Just In
করোনা ভাইরাস : প্যানডেমিক, এপিডেমিক এবং আউটব্রেকের মধ্যে পার্থক্য কী?
বর্তমানে বিশ্বের মানুষের কাছে আতঙ্কের অপর নাম নোভেল করোনা ভাইরাস। প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে আক্রান্তের সংখ্যা। ' স্টপ' শব্দটা যেন করোনা ভাইরাস- এর অভিধান থেকে উধাও হয়ে গিয়েছে। ক্রমশই বেড়ে চলেছে মৃত্যুর সংখ্যা। আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে লাখেরও বেশি। বাঁচার হাহাকার পড়েছে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) নোভেল করোনা ভাইরাসকে (COVID-19) পৃথিবাব্যাপি মহামারি অর্থাৎ প্যানডেমিক হিসেবে ঘোষণা করেছে। কিন্তু, এখনও অনেকেই আউটব্রেক, এপিডেমিক এবং পৃথিবাব্যাপি মহামারি অর্থাৎ প্যানডেমিক-এর মধ্যে পার্থক্যটা বুঝতে পারেন না। সবাইকেই বুঝতে হবে এই তিনটি শব্দের মধ্যে অনেকটাই পার্থক্য রয়েছে। আজ এই নিবন্ধে তিনটি শব্দের পার্থক্যগুলি কী কী সেই সম্পর্কে আমরা জেনে নেব।
প্যানডেমিক বা পৃথিবাব্যাপি মহামারি
যখন কোনও রোগ সারা বিশ্বে মহামারির আকার ধারণ করে তখন তাকে বলে প্যানডেমিক বা পৃথিবাব্যাপি বা বিশ্বব্যাপী মহামারি, অর্থাৎ যখন কোনও একটি রোগ গোটা পৃথিবীতে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং আন্তর্জাতিকভাবে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় তখনই এটিকে প্যানডেমিক মহামারি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সম্প্রতি করোনা ভাইরাসকে প্যানডেমিক হিসেবে ঘোষণা করেছে।
এপিডেমিক বা মহামারি
যখন কোনও মারণ রোগ একই সময়ে বিস্তীর্ণ এলাকা ধরে (এক বা একাধিক দেশের) বিভিন্ন কমিউনিটিতে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে তখন তাকে এপিডেমিক বা মহামারি বলে।
আরও পড়ুন : করোনা ভাইরাস : বাড়িতে কীভাবে হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরি করবেন? দেখে নিন পদ্ধতি
যখন চীনের উহানের বাইরে করোনা ভাইরাস প্রথম দেখা দেয় তখন এটি প্রাদুর্ভাব (OUTBREAK) হিসেবে প্রকাশ পেয়েছিল। পরে যখন আবার চীন সহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন দেশগুলিতে আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃতের সংখ্যা বাড়তে থাকে তখন তাকে মহামারি (এপিডেমিক) হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়।
এই মহামারী যখন সমগ্র বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে এবং আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে থাকে তখন তাকে প্যানডেমিক বা বিশ্বজনীন মহামারী আখ্যা দেওয়া হয়।
আউটব্রেক
এপিডেমিক এবং আউটব্রেক প্রায় সমার্থক। যখন কোনও মারণ রোগ, কম ভৌগোলিক এলাকার মধ্যে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে তখন সেই মহামারি-কে প্রাদুর্ভাব বা আউটব্রেক বলে। অর্থাৎ এই রোগটি যখন উহানে দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছিল তখন করোনাকে প্রাদুর্ভাব (আউটব্রেক) হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছিল।
ইতিমধ্যেই ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১০০-রও বেশি। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে ভারতে নোভেল করোনা ভাইরাসটি দ্বিতীয় পর্যায়ে রয়েছে। সরকার যদি এটি প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ না নেয় তবে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ হেলথ রিসার্চ এর মতে, ভাইরাসটিকে দ্বিতীয় পর্যায় থেকে তৃতীয় পর্যায়ে ছড়াতে না দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে সময় রয়েছে আর মাত্র এক মাস।
ভাইরাসটি কোন পর্যায়ে কতটা বিপদজনক
পর্যায় ১ - সংক্রামিত স্থান থেকে ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে, দেখা দেয় এক থেকে দুজন ব্যক্তির শরীরে।
পর্যায় ২ - দ্বিতীয় পর্যায়ে আক্রান্তের থেকে তার নিকটবর্তী স্থানে যারা রয়েছেন কেবলমাত্র তাদের মধ্যেই ছড়ায়।
পর্যায় ৩ - এই ভাইরাসের ক্ষেত্রে তৃতীয় পর্যায় হলো বিপদজনক। কারণ তৃতীয় পর্যায়ে ভাইরাসটি কমিউনিটির মধ্যে ছড়াতে শুরু করে খুবই দ্রুত গতিতে।
পর্যায় ৪ - চতুর্থ পর্যায়ে রোগটি মহামারিতে পরিণত হয়। কখন এবং কোথায় এটির শেষ তা বলা মুশকিল। বাড়তে থাকে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা।