Just In
ত্বকের রোগের চিকিৎসায় নুন
নুনকে হালকা ভাবে নেবেন না। কারণ ত্বকের নানা ঘাটতি মেটাতে এই যৌগটির জুড়ি মেলা ভার।
শুনে যতই আবাক হন না কেন, একথা প্রমাণিত সত্য় যে ত্বকের নানা রোগ সারাতে নুন দারুন কাজে আসে। ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে হোক, কী অ্যালার্জি কমাতে, সবেতেই আপনি নুনকে কাজে লাগাতে পারেন। এই বিষয়ে আরও জানতে পড়তে থাকুন এই প্রবন্ধটি।
সারা বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা একাধিক নামিদামি স্পায়ে সল্ট থেরাপি করা হয়। করাণ কী জানেন! নুনে অ্যান্টি ব্য়াকটেরিয়াল প্রপাটিজ থাকায় এটি শুষ্ক ত্বকের সমস্য়া দূর করার পাশাপাশি ত্বককে ভেতর থেকে সুন্দর করতে সাহায্য় করে।
সমাদ্রিক নুনে পটাশিয়াম, ম্য়াগনেশিয়াম এবং ক্য়ালসিয়ামের মতো মিনারেল থাকে, যা নতুন করে ত্বকের কোষ তৈরি করে। ফলে ত্বকের স্বাস্থ্য় ধীরে ধীরে ফিরে আসে। শুধু তাই নয় নুন ত্বককে আদ্র রেখে শুষ্ক ত্বকের সমস্য়া দূর করে এবং ত্বককে মসৃণ করে।
ত্বককে সুন্দর করার পাশাপাশি মানসিক চাপ কমাতেও নুনের কোনও বিকল্প নেই। তাই চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক নুন ব্য়বহারের নানা পদ্ধতি সম্পর্কে।
১. ফর্সা ত্বক পেতে:
পুড়ে যাওয়া ত্বককে সারিয়ে তুলে ফর্সা ত্বক পেতে চান? তাহলে আজ থেকেই নুনের ব্য়বহার শুরু করুন।
কীভাবে ব্য়বহার করবেন:
২:১ রেশিয়োতে নুন এবং জল মিশিয়ে একটা পেস্ট বানিয়ে ফেলুন। তারপর সেই পেস্ট সারা গায়ে লাগান। ৩০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। প্রসঙ্গত, নুন যেহেতু সোডিয়াম, তাই এটি বেশিক্ষণ ত্বকে লাগিয়ে রাখা ঠিক নয়।
২. অ্যালার্জি কমাতে:
নুনের মধ্য়ে রয়েছে ম্য়াগনেশিয়াম সালফেট, যা যে কোনও ধরনের ত্বকের চুলকানি কমাতে দারুন কাজে আসে।
কীভাবে ব্য়বহার করবেন:
একটা বাটিতে এক কাপ গরম জল এবং পরিমাণ মতো নুন মেশান। জলটা ঠান্ডা হয়ে গেলে মিশ্রনটা ২০ মিনিট ফ্রিজে রেখে দিন। যখন দেখবেন মিশ্রনটি খুব ঠান্ডা হয়ে গেছে তখন সেটি যে জায়গায় চুলকাচ্ছে সেখানে লাগান, ৩০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন চুলকানি কমে যাবে।
৩. ত্বকে ফাঙ্গাস আক্রমণ কমাতে:
নুনে অ্যান্টি ব্য়াকটেরিয়াল প্রপাটিজ থাকায় এটি যে কোনও ধরনের ফাঙ্গাল ইনফকশনকে রোধ করে।
ফাঙ্গাসের প্রকোপ কমাতে কীভাবে ব্য়বহার করবেন এটি:
