For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts

বিনায়কি: জানেন কি গণেশ ঠাকুরের মাতৃ রূপও আছে এবং যার পুজো করলে নানা উপকারও মেলে!

মৎস পুরাণ এবং বিষ্ণু-ধর্মত্র পুরাণে গণেশ ঠাকুরের এই বিশেষ রূপের সন্ধান পাওয়া যায়। শুধু তাই নয় কীভাবে সৃষ্টি হল এই অবতারের সে সম্পর্কেও জানা যায়।

|

একেবারে ঠিক শুনেছেন! সারা দেশে পূজিত গণেশ ঠাকুরের মাতৃ রূপও আছে। তবে সে সম্পর্কে বহু মানুষেরই হয়তো জানা নেই। কারণ প্রাচীন কালে লেখা একাধিক বইয়ে এই রূপের উল্লেখ পাওয়া গলেও কালের নিয়মে তা হারিয়ে গেছে। ফলে কারও পক্ষেই জানা হয়ে ওঠেনি "বিনায়কি" এর সম্পর্কে। আর ঠিক এই কারণেই আজ কলম ধরা।

মৎস পুরাণ এবং বিষ্ণু-ধর্মত্র পুরাণে গণেশ ঠাকুরের এই বিশেষ রূপের সন্ধান পাওয়া যায়। শুধু তাই নয় কীভাবে সৃষ্টি হল এই অবতারের সে সম্পর্কেও জানা যায়। এই সব প্রাচীন পুঁথি থেকে জানা যায় দেব যুগে "অন্ধকা" নামে এক অসুর ছিল, যে বলপূর্বক মা পার্বতীকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু দেবীর ডাকে দেবাদিদেব সেখানে উপস্থিত হয়ে অন্ধকাকে মারতে তার বুকে ত্রিশুল চালিয়ে দেন। কিন্তু একি...! এক আজব শক্তি বলে অন্ধকার বুক চিরে গাড়িয়ে পরা রক্ত মাটি স্পর্শ করা মাত্র আরও শত শত অন্ধকা-এর জন্ম হতে শুরু করে।

এমন পরিস্থিতিতে তাহলে অসুরকে মারা যাবে কীভাবে? এই ভাবনার মাঝেই মা পার্বতী বুঝতে পারেন এই পৃথিবীতে যত প্রাণী রয়েছে, তাদের প্রত্যেকের শরীরের অন্দরেই যেমন পুরুষ সত্তা রয়েছে, তেমনি রয়েছে মহিলা সত্তাও। একথা বোঝা মাত্রই মা, অসুরের রক্ত পানের জন্য আহ্বান জানান সকল মাতৃশক্তিকে। পার্বতীর ডাকে সারা দিয়ে সে সময় ইন্দ্রর মাতৃ রূপ ইন্দ্রানী, বিষ্ণুর বৈষ্ণবি, ব্রহ্মার ব্রাহ্মনী এবং গণেশ ঠাকুরের মাতৃ রূপ বিনায়কি যুদ্ধক্ষেত্রে উপস্থিত হয়ে অসুর রাজ অন্ধকার রক্ত খেতে শুরু করে দেন। ফলে একটাও রক্তবিন্দু মাটিতে না পরার কারণে এক সময় মৃত্য়ু ঘটে অন্ধকার। আর ঠিক এই ভাবেই জন্ম হয় গণেশ ঠাকুরের মাতৃ রূপের।

গণেশ ঠাকুরের মাতৃ রূপ এবং আমরা:

গণেশ ঠাকুরের মাতৃ রূপ এবং আমরা:

ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায় ১৬ শতকের আশেপাশে সাধারণ মানুষ প্রথম বারের জন্য গণেশ ঠাকুরের মাতৃ রূপ সম্পর্ক জানতে পারেন। আসলে সেই সময়ই রাজস্থানের এক মন্দিরের টেরাকোটার কাজের মাঝে সন্ধান মেলে বিনায়কির। তখনই হাজারো খোঁজাখুঁজির পর অসুর অন্ধকা এবং বিনায়কির সেই যুদ্ধের লিখিত নথি সামনে আসে। সেই থেকে শুরু হয় পুজো। এমনকি তন্ত্র সাধনাতেও জায়গা পেতে শুরু করেন মা বিনায়কি। কিন্তু তারপর ধীরে ধীরে কালের নিয়মে কোথায় যেন হারিয়ে যান তিনি। তাই আজ আমাদের অনেকেই গণেশ ঠাকুরের এই বিনায়কি রূপের সম্পর্কে জানেন না।

নানা রূপে বিনায়কি:

নানা রূপে বিনায়কি:

তামিলনাড়ুর মাদুরাই শহরের এক মন্দিরে আজও গণেশ ঠাকুরের বিনায়কি রূপের পুজো করা হয়। যদিও সেখানে তিনি পরিচিত বিগ্রপদা গণপতি নামে। এমনকি জানলে আবাক হবেন, ভারতে যেখানে গণেশের এই মাতৃ রূপের বিষয়ে অনেকেরই অজান, সেখানে তিব্বতে আজও তিনি পূজিত হন "গণেশানি" নামে।

