Just In
করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত পুরুষদের অণ্ডকোষ! আশঙ্কা বন্ধ্যাত্বেরও, কী বলছেন গবেষকরা
করোনা থেকে বাঁচার লড়াইয়ে মানুষ যখন চাতক পাখির মতো চেয়ে রয়েছে ভ্যাকসিনের দিকে, ঠিক তখনই আবারও এক নতুন চমক সামনে উঠে এলো গবেষণায়। কোভিড-১৯ আক্রান্ত পুরুষদের প্রজনন ক্ষমতা কমে যাওয়ার এবং বন্ধ্যাত্বের ঝুঁকিও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে দাবি করলেন একদল গবেষক। মারণ এই ভাইরাসের ছোবল থেকে বাঁচতে না বাঁচতেই এই নয়া গবেষণায় উদ্বেগ বেড়েছে চিকিৎসক মহল থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের মধ্যে।
যখন দ্রুত হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা, ঠিক তখনই এই তথ্য সামনে এনে নয়া আতঙ্কের সৃষ্টি করেছেন চীনের উহানের টংজি হাসপাতালের রিপ্রোডাকটিভ মেডিসিন সেন্টারের গবেষকরা। তাঁরা জানান, যেসকল পুরুষেরা করোনা আক্রান্ত হওয়ার পরে সুস্থ হয়েছেন তাদের প্রজনন ক্ষমতায় কোনও প্রভাব পড়েছে কিনা তা পরীক্ষা করে নেওয়া উচিত। তবে এই বিষয়ে গবেষকরা স্পষ্ট দাবী করেন যে, "এখনও পর্যন্ত প্রজনন ক্ষমতা নষ্টের কোনও প্রমাণ না পাওয়া গেলেও, এর যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে"।
আরও পড়ুন : করোনার বিরুদ্ধে লড়তে প্রয়োজন চার মূল চাবিকাঠির, দেখে নিন সেগুলি কী কী
এই গবেষণা সম্পর্কে ব্যাখ্যা করে গবেষকরা বলেন যে, যেহেতু করোনা ভাইরাস ও সার্স একই গোষ্ঠীভুক্ত তাই এই দুই ভাইরাসই এইস-২ নামে একটি এনজাইমের সঙ্গে মিশে শরীরের কোষে আক্রমণ করে এবং কোষ-কে নষ্ট করে দেয়। এই এইস-২ ফুসফুস ছাড়াও মানব দেহের অন্যান্য অঙ্গগুলিতে, বিশেষত পুরুষদের অন্ডকোষে প্রচুর পরিমাণে থাকে। পাশাপাশি জীবাণু কোষ, সহায়ক কোষ এবং জনন কোষ পুরুষের প্রজনন ক্ষমতার সঙ্গে সরাসরি জড়িত থাকার ফলে করোনা আক্রান্ত হলেই এই কোষগুলোর কার্যক্ষমতা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এই ভাইরাসের সংক্রমণে পুরুষদের অর্কাইটিসের সমস্যা দেখা দিতে পারে। যার ফলে শরীরে শুক্রাণুর পরিমাণ কমে গিয়ে বন্ধ্যাত্ব দেখা দিতে পারে।
গবেষকরা এও জানান যে, ২০০২ সালে সার্স ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের সময় ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হওয়া পুরুষদের অন্ডকোষ ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ক্ষতি লক্ষ্য করা গিয়েছিল। যেহেতু এই নভেল করোনা ভাইরাস ও সার্স ভাইরাস একই গোষ্ঠীভুক্ত এবং এই দুই ভাইরাস একই হোস্ট সেল রিসেপ্টর এইস-২ কে আক্রমণ করে, তাই পুরুষদের এই ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করছেন গবেষকরা।
এই গবেষণার উপর ভিত্তি করে উহানের টংজি হাসপাতালের রিপ্রোডাকটিভ মেডিসিনের অধ্যাপক লি ইউফেং জানান, এই ভাইরাসের সংক্রমণে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি ক্ষতি হতে পারে অণ্ডকোষও। রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠলেও ডাক্তারের সাহায্য নিয়ে তাঁর প্রজনন ক্ষমতা পরীক্ষা করা উচিত। কারণ, এর ফলে বন্ধ্যাত্বের আশঙ্কাও থেকেই যায়।