Just In
- 1 hr ago আপনার কি ক্রমাগত কান চুলকাচ্ছেন? অজান্তেই ডেকে আনচ্ছেন বড় বিপদ
- 4 hrs ago মসুর ডাল খেতে ভালোবাসেন? কিন্তু অতিরিক্ত খেলে হতে পারে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া!
- 6 hrs ago অনলাইন গেমে বাচ্চারা ঘরকুঁনো! জানেন কি স্বাস্থ্যের জন্য় কতটা উপকারি আউটডোর গেম?
- 6 hrs ago সূর্যগ্রহণের সময় ঘটবে মা দুর্গার আগমন, তবে কি গ্রহণকালে পড়বে মায়ের পূজায় বাধা?
হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস : লক্ষণ, কারণ, চিকিৎসা ও প্রতিরোধ
হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (HPV) ইনফেকশন একটি সাধারণ যৌনবাহিত সংক্রমণগুলির মধ্যে একটি ভাইরাল ইনফেকশন, যা মূলত ত্বকের সঙ্গে ত্বকের যোগাযোগের কারণে হয়। বেশিরভাগ সময় যৌন মিলনের কারণে ঘটে। তাই, এই ভাইরাস সংক্রমণ হয় যৌনসঙ্গীর থেকে। বেশিরভাগ মানুষই এই ভাইরাস সংক্রমণের তীব্র ঝুঁকিতে থাকে। এটি পুরুষ, মহিলা উভয়কেই সংক্রামিত করে। এই ভাইরাস ছড়ায় খুবই দ্রুত।
HPV সাধারণত পায়ুপথ, যোনি বা ওরাল সেক্সের সময় ছড়িয়ে পড়ে। মদ বা সিগারেটের কারণেই শুধুমাত্র গলার ক্যান্সার হয় না। চিকিৎসকদের দাবি, সাম্প্রতিক সময়ে ধূমপানকে পেছনে ফেলে মুখ ও গলার ক্যান্সারের জন্যে ভয়াবহ বার্তা বয়ে এনেছে ওরাল সেক্স। হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস বা HPV হল এই ব্যাধির প্রধান সংক্রামক। এটি যৌনক্রমে সংক্রামিত ব্যক্তির থেকে একজন সুস্থ ব্যক্তির দেহে যায়। এক্ষেত্রে, পায়ুপথ, যৌনাঙ্গ, মুখ, মাথা, গলা ইত্যাদি অঙ্গে ক্যান্সার হতে পারে।
বেশিরভাগ মানুষ তাদের জীবনে কমপক্ষে একবার HPV সংক্রমণে ভোগেন। কিছু লোকের ক্ষেত্রে এই রোগ নিজে থেকেই সেরে যায়। তবে, অনেক ক্ষেত্রে এটি ক্যান্সারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এই প্রসঙ্গে বলতে গেলে বলা যায়, প্রায় ১০০ টিরও বেশি বিভিন্ন প্রকারের HPV আছে, যার মধ্যে ক্যান্সারের ক্ষেত্রে প্রায় ১৪ ধরনের ভাইরাসের ঝুঁকি সবথেকে বেশি। কোনও মহিলার যৌনাঙ্গে HPV সংক্রামিত হলে তা কখনও জরায়ুর ক্যান্সারের কারণ হতে পারে।
এর লক্ষণ ও উপসর্গ :
রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রগুলি অনুসারে, এই সংক্রমণের ৯০ শতাংশই দু'বছরের মধ্যে নিজে থেকেই চলে যায়। কিছু মানুষের শরীরে এই ভাইরাস থাকলেও সেটার লক্ষণ প্রকাশিত হয় না। তবে, যৌনমিলনের সময় অজান্তেই তা অপর ব্যাক্তির দেহে সংক্রমিত হয়ে যায়। এই ভাইরাস যখন অন্য কোনও ব্যক্তির দেহে স্থানান্তরিত হয়, তখন লক্ষণগুলি দেখা দেয়। এর উপর ভিত্তি করে, কোনও চিকিত্সক তাদের শরীরে কী ধরণের HPV স্থানান্তরিত হয়েছে তা শনাক্ত করতে পারে। বিভিন্ন ধরণের HPV-তে বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ দেখা দেয়। এক্ষেত্রে ত্বকে শতাধিক আঁচিল, গুটি বা ফুসকুড়ি হতে পারে। নীচে এগুলির সম্পর্কে আলোচনা করা হল -
১) জেনিটাল ওয়ার্টস : বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যৌনাঙ্গ, মলদ্বার, যোনিতে হতে পারে। এটি দেখতে অনেকটা ফুলকপি, খসখসে চামড়ার মতো হয়ে থাকে।
২) ফ্ল্যাট ওয়ার্টস : এগুলি সাধারণত মুখ, থুতনিতে। এগুলি সমতল হয়।
৩) ওরোফারিঞ্জিয়াল ওয়ার্টস : এগুলি বিভিন্ন আকারের হয়। মূলত, জিহ্বা এবং টনসিলের মতো মুখের পৃষ্ঠতলে হয়।
৪) সাধারণ ওয়ার্টস : এগুলি মূলত হাত, আঙ্গুলগুলিতে দেখা দেয়।
৫) প্ল্যান্টার ওয়ার্ট : এগুলি সাধারণত শক্ত এবং দানাদার হয়। পায়ের গোড়ালিতে দেখা যায়।
এই ভাইরাস সংক্রমণের কারণ :
১) সাধারণত সংক্রামিত ব্যাক্তির সাথে যৌন মিলনের মাধ্যমে এটি অপর ব্যাক্তির দেহে প্রবেশ করে।
২) একাধিক মানুষের সাথে যৌন মিলনে আবদ্ধ হলে এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি পরিমাণে বেড়ে যায়।
৩) এটি শরীরের কোনও কাটা, ঘা বা ক্ষত থাকলে তার মাধ্যমে অতি সহজে প্রবেশ করে।
৪) যদি কোনও গর্ভবতী মহিলা এই ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হয় তবে সেটি তার সন্তানের দেহেও স্থানান্তরিত হতে পারে।
৫) চুম্বনের মাধ্যমে এটির সংক্রমণ মুখে মুখে স্থানান্তরিত হতে পারে।
৬) অন্য ব্যক্তির শরীরে থাকা একটি আঁচিল স্পর্শের দ্বারাও এটি স্থানান্তরিত হতে পারে।
৭) ধূমপানের ক্ষেত্রে সংক্রামিত ব্যক্তির মুখের সিগারেট অপরজন ব্যবহার করলে সেই সময় তা অন্যের কাছে স্থানান্তরিত হয়।
রোগ নির্ণয় :
এক্ষেত্রে একজন চিকিৎসক কোনও সংক্রামিত ব্যাক্তিকে চাক্ষুষ পরিদর্শনের মাধ্যমে সহজেই HPV শনাক্ত করতে পারেন। তবে, প্রয়োজনে তারা প্যাপ স্মিয়ার টেস্ট , ডি এন এ পরীক্ষা, এবং অ্যাসিটিক অ্যাসিড সলিউশন পরীক্ষাগুলি করতে পারেন।
চিকিৎসা :
অনেক ক্ষেত্রে, এই রোগের কোনও চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না। নিজে থেকেই ঠিক হয়ে যায়। তবে, মারাত্মক আকার ধারণ করলে চিকিৎসার প্রয়োজন পড়ে।
১) এই ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট আঁচিলগুলির জন্য ডাক্তার খাবার ওষুধের পাশাপাশি লাগানোর জন্য ক্রিমও দিতে পারেন।
২) এর কারণে ক্যান্সার হলে কেমোথেরাপি বা রেডিওথেরাপির মতো উচ্চ মানের চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।
৩) ওষুধে আঁচিল ঠিক না হলে সেক্ষেত্রে লেজারের দ্বারা অস্ত্রপ্রচারের দরকার হয়।
রোগ প্রতিরোধ :
কিছু উপায় আছে যার মাধ্যমে কোনও ব্যক্তি এই ভাইরাস সংক্রমণের হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারে :
১) আঁচিল থাকলে তা কখনোই নখ দিয়ে আঁচড়াবেন না।
২) খালি পায়ে হাঁটবেন না।
৩) এই ভাইরাসের হাত থেকে বাঁচতে অবশ্যই কনডম ব্যবহার করুন।
৪) একজন সঙ্গীর সাথেই যৌন সম্পর্কতা বজায় রাখুন। একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে নয়।
৫) যেকোনও ব্যক্তির কাছ থেকে সিগারেট ভাগ করে খাওয়া উচিত নয়।
৬) অন্য ব্যক্তির জুতো বা অন্তর্বাস পরা এড়িয়ে চলুন।