Just In
National Nutrition Week : চাকুরিজীবি মহিলা ও শিশুদের স্বাস্থ্যের জন্য রইল কিছু পরামর্শ
স্বাস্থ্য ও সুস্বাস্থ্যের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা প্রদান করার জন্য প্রতি বছর ১ সেপ্টেম্বর থেকে ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পালন করা হয় 'জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ'। এই অভিযানের লক্ষ্য হল পুষ্টি ও স্বাস্থ্য সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করা। কারণ, সুস্বাস্থ্য ও সুন্দর জীবনযাপনের জন্য অবশ্যই পুষ্টির প্রয়োজন। আর এই অভিযানের অনন্য প্রধান দিক অপুষ্টিজনিত কারণ প্রতিরোধ করা।
জনগণকে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনে পুষ্টির গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা প্রদান করার জন্য ১৯৮২ সালে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে এই অভিযান শুরু হয়েছিল। অপুষ্টি হল এমনই এক বিশেষ স্বাস্থ্য-সমস্যা যা বেশিরভাগই উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ঘটে থাকে।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যারা চাকুরিজীবি মহিলা তারাও অনেকেই অপুষ্টিতে ভোগেন। কারণ, তারা কাজের পাশাপাশি পারিবারিক দায়িত্বগুলির ভারসাম্য বজায় রাখতে গিয়ে তাদের নিজেদের শরীরের দিকে খেয়াল রাখতে পারেন না। ফলে, বেশিরভাগ মহিলার পক্ষে নিজের খাদ্য, ওজন এবং স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রাখা কঠিন হয়ে যায়। চাকুরিজীবি মহিলাদের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে এখানে কিছু টিপস দেওয়া হল-
১) পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার শক্তি সরবরাহ করে এবং রোগের ঝুঁকি কমায়। কী কী খেলে আপনার শরীরে পুষ্টি বাড়বে সে সম্পর্কে এখানে বলা হল-
ক) সিম, মসুর ডাল, তোফু, মাছ, মাংস, বাদাম এবং বীজ জাতীয় খাবার খাওয়া উচিত।
খ) সতেজ শাকসবজির খাওয়া উচিত।
গ) প্রচুর পরিমাণে ফল খাওয়া উচিত।
ঘ) রুটি, ওটস, ব্রাউন রাইস, দুধ,দই খাওয়া উচিত।
২) ক্যালোরি সম্পর্কে সচেতন হওয়া উচিত। সাধারণত বেশিরভাগ মহিলাদের শরীরে ফ্যাটের পরিমাণ বেশি থাকে। মহিলাদের ওজন সঠিকভাবে বজায় রাখতে এবং অ্যাকটিভ থাকতে কিছুটা ক্যালোরির প্রয়োজন।
৩) আমরা সকলেই জানি যে ব্যায়াম আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কাজের জন্য সারাদিন বসে থাকা আপনার মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে। স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে, দীর্ঘক্ষণ বসে থাকলে ডায়াবেটিস, হৃদরোগ এমনকি ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে। এরজন্য যখনই সময় পাবেন তখনই হাঁটাচলা করুন।
৪) বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে ধ্যান বা মেডিটেশন আমাদের শরীর সুস্থ রাখে এবং আমাদের সতেজ করে ও বিষণ্ণতা কমায়। অতএব, মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করতে প্রতিদিন কিছুক্ষণ ধ্যান করুন।
৫) গবেষণায় দেখা গেছে যে, মহিলারা দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করার সময় ধূমপান বা অতিরিক্ত পরিমাণে ক্যাফিন পান করার ফলে পুরুষদের তুলনায় বেশি স্বাস্থ্য সমস্যায় ভোগে। সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, মানসিক চাপের কারণে মানুষ অস্বাস্থ্যকর খাবার খেতে বেশি পছন্দ করে।
৬) বাইরের খাবার খাওয়া কমিয়ে ঘরের খাবার খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো।
প্রতিদিনের শারীরিক ক্রিয়াকর্ম ও পুষ্টিকর খাদ্যের মেলবন্ধনের ফলেই সুস্বাস্থ্য গড়ে ওঠে। একটি সুস্থ পুষ্টি-সম্পন্ন শিশু বা পর্যাপ্ত পুষ্টি-সম্পন্ন মানুষ তুলনামূলকভাবে বেশী ভালো শিখতে পারে এবং বেশী সৃজনশীল। স্বল্প পুষ্টির কারণে শরীরের অনাক্রম্যতা কমে যেতে পারে, দুর্বলতা বাড়তে পারে, শারীরিক ও মানসিক বিকলঙ্গতা বাড়তে পারে এবং যেকোনও ধরণের উৎপাদন ক্ষমতা কমে যেতে পারে।
সারা বিশ্বের মধ্যে শুধুমাত্র ভারতেই প্রচুর শিশু আছে যারা অপুষ্টিতে ভুগছে এবং প্রতিদিনই অনেক শিশু অপুষ্টির শিকার হয়ে মারা যাচ্ছে। মানব স্বাস্থ্য ও প্রগতিতে অপুষ্টির বিরূপ প্রভাব রয়েছে। এতে জাতীয় উৎপাদন ক্ষমতা ও আর্থিক স্বচ্ছলতার হ্রাস ঘটে।
আমাদের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে পুষ্টি নানাভাবে সাহায্য করে। তাই, আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্যই হলো অপুষ্টি থেকে শিশুদেরকে বাঁচানো। শিশু-স্বাস্থ্যের দিকে নজর রাখতে যে বিষয়গুলোর উপর গুরুত্ব দেওয়া উচিত-
১) শিশুকে সঠিক সময়ে মাতৃদুগ্ধ পান করানো উচিত।
২) ৬ মাস বয়স থেকে শিশুকে কঠিন জাতীয় পরিপূরক খাদ্য খাওয়ানো প্রয়োজন।
৩) সঠিক ও নিরাপদ পদ্ধতিতে শিশুর খাদ্য প্রস্তুত করা প্রয়োজন।
৪) শিশুর সুস্বাস্থ্যের জন্য স্বাস্থ্যকর পরিবেশকে গুরুত্ব দিতে হবে।
৫) ৬-৮ মাস বয়সে দৈনিক ২-৩ বার , ৯-১১ মাস বয়সে ৩-৪ বার, ১২-২৪ মাস বয়সে ১-২ বার দৈনিক পরিপূরক পুষ্টিকর খাবার শিশুকে খাওয়ান।