Just In
- 2 hrs ago মসুর ডাল খেতে ভালোবাসেন? কিন্তু অতিরিক্ত খেলে হতে পারে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া!
- 3 hrs ago অনলাইন গেমে বাচ্চারা ঘরকুঁনো! জানেন কি স্বাস্থ্যের জন্য় কতটা উপকারি আউটডোর গেম?
- 3 hrs ago সূর্যগ্রহণের সময় ঘটবে মা দুর্গার আগমন, তবে কি গ্রহণকালে পড়বে মায়ের পূজায় বাধা?
- 18 hrs ago ত্বকের জেল্লা ফেরাতে ম্যাজিকের মত কাজ করবে চালের জল, কীভাবে দেখুন
চটজলদি ওজন কমাতে বন্ধুত্ব পাতান কলার সঙ্গে!
শরীর এবং খাবার নিয়ে জাপানিরা খুব সচেতন হন। ইন্টারনেট ঘেঁটে দেখবেন বিশ্বের এই প্রান্তের মানুষেরা এমন কোনও খাবার সচরাচর মুখে তোলেন না, যা থেকে শরীরের ক্ষতি হতে পারে। তাই তো শরীর সম্পর্কিত যে কোনও বিষয়ে জাপানিদের দেখানো পথ অনুসরণ করা যেতেই পারে। যেমন ধরুন, সম্প্রতি বেশ কয়েকজন জাপানি চিকিৎসক বিশেষ এক ধরনের ডায়াটের পক্ষে সাওয়াল করতে শুরু করেছেন। বিশেষ এই ডায়েটটির নাম দিয়েছেন তারা "বেনানা ডায়েট", অর্থাৎ যে ডায়েটের মেন প্লেয়ার শুধুমাত্র কলা।
কী এই বেনানা ডায়েট? একাধিক গবেষণার পর জাপানি বিজ্ঞানিরা জানতে পেরেছেন ওজন হ্রাসে কলা বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই তো যারা আতিরিক্ত ওজনের সমস্যায় ভুগছেন, তাদের সাহায্যার্থে বিশেষ এক ধরনের ডায়েট চার্ট তৈরি করেছেন তারা। এই ডায়েট চার্ট অনুসারে প্রতিদিন সকালে খেতে হবে শুধু মাত্র কলা আর এক গ্লাস জল। আর কিছুই নয়। তবে বাকি দিন নিজের ইচ্ছা মতো যে কোনও খাবার খাওয়া চলতে পারে। শুধু মিষ্টি জাতীয় খাবার একটু কম খেলেই চলবে। আমি নিশ্চিত যে ওজন কমাতে এমন আজব গোছের ডায়েট সম্পর্কে আগে কখনও শোনেন নি, তাই না? কিন্তু বিশ্বাস করুন এই নিয়মে খাওয়া দাওয়া করলে হাতে নাতে ফল পাওয়া যায়। তাহলে আর অপেক্ষা কেন, যারা অতিরিক্ত ওজনের কারণে চিন্তায় রয়েছেন তারা ঝটপট জেনে নিন জাপানিজ নিয়মানুসারে কীভাবে কলাকে কাজে লাগিয়ে ওজন কমানো যায়।
ওজন কমাতে কলাই কেন?
আসলে এই ফলটিতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় রেজিসটেন্ট স্টার্চ, যা শরীরে প্রবেশ করা মাত্র ওজন কমানোর প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে। ফলে দ্রত ওজন কমতে শুরু করে। শুধু তাই নয়, পেটের মধ্যে থাকা ব্যাকটেরিয়া, এই বিশেষ ধরনের স্টার্চকে "শর্ট চেন ফ্যাট"এ রূপান্তরিত করে দেয়। ফলে ক্ষিদে যেমন কমে, তেমনি নানাবিধ পেটের রোগও দূরে পালায়।
কতগুলি কলা খেতে হবে?
সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রথম কাজই হল ১ গ্লাস গরম জল খাওয়া। এর কম করে ১ ঘন্টা পরে মাত্র ১ টা কলা খেতে হবে। কিন্তু যদি দেখেন একটা কলা খাওয়া ৩০ মিনিট পরেও ক্ষিদে পাচ্ছে, তখন আরেকটি কলা খাওয়া যেতেই পারে। তবে জাপানি বিজ্ঞানীরা কিন্তু সকালে মাত্র ১ টি কলা খাওয়ারই পরামর্শ দিয়েছেন। প্রসঙ্গত, এই ডায়েট চার্ট মেনে খাবার খাওয়ার সময় ভুলেও কিন্তু অ্যালকহল এবং দুধ খাওয়া না।
এই ডায়াটের অন্যান্য উপকারিতা:
১. থাই এবং পশ্চাতদেশের অতিরিক্ত মেদ ঝড়িয়ে ফলতে এই ডায়েটের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে।
২. অ্যালকোহল সেবনের ইচ্ছা কমিয়ে দেয়। সেই সঙ্গে মদ্যপানের কারণে শরীরের অন্দরে যে যে ক্ষতি হয়ে থাকে তার চিকিৎসাও করে থাকে।
৩. কলাতে উপস্থিত ফাইবার এবং পটাশিয়াম শরীরে পুষ্টির ঘাটতি দূর করে। সেই সঙ্গে একাধিক রোগের প্রকোপ কমাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৪. ক্ষিদে কমায়। সেই সঙ্গে মেদ বৃদ্ধির সম্ভাবনাও হ্রাস পায়।
৫. হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটানোর পাশাপাশি বদ-হজম এবং গ্যাস- অম্বলের মতো সমস্যাও দূর করে।
৬. রক্তে যাতে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি না পায়, সেদিকে খেয়াল রাখে। ফলে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা অনেকাংশে হ্রাস পায়।
"বেনানা ব্রকফাস্ট" করতে হবে এই নিয়মগুলি মেনে:
১. বিজ্ঞানিরা একটা মাত্রা কলা খাওয়ার পরামর্শ দিলেও আপনি ৪ টে পর্যন্ত কলা খেতেই পারেন। এক্ষেত্রে ক্ষিদে মিটছে কিনা সেটা গুরুত্বপূর্ণ, কলার পরিমাণ নয়।
২. কলা কাঁচা অবস্থায় খেতে হবে, রান্না করে নয়।
৩. কলা খাওয়ার পাশাপাশি ইচ্ছা হলে অন্য ফলও খেতে পারেন। তবে সকাল বেলা শুধু কলা খেতে হবে।
৪. বেনানা ডায়েট মেনে খাবার খায়ার সময় আরও কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে। যেমন বেশি রাত করে খাওয়া চলবে না। রাতের খাবার ৯ টার মধ্যে সেরে ফলতে হবে।
৫. রাতের বেলা মিষ্টি খাওয়া চলবে না। যদি মিষ্টি খেতে খুব ইচ্ছা করে তাহলে তা খেতে হবে বিকেল বেলায়।
৬. "হারা হাচিবু নি ইশা ইরাজু"- জাপানি এই কথাটার অর্থ হল- আপনি যদি স্টমাকের দশ ভাগের সাত ভাগ খাবার দিয়ে ভর্তি করেন, তাহলে কোনও দিন চিকিৎসকের মুখ দেখতে হবে না। অর্থাৎ সহজ কথায় পেট ভর্তি করে খাবার খাওয়া চলবে না। বরং প্রতিবারই পেটের কিছুটা অংশ খালি রেখে খেতে হবে।
জল ছাড়া আর কিছু নয়:
বেনানা ডায়েট মেনে খাবার খাওয়ার সময় জল ছাড়া আর কোনও ধরনের পানীয় খাওয়া চলবে না। এমনকী দুধও নয়। মনে রাখবেন ঠান্ডা জল খাওয়াও কিন্তু চলবে না।
আরও কিছু নিয়ম:
এমন ডায়েট মেনে চলার সময় বেশি রাত করে শোয়া একেবারেই উচিত নয়। তাই যতটা সম্ভব তাড়াতাড়ি শুয়ে পরার চেষ্টা করবেন। এমনটা করলে ওজন তো কমবেই, সেই সঙ্গে শারীরিক দুর্বলতা এবং নানাবিধ রোগের প্রকোপও হ্রাস পাবে।