স্নানের জলে হাফ কাপ খাবার সোডা এবং নুন মিশিয়ে সেই জলে স্নান করুন। দেখবেন কেমন কমতে শুরু করে ফাঙ্গাল ইনফেকশন।
৪. ত্বকের সংক্রমণের চিকিৎসায়:
অনেক কারণে স্কিন ইনফেকশন হতে পারে। আর একেবারে শুরুর দিকেই এর চিকিৎসা শুরু করাটা একান্ত প্রয়োজন। না হলে তা চরম আকার নিয়ে নিতে পারে। প্রসঙ্গত, নুনে রয়েছে অ্যান্টিইনফ্লমেটরি উপাদান, যা যে কোনও ধরনের ত্বকের সংক্রমণ কমাতে দারুন কাজে আসে।
কীভাবে ব্যবহার করবেন:
গরম জলে দু চামচ নুন মেশান। তারপর একটা পরিষ্কার কাপড় নিয়ে তা দিয়ে যে জায়গায় সংক্রমণ হয়েছে সেখানে লাগান, দেখবেন ধীরে ধীরে ইনফেকশন কমতে শুরু করবে।
৫. ত্বক পরিষ্কার করতে:
নুনে এমন কিছু উপাদান আছে যা ত্বককে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য় করে। ত্বকের ছিদ্রগুলিকে খুলে দিয়ে তেলের ভারসাম্য় ঠিক রাখতেও নুনের জুড়ি মেলা ভার।
কীভাবে ব্য়বহার করবেন:
গরম জলে দু চামচ নুন মিশিয়ে জলটা ততক্ষণ রেখে দিন, যথক্ষণ না জলের মধ্য়ে ভালো করে মিশে যাচ্ছে নুনটা। তারপর সেই জল মুখে ছেটান।
৬. স্কার্ব হিসাবে ব্য়বহার করতে পারেন নুন:
চিনির মতোই নুন, স্কার্ব হিসাবে দারুন উপকারি। কারণ নুন ত্বকের উপরিংশে জমতে থাকা মৃত কোষের স্থর সরিয়ে ত্বককে উজ্জ্বল করে তোলে।
কীভাবে ব্য়বহার করবেন:
হাফ কাপ নুন, আধ টামচ অ্যালো ভেরা জেলের সঙ্গে মেশান। ইচ্ছে হলে ল্য়াভেন্ডার তেলের সঙ্গেও নুন মেশাতে পারেন। মিশ্রনটি তৈরি হয়ে গেলে মুখে লাগান এবং স্কার্বের মতো সারা মুখে ঘষুন।
৭. শরীরকে আরাম দিতে:
নুনে এমন কিছু উপাদান আছে শরীরকে আরাম দিতে দারুন ভাবে কাজে আসতে পারে। শুধু তাই নয়, স্ট্রেস কমানোর সঙ্গে সঙ্গে মস্তিষ্ক এবং শরীরকে রিজুভিনেট করতেও অসামান্য় ভূমিকা পালন করে এই যৌগটি।
কীভাবে ব্য়বহার করবেন:
গরম জলে একটা কাপের এক-তৃতীয়াংশ মাপে নুন মেশান। যখন দেখবেন নুনটা জলে ভালো করে মিশে গেছে, তখন সেই জল দিয়ে স্নান করুন।
৮. নরম ত্বকের অধিকারী হতে:
যেমনটা আগেও বলেছি, ত্বকের উপরে জমতে থাকা মৃত কোষগুলিকে সরিয়ে ফলতে নুনের কোনও বিকল্প নেই। আর একথা তো সকলেরই জানা যে মৃত কোষ সোরে গেলে আপনা থেকেই ত্বক সুন্দর এবং মোলায়েম হতে শুরু করে।
কীভাবে ব্য়বহার করবেন:
হাফ চামোচ অলিভ এবং নারকেল তেলের সঙ্গে পরিমাণ মতো নুন মিশিয়ে একটা পেস্ট বানিয়ে ফেলুন। এবার সেই পেস্ট দিয়ে ভালো করে মুখটা ঘোষে নিন।
এখানেই শেষ নয়। ত্বককে সুন্দর করার পাশাপাশি নখ, দাঁত এবং মুক গহ্বরকে সুন্দর করতেও নুন দারুন ভাবে কাজে দেয়।