Just In
শরীরের প্রতিটি পেশি মজবুত করে তোলার জন্য কোন কোন ব্যায়াম
স্রেফ অল্প কিছু ব্যায়ামই পারে আপনার শরীরকে সুস্থ রাখতে, সবল রাখতে, দিনের শেষ পর্যন্ত প্রতিটি পেশিকে সচল রাখতে।
খাওয়া দাওয়া ঠিকঠাক করলেও দৈনন্দিন কাজের চাপে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ছে? দিনের শেষে কোনa কাজ করার শক্তিই নেই? আর এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হবে না আপনাকে। স্রেফ অল্প কিছু ব্যায়ামই পারে আপনার শরীরকে সুস্থ রাখতে, সবল রাখতে, দিনের শেষ পর্যন্ত প্রতিটি পেশিকে সচল রাখতে।
১। পুশ আপ :
যে কোনও ডায়েটিশিয়ান বা ফিটনেস ট্রেনারকে যদি প্রশ্ন করা হয়, কীভাবে নিজের শরীরকে সুস্থ ও সবল রাখা হয়, প্রথমেই তাঁরা যে ব্যায়ামের কথা বলেন তা কিন্তু পুশ আপ। এই ব্যায়ামে আপনার ঘাড়, হাত ও পায়ের পেশিকোশ গুলি দৃঢ় হয়। পাঁজরের হাড় সুগঠিত ও শক্ত হয়। এর পদ্ধতিটিও সহজ। প্রথমেই মাটিতে উবু হয়ে শুয়ে পড়ুন। দুই হাতের তালু দুটো এবার বুকের পাঁজর বরাবর রাখুন, কনুইটি এইসময় উপরের দিকে মুখ করে থাকবে। এবার পায়ের আঙুল দিয়ে মাটি ছুঁয়ে গোড়ালি উপরের দিকে ঘুরিয়ে দিন। এবার নাক দিয়ে জোরে নিঃশ্বাস নিতে নিতে তালুতে ভর করে শরীরকে উপরের দিকে তুলুন। হাঁটুও এক্ষেত্রে উপরে উঠবে। এরপর এক সেকেন্ড অপেক্ষা করে শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে শরীর নীচে নামান, হাঁটু এক্ষেত্রেও মাটিতে লাগবে না। বুক মাটি ছুঁলে ব্যায়াম একবার সম্পূর্ণ হল। এইভাবে টানা ১০-১৫ বার এটি করুন। তারপর দুমিনিট বিশ্রাম আবার ১০ বার। মোট তিন খেপে দশবার করে এটি করতে হয়। প্রথম প্রথম শরীর নিচে নামাতে গেলে হাঁটু মাটিতে লেগে যায়। হাঁটু না লাগিয়ে করতে খুব কষ্টও হয়, কিন্তু কিছুদিন নিয়মিত করতে পারলে এই সমস্যা আর থাকে না।
২। স্কোয়াট:
স্কোয়াট কোমর, পিঠ আর পায়ের পেশিগুলোর সঞ্চালনশক্তি বাড়ায়। ফলে পেশিগুলি সহজে দুর্বল হয়ে যায় না। এটি পুশ আপের থেকে সহজ ব্যায়াম। এক্ষেত্রে পা দুটো পরস্পরের সঙ্গে লাগিয়ে আপনাকে সোজা হয়ে দাঁড়াতে হবে। এরপর দু হাতের প্রণামের ভঙ্গিতে এক করুন। এবার ধীরে ধীরে শরীরকে নীচে নামান যেন বসতে যাচ্ছেন। যতক্ষণ না দুই পায়ের থাই মাটির সমান্তরালে আসে ততক্ষণ শরীরকে নীচে নামাতে থাকুন। সমানে বা পিছনে কোনোদিকেই হেলিয়ে দেবেন না শরীর। যখন দুই পায়ের থাই মাটির সমান্তরালে আসবে, তখন প্রক্রিয়াটি একবার সম্পূর্ণ হল। বসার প্রক্রিয়া শুরুর আগে নিঃশ্বাস নিতে হবে বুকভরে ও প্রক্রিয়াটি শুরুর পর থেকে শেষ পর্যন্ত ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়তে হবে। এভাবে ১০-১৫ বার করতে হবে, মোট তিনখেপে।
৩। অ্যাবস স্ট্রেনদেনার:
বুক, পেট ও পিঠের পেশিগুলো মজবুত করতে অ্যাবস-এর ব্যায়াম খুব প্রয়োজন। এই ব্যায়ামের পদ্ধতিও বেশ সহজ । এক্ষেত্রে প্রথমে আপনাকে মাটিতে পা মেলে শুয়ে পড়তে হবে। এরপর আপনার হাত মাটি থেকে তুলে বাড়িয়ে দিতে হবে নীচের দিকে অর্থাৎ পায়ের পাতার দিকে । এবার পা ভাঁজ করে তুলে আনতে হবে উপরে। কিন্তু পেটের সঙ্গে লাগাবেন না। হাঁটুর নীচের অংশ মাটির সমান্তরালে থাকে এমন করে পা'টি রাখতে হবে। যেদিকের পা তুললেন সেদিকের হাতই তুলতে হবে । হাতের সঙ্গে পায়ের থাই লেগে থাকবে। শেষে মাথা তুলে পায়ের দিকে তাকাতে হবে। এই পুরো প্রক্রিয়াটি অন্য দিকের পা ও হাত নিয়েও করতে হবে। এটিও তিনখেপে মোট দশ থেকে পনেরবার করতে হবে।
৪। কিকবক্সিং পাঞ্চ:
এই ব্যায়ামে আপনার হাত ও পিঠের উপরের অংশের পেশিগুলোর সঞ্চালন বাড়ে। এক্ষেত্রে প্রথমে আপনার ডানহাতের কনুইয়ের উপরের অংশকে ৪৫° কোণ করে রাখতে হবে। আরেক হাত থাকবে সোজা সামনের দিকে বাড়ানো। সামনে কোনও বস্তু আছে এমনটা ভেবে নিন। এবার ডানহাতটি পিছনের দিকে নিয়ে গিয়ে শক্তি সঞ্চয় করে বস্তটিতে ঘুঁষি মারুন। এর ফলে আপনার হাতটি সোজা সামনের দিকে যাবে। একই পদ্ধতিতে বাঁ হাতও ছুঁড়ুন। এই ব্যায়াম দুই হাতেই দশবার করে করুন।
উপরের ব্যায়ামগুলি সকালে ঘুম থেকে উঠে শুরু করে দিন, দেখবেন সারাদিনের কাজের চাপ নেওয়ার আগে শরীর সম্পূর্ণ ভাবে প্রস্তুত।