Just In
করোনা থেকে বাঁচতে নিজেকে ও গোটা বাড়ি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন, দেখে নিন কী করবেন
কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের আক্রমণে বর্তমানে দেশের পরিস্থিতি একেবারেই ভালো নয়। প্রতিদিনই আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই সঙ্গে সাধারণ মানুষের মনে বাড়ছে আতঙ্ক ও নিরাপত্তাহীনতা। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, মাস্ক পরা, বারবার হাত ধোওয়ার মতো নানা সতর্কতামূলক পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর দিকেও নজর দিতে বলা হচ্ছে।
কিন্তু আমরা নিজেদের কতটা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখছি? করোনার দ্রুত সংক্রমণ রুখতে কি আমরা আমাদের বাড়ি-ঘর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখছি? চিকিৎসকরা বলছেন, এই পরিস্থিতিতে আমাদের নিজেদের ও গোটা বাড়িকে সর্বদা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখাটা খুবই প্রয়োজন। নাহলে ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া থেকে বাঁচা মুশকিল।
কোভিডের আক্রমণ থেকে বাঁচতে পরিষ্কার ও স্বাস্থ্যকর থাকার টিপস
১) বাড়ি-ঘর ও তার চারপাশ পরিষ্কার রাখুন। নিজেও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকুন।
২) ঘন ঘন চোখ, নাক, মুখে হাত দেওয়া এড়িয়ে চলুন।
৩) হাঁচি-কাশি দেওয়ার সময় নাক, মুখ টিস্যু ও কনুই দিয়ে ঢেকে রাখুন। তারপর টিস্যুটি যথাস্থানে ফেলে দিন।
৪) সোশ্যাল ডিসট্যান্স মেনটেন করুন।
৫) ঘন ঘন হাত ধুতে থাকুন। মিনিমাম ২০-৩০ সেকেন্ড সাবান ও জল দিয়ে হাত ধোওয়া উচিত।
৬) কমপক্ষে ৬০ শতাংশ অ্যালকোহল রয়েছে এমন হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন। ভাল করে হাতে স্যানিটাইজার লাগান। যতক্ষণ না হাত শুকনো হচ্ছে ততক্ষণ স্যানিটাইজার ঘষুন।
বাড়ির চারপাশ পরিষ্কার করুন
বাড়ির যেসব জিনিসে বেশি হাত দেওয়া হয়, যেমন - দরজার হ্যান্ডেল, টেবিল, চেয়ার, রান্নাঘর, বাথরুমের কল, টয়লেট, লাইট-ফ্যানের স্যুইচ, মোবাইল, কম্পিউটার, রিমোট, খেলনা, ইত্যাদি। এগুলি নিয়মিত পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করা সংক্রমণের ঝুঁকি অনেকটাই হ্রাস করতে পারে।
বাড়ি-ঘর পরিষ্কারের জন্য জীবাণুনাশক পণ্য প্রয়োগ করার সময়, অবশ্যই কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত, যেমন - গ্লাভস পরা এবং যে ঘর পরিষ্কার করবেন সেই ঘরে যেন পর্যাপ্ত বায়ুচলাচল থাকে। এছাড়াও, পণ্যের গায়ে লেখা নির্দেশাবলী ফলো করা উচিত।
পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করার জন্য কী ব্যবহার করবেন?
যদি কোনও জায়গা নোংরা হয়ে থাকে, তাহলে প্রথমে সাবান বা ডিটারজেন্ট এবং জল দিয়ে সেই জায়গাটি পরিষ্কার করুন। তারপরে অ্যালকোহল (প্রায় ৭০ শতাংশ) বা ব্লিচযুক্ত জীবাণুনাশক পণ্য ব্যবহার করুন। ভিনেগার এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক পণ্যগুলি ব্যবহার করবেন না। অনেক জায়গায় জীবাণুনাশক স্প্রে এবং ওয়াইপস ব্যবহার করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। এক্ষেত্রে, সাবান এবং জল দিয়ে পরিষ্কার করতে পারেন। তবে মোবাইল বা অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইস পরিষ্কারের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন। সেগুলিতে যাতে জল না লাগে, কোনওভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন।
করোনা রোগীর ব্যবহৃত অক্সিমিটার ও থার্মোমিটার ব্যবহার করতে পারেন কি বাড়ির অন্যরা? জেনে নিন
জামাকাপড় পরিষ্কারের ক্ষেত্রে
কোভিড-১৯ ভাইরাস জামাকাপড়ে কতদিন বেঁচে থাকতে পারে, তা এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট নয়, তবে প্লাস্টিক এবং ধাতুর কোনও জিনিসে ভাইরাস কয়েক ঘণ্টা থেকে কয়েক দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে।
বাইরে থেকে এসে বাড়িতে প্রবেশ করার আগে জুতো বাইরেই খুলুন এবং পোশাক পরিবর্তন করুন। সাবান এবং জল দিয়ে হাত-পা ভাল করে ধোওয়া উচিত। বেডশীট, টাওয়েল, জামাকাপড় ডিটারজেন্ট দিয়ে নিয়মিত ধোওয়া উচিত।
খাবারের ক্ষেত্রে
খাদ্য বা ফুড প্যাকেজিংয়ের মাধ্যমে মানুষ ভাইরাস সংক্রামিত হচ্ছে, এমন কোনও ঘটনা এখনও পর্যন্ত শোনা যায়নি। তবে ভাইরাস দ্বারা দূষিত কোনও পৃষ্ঠ বা বস্তুকে স্পর্শ করে, তারপর সেই হাত মুখে দিলে সংক্রমণ ছড়াতে পারে।
বাজার করতে গিয়ে বা ফুড ডেলিভারির সময় অন্য ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। তাই ভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকতে সর্বদা সমস্ত সতর্কতা নেওয়া প্রয়োজন।
১) বাইরে থেকে খাবার অর্ডার করলে, একটা পরিষ্কার প্লেটে খাবার বের করে, কন্টেনারটি যথাস্থানে ফেলুন।
২) ক্যান জাতীয় কিছু খোলা বা স্টোর করার আগে জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করে নিন।
৩) বাইরে থেকে ফল ও শাকসবজি আনার পর জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
৪) রান্না করার আগে আপনার হাত সাবান-জল দিয়ে ভালো করে ধুয়ে ফেলুন।
৫) কাঁচা মাছ-মাংস কাটা বা ব্যবহারের জন্য আলাদা চপিং বোর্ড কিংবা পাত্র ব্যবহার করুন। সবকিছু ভালো করে রান্না করে খাবেন। আধ সিদ্ধ বা কাঁচা খাবেন না।
৬) যেসব খাবারগুলি স্টোর করে রাখবেন, সেগুলির এক্সপাইরি ডেটের দিকে নজর রাখুন।
৭) পচা বা বাসি খাবার ফেলে রাখবেন না। প্রতিদিনের ডাস্টবিন জমিয়ে রাখবেন না।
৮) খাওয়ার আগে কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড সাবান ও জল দিয়ে হাত ধোবেন এবং আপনার বাচ্চাও যাতে এটা মেনে চলে সেদিকে খেয়াল রাখুন।
৯) সর্বদা থালা-বাসন পরিষ্কার রাখবেন।