Just In
Don't Miss
স্তন্যপান কেন মা ও শিশুর জন্য প্রয়োজনীয়? জেনে নিন এর উপকারিতা
শিশুদের স্বাস্থ্যের উন্নতি ও সময়মতো স্তন্যপান সংক্রান্ত কারণের জন্য প্রতিবছর ১ অগাষ্ট থেকে ৭ অগাষ্ট পর্যন্ত পালন করা হয় আন্তর্জাতিক মাতৃদুগ্ধ পান সপ্তাহ। প্রতিবছরই এই সপ্তাহে বিভিন্ন জায়গায় স্তন্যপান নিয়ে ওয়ার্কশপ হতে দেখা যায়।
অনেক মায়েরই স্তন্যপান করানো নিয়ে অনেক ভুল ধারণা থাকে, অনেকেই শিশুকে স্তন্যপান করাতে চান না, অনেকে সঙ্কোচ বোধও করেন। স্তন্যপানের উপকারিতা সম্পর্কে মায়েদের অবগত করার উদ্দেশ্যে এই ওয়ার্কশপ গুলি হয়ে থাকে। অনেক মায়েরাই ছ'মাসের আগেই শিশুকে কৃত্রিম দুধ বা বাজার চলতি বিভিন্ন খাবার খাওয়াতে শুরু করেন। কিন্তু, এতে তেমন কোনও সুফল পাওয়া যায় না, যা মায়ের দুধ থেকে পাওয়া সম্ভব। বরং অনেক সময় বাইরের খাবার খেলে শিশুর শরীরে নানারকম সমস্যা দেখা দেয়।
শিশুকে স্তন্যপান করানোর উপকারিতা -
১) স্তন্যপান করালে বাচ্চার শরীর ভালো থাকে, সর্দি-কাশি কম হয়।
২) সদ্যজাত শিশু খাদ্য, পানীয়, বিশ্রাম এই সবকিছুর জন্যই মা-এর ওপর নির্ভরশীল। স্তন্যপানের মাধ্যমেই একটি শিশু তার মা-কে চিনতে পারে।
৩) বাচ্চারা স্তন্যপান করলে বিভিন্ন ধরনের অ্যালার্জি থেকে সুরক্ষিত থাকে।
৪) স্তন্যপান বাচ্চার মস্তিষ্ক বিকাশে সহায়তা করে।
৫) বাচ্চার কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকে না, বরং বাইরের দুধ খাওয়ালে এই সমস্যা দেখা দেয়।
৬) স্তন্যপান শিশুর শারীরিক গঠনে সহায়তা করে।
৭) স্টূল ইনফেকশন কম হয়।
সমীক্ষায় দেখা গেছে, মাতৃদুগ্ধ যেমন একটি শিশুকে বেড়ে উঠতে সাহায্য করে, ঠিক তেমনই মায়ের জন্যেও এটি সমানভাবে উপকারি। শিশুর জন্মের পর প্রথম ছ'মাস শুধু স্তন্যপান করালে শিশুর যথাযথ পুষ্টি লাভ করে, তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি হয়। পাশাপাশি, মায়ের ওজন বাড়া বা ফিগার নষ্ট হওয়ার বদলে তাদের ফ্যাট ঝরে অনেক তাড়াতাড়ি। স্তন্যপান করালে মায়েরাও উপকৃত হন। যেমন-
১) গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব মহিলা নিয়মিত তার শিশুকে স্তন্যপান করান তাদের স্তন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা ২৫ শতাংশ কমে যায়। শুধুমাত্র স্তন ক্যান্সারই নয়, স্তন্যপান জরায়ু ও ডিম্বাশয়ের ক্যান্সারকে দূরে রাখতে সাহায্য করে।
২) শিশুর-পরিচর্যা করার মধ্যে দিয়ে মায়ের মানসিক স্বাস্থ্যও ভালো থাকে। মা ও শিশুর মধ্যে সম্পর্ক নিবিড় হয়।
৩) স্তন্যপান করালে মায়ের ওজন হ্রাস হয়। শিশুর পরিচর্যার জন্য মায়ের দৈনিক ৫০০ ক্যালরি খরচ হয়। ফলে মায়ের কোমরের পরিধি ও অতিরিক্ত চর্বি কমাতে সাহায্য করে। শিশু পরিচর্যায় অক্সিটোসিন উত্পাদনে সাহায্য করে, যা মায়ের মন ভালো রাখে এবং ডিপ্রেশন আসতে দেয় না।
৪) গর্ভকালীন অবস্থায় শরীরে গ্লুকোজের মাত্রা কমে যায় ও ইনসুলিনের মাত্রা বেড়ে যায়। ফলে, ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা বাড়ে। এছাড়াও, গর্ভকালীন ওজন বৃদ্ধির কারণে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে, সন্তানকে স্তন্যদানের মধ্য দিয়ে এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, শিশুর 6জন্মের এক ঘণ্টা পর থেকে ৬ মাস বয়স অবধি শিশুকে একমাত্র মাতৃদুগ্ধ পান করানো উচিত। কিন্তু, ২ বছর বা তারও বেশি সময় ধরে যদি স্তন্যপান করানো হয় তাহলে মায়ের দুধের পাশাপাশি শিশুকে পুষ্টিকর খাবারও খাওয়ানো উচিত।