বৌদ্ধ এবং জৈন ধর্মেও সন্ধান মেলে বিনায়কির:

বৌদ্ধ এবং জৈন ধর্মেও সন্ধান মেলে বিনায়কির:

একাধিক প্রাচীন পুঁথি ঘেঁটে জানা গেছে বৌদ্ধ এবং জৈন ধর্মে উল্লেখিত মাতৃ শক্তির নানা নামের মাঝে একেবারে উপরে স্থান পেয়েছেন গণেশ ঠাকুরের মাতৃ রূপ। প্রসঙ্গত, জৈন ধর্মে মোট ৬৪ টা মাতৃ রূপের উল্লেখ পাওয়া যায়, যার অন্য়তম হলেন বিনায়কি। যদি সেখানে তিনি পরিচিত "গজাননা" নামে।

বিনায়কি রূপের পুজো করলে কী কী উপকার মেলে?

বিনায়কি রূপের পুজো করলে কী কী উপকার মেলে?

পুরান অনুসারে প্রতি বুধবার যদি শ্রদ্ধা সহকারে গণেশ ঠাকুরের এই মাতৃ রূপের আরাধনা করা যায়, তাহলে একাধিক সুফল মেলে। যেমন ধরুন...

১. যে কোনও ধরনের সমস্যা মিটে যায়:

নানাবিধ ঝামেলায় কি জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে? তাহলে গণেশ ঠাকুরের বিনায়কি রূপের আরাধনা করতে ভুলবেন না যেন। কারণ এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে নিয়ম করে এই বিশেষ রূপের আরাধনা করলে গৃহস্থের প্রতিটি কোণায় মাতৃশক্তির প্রভাব এতটাই বেড়ে যায় যে নানাবিধ সমস্যা মিটে যেতে যেমন সময় লাগে না, তেমনি যে কোনও ধরনের বাঁধার পাহাড়ও সরে যায় চোখের পলকে। ফলে অনন্দে ভরে ওঠে প্রতিটি দিন।

২. টাকা-পয়সা সংক্রান্ত সব ঝামেলা মিটে যায়:

একেবারেই ঠিক শুনেছেন বন্ধু। বিনায়কি রূপের পুজো শুরু করলে দেবী এতটাই প্রসন্ন হন যে তাঁর আশীর্বাদে যে কোনও ধরনের অর্থনৈতিক সমস্যা মিটে যেতে যেমন সময় লাগে না, তেমনি ধার-দেনার হাত থেকেও মুক্তি মেলে। শুধু তাই নয়, দেবীর আশীর্বাদে অনেক অনেক টাকার মালিক হয়ে ওঠার স্বপ্নও পূরণ হয়।

৩. কালো যাদুর প্রভাব কেটে যায়:

ওড়িশা রাজ্যের হিরাপুর নামক এক জায়গায় এক মন্দিরের সন্ধান পাওয়া যায়, যেখানে তন্ত্র সাধনার অংশ হিসেবে বিনায়কির আরধনা করা হয়ে থাকে। সেখান থেকেই এমন বিশ্বাসের জন্ম হয়েছে যে এক মনে নিয়মিত গণেশ ঠাকুরের এই মাতৃ রূপের আরাধনা করলে আমাদের আশেপাশে উপস্থিত খারাপ শক্তির প্রভাব নাকি কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে কালো যাদুর খারাপ প্রভাবও কেটে যায়। ফলে কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা যেমন কমে, তেমনি হঠাৎ কোনও দুর্ঘটনার কবলে পরা বা অকাল মৃত্যু ঘটার সম্ভাবনাও আর থাকে না।

৪. কর্মজীবনে উন্নতির পথ প্রশস্ত হয়:

অল্প সময়ে গাড়ি-বাড়ির মালিক হয়ে উঠতে চান নাকি? তাহলে এক মনে মা বিনায়কির আরাধনা করতে ভুলবেন না যেন! আসলে এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে প্রতি বুধবার, শাস্ত্রে এদিনটিকেই গণেশ পুজোর জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে, শুদ্ধ মনে যদি এই বিশেষ রূপের অরাধনা করা যায়, তাহলে দেবীর আশীর্বাদে কর্মজীবনে চরম সফলতার স্বাদ পাওয়ার সম্ভাবনা যেমন বাড়ে, তেমনি একের পর এক প্রমোশন পাওয়ার স্বপ্নও পূরণ হয়।

picture courtesy

Read more about: ধর্ম
English summary

Vinayaki: The lesser-known story of the elephant-headed goddess

She is the ‘Mistress of Obstacles’. Vinayaki is also known as Gajanani, Ganeshwari Gajamukhi or Vigneshwari. Goddess Vinayaki worship is prevalent in the Tamil speaking south of India. In the Madurai area in Tamil Nadu, Vinayaki is referred to as Vyagrapada Ganapathy.In Tibet, an elephant headed goddess, Ganeshani, is worshiped in Tibet.
Story first published: Wednesday, November 14, 2018, 11:27 [IST]
X
Desktop Bottom Promotion