আক্রান্ত ২০ শতাংশ রোগীর মধ্যে ঘটে।
৩) ১০ শতাংশ রোগীর মধ্যে ডিপ্রেশনের মতো মুড ডিসঅর্ডার দেখা যায়।
৪) ট্যুরেট সিনড্রোমের অন্যান্য মানসিক ব্যাধি হল, স্ব-আঘাতমূলক আচরণ এবং উদ্বেগ।
চিকিৎসা
এই রোগের চিকিৎসায় কাউন্সেলিংয়ের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। প্রফেশনাল কাউন্সেলিংয়ের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। বেশ কিছু ওষুধও দেওয়া হয় এই রোগে। রোগের অবস্থা দেখে ওষুধ দেন চিকিৎসকরা। তবে যত কম ওষুধ প্রয়োগ করে রোগীকে ভাল রাখা যায়, সেই চেষ্টা করা হয়।