For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts

চুল ও ত্বক সুন্দর রাখতে অবশ্যই ব্যবহার করুন বেকিং সোডা

|

বেকিং সোডা, চলতি কথায় যার নাম খাবার সোডা। সাধারণত রান্নার চিরপরিচিত উপাদান হল বেকিং সোডা, যার রাসায়নিক নাম সোডিয়াম বাই কার্বোনেট। কেক বা বিভিন্ন ভাজাভুজি জাতীয় খাবারে এর ব্যবহার ছাড়াও, ঘর পরিষ্কার রাখার বিভিন্ন কাজে খুবই কার্যকরী। আবার, রান্নাঘরের অতি প্রাচীন উপাদান বেকিং সোডা কিন্তু আমাদের শরীর, ত্বক ও চুলের যত্নের ক্ষেত্রেও খুবই প্রয়োজনীয় এবং উপকারি উপাদান। বেকিং সোডায় প্রাকৃতিক অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান থাকায় ত্বকের পি.এইচ লেভেল বজায় রাখে এবং ত্বককে ভাল রাখে, পাশাপাশি এটি চুলকেও ভাল রাখতে সাহায্য করে।

baking soda benifits for skin and hair

জলে মিশিয়ে বেকিং সোডা পান করার কথা হয়ত সবার জানা। তবে, রূপচর্চার ক্ষেত্রে যদি বেকিং সোডার কথা না ভেবে থাকেন তাহলে দেরি না করে দেখে নিন কিছু ঘরোয়া উপায়, যা আপনার চুল ও ত্বক যত্ন নিতে সাহায্য করবে।

ত্বকের যত্ন

১) ট্যান দূর করতে

রোদের তাপকে উপেক্ষা করে কাজের জন্য সবাইকেই বাইরে বেরোতে হয়। ফলে, ত্বকে ট্যান হওয়া খুব স্বাভাবিক ঘটনা।বেকিং সোডা দিয়ে খুব সহজেই দূর করুন ট্যান।

নারকেলের তেল ও পরিমাণ মত বেকিং সোডা নিয়ে এগুলি মিশিয়ে ভাল করে পেস্ট বানিয়ে নিন। এরপর, ট্যানের জায়গাগুলোয় হালকা করে দিয়ে ম্যাসাজ করুন। আপনার ত্বক যদি তেলতেলে হয়, তাহলে নারকেল তেলের বদলে জলের সঙ্গে বেকিং সোডা মেশান এবং একই পদ্ধতিতে ম্যাসাজ করুন। এর ২-৩ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।

২) ত্বকের উজ্জ্বলতা ফেরাতে

বেকিং সোডা আপনাকে কালো বা শ্যামবর্ণ থেকে ফর্সা করবে না। তবে, এটি আপনার স্কিন টোনটি ধরে রাখবে এবং ত্বককে উজ্জ্বল ও সতেজ রাখতে সাহায্য করবে। কারণ, বেকিং সোডা এক্সফোলিয়েটিং এজেন্ট হিসেবে কাজ করে।

এক টেবিলচামচ বেকিং সোডা নিন, তাতে পরিমাণমতো জল মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করুন। অনেক সময় বেকিং সোডা ত্বককে ড্রাই করে দেয়, তাই অলিভ অয়েল ও লেবুর রস মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। এরপর মুখে পেস্টটা ভাল করে লাগান এবং ম্যাসাজ করুন। তিন থেকে চার মিনিট ম্যাসাজ করে জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

৩) ঘামের গন্ধ দূর করতে

ঘামের গন্ধ দূর করতে বেকিং সোডা খুবই উপকারি, এর মাধ্যমে ঘরোয়া উপায়ে খুব সহজেই ঘামের গন্ধ দূর করতে সক্ষম হবেন।

বেকিং সোডার সঙ্গে জল মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে নিন। এরপর আন্ডারআর্মস-এ মিশ্রণটা ভাল করে এক মিনিট মত ঘষে নিয়ে তা শুকিয়ে যেতে দিন। পরে, তা ধুয়ে ফেলুন।

৪) ব্রণ প্রতিরোধক হিসেবে

মুখের ব্রণ ও দাগগুলো বেশ অস্বস্তিকর হয়। এই ব্রণ এবং দাগ, ফুসকুড়ি কমাতে অসাধারণ উপকার করে বেকিং সোডা। বেকিং সোডায় থাকা অ্যান্টিইনফ্ল্যামেটরি ও অ্যান্টিসেপটিক উপাদান ব্রণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে এবং দাগহীন ত্বক পেতে সাহায্য করে।

বেকিং সোডার সাথে জ্বল বা মধু মিশিয়ে মিশ্রণটি তৈরী করুন। মিনিট তিনেক ব্রণের জায়গায় এটি ম্যাসাজ করুন। কিছুক্ষণ রেখে ধুয়ে ফেলুন।

৫) ঠোটের কালো ভাব কমাতে ও দাঁত উজ্জ্বল করতে

বয়সের সাথে সাথে এবং অত্যাধিক সিগারেট সেবন করলে ঠোঁট কালো হয়ে যায়। ঠোঁটের এই কালো ভাব দূর করতে সহায়ক একমাত্র বেকিং সোডা।

মধু এবং বেকিং সোডা মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরী করুন। প্রতিদিন তিন মিনিট করে তা ঠোঁটে লাগিয়ে রাখুন। তারপর জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে রোজ করলে ঠোঁটের কালোভাব দূর হবে।

বয়সের কারণে এবং ভাল করে দাঁত না মাজার ফলে খাবার জমে দাঁতে বিভিন্ন দাগের সৃষ্টি হয়। দাঁতের ওপর থেকে এই দাগ তোলার জন্য বেকিং সোডার ভূমিকা অসাধারণ।

এক চিমটি বেকিং সোডা নিয়ে তাতে কয়েক ফোঁটা জল মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি তৈরী করে দাঁতে ঘষতে থাকুন কিছুক্ষন। পরে ভাল করে ধুয়ে ফেলুন।

চুলের যত্ন

১) তৈলাক্ত চুলের যত্ন

যাদের তৈলাক্ত চুল তাদের খুব সহজেই মাথায় ময়লা জমে। বিশেষ করে মাথার তালুতে। ফলে, অতিরিক্ত ঘাম ও দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়। এই সমস্ত কিছু অতি সহজে বেকিং সোডার মাধ্যমে দূর করতে সক্ষম হবেন।

পরিমাণ মত বেকিং সোডা ও জলের মিশ্রণ তৈরি করে মাথায় ব্যবহার করুন। চার থেকে পাঁচ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। তবে মাসে এক থেকে দু-বারের বেশি করবেন না।

২) খুশকি দূর করতে

মাথায় খুশকি হওয়া বর্তমান দিনে সাধারণ ঘটনা। এটি দূর করতে আমরা বিভিন্ন উপায় প্রয়োগ করে থাকি। এক্ষেত্রে ঘরোয়া উপায়ে বেকিং সোডা খুবই কার্যকর।

বোকিং সোডা ও লেবুর রস মিশিয়ে সেই মিশ্রণটি মাথায় ম্যাসাজ করুন বা চুল জল দিয়ে ধুয়ে নিন এবং পরিমান মত বেকিং সোডা নিয়ে মাথায় ঘষতে থাকুন। এক থেকে দু মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে একবার করুন।

৩) চুলের শ্যাম্পু

বেকিং সোডা ক্ষার প্রকৃতির হওয়ায় চুলের বিভিন্ন ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। চুলের গোড়ার মৃত কোষগুলোকে ঠিক করে রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে চুলের বৃদ্ধি ঘটায়। নিয়মিত ব্যবহার করলে এটি আপনার চুলকে মজবুত ও লম্বা করে তুলবে। সহজ উপায়ে চুলকে মজবুত করতে ব্যবহার করুন বেকিং সোডা।

আপনি যে শ্যাম্পু ব্যবহার করেন তার সাথে এক চিমটি বেকিং সোডা মিশিয়ে মাথায় ব্যবহার করুন। আবার আপেলের রস, ভিনেগারের সাথে বেকিং সোডা মিশিয়ে ব্যবহার করুন। এক থেকে দু মিনিট রেখে ঠান্ডা জলে ধুয়ে ফেলুন। মজবুত চুল পেতে সপ্তাহে একবার করুন।

৪) চুল পড়া বন্ধ ও নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে

স্ট্রেস, দূষণ, খাওয়ায় অনিয়ম ও জলের কারণে অসময়ে চুল পড়ে যাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা দেয়। চুল রুক্ষ ও পাতলা হয়ে যাওয়া থেকে থেকে পড়ে যাওয়া, এই সকল সমস্যার সমাধান করবে এই বেকিং সোডায় তৈরী শ্যাম্পু।

এক টেবিল চামচ বেকিং সোডার সাথে হাফ কাপ জল মিশিয়ে নিন। তবে, যার যত বড় চুল, সেই পরিমাণ মত মিশ্রণটি বাড়িয়ে নেবেন। এরপর মিশ্রণটি চুলের গোড়ায় লাগিয়ে ম্যাসাজ করুন। তিন থেকে চার মিনিট রাখার পর উষ্ণ গরম জল দিয়ে ধুয়ে নিন। সপ্তাহে একবার করুন।

সাবধানতা

১) মুখে বা মাথায় বেকিং সোডার মাস্ক বা মিশ্রণ ব্যবহার করার আগে হাত বা পায়ের ত্বকে লাগান। কিছুক্ষণ রাখার পর যদি পুড়ে যাওয়া বা যন্ত্রণাদায়ক অনুভূতি হয়, তবে দ্রুত ঠান্ডা জলে ধুয়ে ফেলুন। মুখে ও মাথায় আর ব্যবহার করবেন না।

২) ত্বকে কাঁটাছেড়া, পোড়া বা ক্ষত থাকলে বেকিং সোডা ব্যবহার করবেন না।

৩) মিশ্রণগুলি মুখে দেওয়ার সময় যেন চোখে না যায়।

৪) যাদের ত্বক খুব সেনসিটিভ তাদের বেকিং সোডা ব্যবহারের ফলে অনেক সময় ত্বক পুড়ে যায় বা লাল র‍্যাশ দেখা দেয়।

৫) নিয়মিত ব্যবহার করবেন না। এতে ত্বক কালো হয়ে যেতে পারে।

৬) অতি অবশ্যই ভাল বিদেশি কোম্পানির বেকিং সোডা ক্রয় করুন এবং অবশ্যই এক্সপায়ার ডেট দেখে নিন।

Read more about: baking soda skin hair
English summary

baking soda benifits for skin and hair

Let's now have a look at the ways to use baking soda for good skin and hair.
Story first published: Saturday, November 23, 2019, 15:34 [IST]
X
Desktop Bottom Promotion