Just In
নিত্য পুজো করার সময় এই নিয়মগুলি মানেন তো? নাহলে কিন্তু বিপদে পড়তে পারেন
জানেন কি নিত্য পুজো করার সময় এই প্রবন্ধে আলোচিত নিয়মগুলি মেনে যদি না চলেন, তাহলে ঠাকুর ঘর এবং ঠাকুরের পবিত্রতা ক্ষুন্ন হয়, ফলে স্বাভাবিকভাবেই ভাল হওয়ার জায়গায় নানাবিধ খারাপ ঘটনা ঘটার আশঙ্কা বাড়ে।
ঠাকুরের পুজো আমরা কেন করি? অবশ্যই আশীর্বাদ পাওয়ার জন্য! কি তাই তো? কিন্তু জানেন কি নিত্য পুজো করার সময় এই প্রবন্ধে আলোচিত নিয়মগুলি মেনে যদি না চলেন, তাহলে ঠাকুর ঘর এবং ঠাকুরের পবিত্রতা ক্ষুন্ন হয়, ফলে স্বাভাবিকভাবেই ভাল হওয়ার জায়গায় নানাবিধ খারাপ ঘটনা ঘটার আশঙ্কা যায় বেড়ে। আর এমনটা আপনার সঙ্গে ঘটুক যদি না চান, তাহলে এই প্রবন্ধে আলোচিত নিয়মগুলি মেনে পুজো করা শুরু করুন। দেখবেন সুফল পাবেন একেবারে হাতে-নাতে!
সংস্কৃতে পুজো শব্দের অর্থ হল ভগবানের আরাধনা করা। তার নাম নেওয়া। মনে মনে সর্বশক্তিমানের পায়ে নিজেকে সঁপে দেওয়া। তাই তো এই সময় মন এবং মস্তিষ্ক শান্ত থাকাটা একান্ত প্রয়োজন। আর এমনটা যাতে ঠিক ভাবে হয়, তা সুনিশ্চিত করতেই শাস্ত্রে সহজ কিছু নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে, যে নিয়মগুলি অক্ষরে অক্ষরে মেনে চললে ঠাকুর ঘরের পবিত্রতা যেমন বৃদ্ধি পায়, তেমনি মন শান্ত হয়। ফলে আমাদের আশেপাশে পজেটিভ শক্তির প্রভাব এত বাড়তে শুরু করে যে খারাপ কোনও ঘটনা ঘটার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। সেই সঙ্গে অর্থনৈতিক উন্নতি ঘটার পথও প্রশস্ত হয়। এখানেই শেষ নয়, শাস্ত্র মতে বাড়ির অন্দরে পজেটিভ শক্তির মাত্রা বাড়লে কর্মক্ষেত্র থেকে সামাজিক জীবন, সেবেতেই সর্বত্তম হয়ে ওঠা যায়। এক কথায় মানব জীবনকে আনন্দে ভরিয়ে তুলতে যে যে জিনিসগুলির প্রয়োজন পরে, তা সবই মেলে যদি এই প্রবন্ধে আলোচিত নিয়মগুলি মেনে দেবের পুজো করা হয় তো। তাহলে আর অপেক্ষা কেন, চলুন নিত্য পুজো করার সময় কী কী বিষয় মাথায় রাখা উচিত, সে বিষয়ে জেনে নেওয়া যাক।
১. নিত্য পুজো করতে হবে সকালে:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে সকালের থেকে পবিত্র সময় সারা দিনে আর কখনও হয় না। তাই তো এই সময় এক মনে সর্বশক্তিমানের আরাধনা করলে যে সুফল মেলে, তা দিনের অন্য সময় পুজো করলে মেলে না। প্রসঙ্গত, বেশ কিছু আধুনিক স্টাডিতে দেখা গেছে সকাল বেলা আমাদের মন বেজায় শান্ত থাকে। আর যেমনটা আগেও আলোচনা করা হয়েছে যে শান্ত মনে দেবের নাম নিলে পজেটিভ শক্তির প্রভাব এতটা বাড়তে থাকে যে নানাবিধ উপকার পাওয়া যায়। এই কারণেই তো সকাল বেলা উঠে স্নান সেরে শুদ্ধ এবং শান্ত মনে ভগবানের পুজো করার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে।
২. পুজোর আগের আয়োজন:
খেয়াল করে দেখবেন অনেক বাড়িতেই নম নম করে নিত্য পুজো সারা হয়ে থাকে। এমন ভাবে পুজো করার থেকে না করাই ভাল। কারণ এক মনে দেবের আরাধনা না করলে কোনও সুফলই পাওয়া যায় না। তাই তো নিত্য পুজো শুরু করার আগে মন এবং মস্তিষ্ককে যেমন শান্ত করতে হয়, তেমনি আরও কিছু বিষয় এক্ষেত্রে খেয়াল রাখা জরুরি। যেমন ধরুন- পুজো করার সময় কী জামা-কাপড় পরবেন তা স্নান করতে যাওয়ার আগে গুছিয়ে রাখতে ভুলবেন না। এরপর প্রদীপে অল্প করে তেল দেবেন আর হাতের কাছে ধূপ-ধুনো গুছিয়ে রাখবেন। এবার স্নান সেরে বেরিয়ে পরিষ্কার জামা কাপড় পরে প্রদীপ এবং ধূপ-ধুনে জ্বালিয়ে শুরু করবেন পুজো। এমনটা করলে দেখবেন সকাল সকাল মনটা এতটা চাঙ্গা হয়ে উঠবে যে যে সারা দিনটা ভাল যাবে।
৩. আসন পেতে পুজোয় বসতে হবে:
শাস্ত্র মতে পুজো করার সময় কখনও মাটিতে বসা উচিত নয়। এই কারণেই দেখবেন পুরোহিত মশাইরা সব সময় আসনে বসে দেব-দেবীর আরাধনা করে থাকেন। এমনটা আপনাকেও করতে হবে। শুধু তাই নয়, পুজো করার সময় উত্তর বা পূর্ব দিকে মুখে করে বসে যদি দেবের আরাধনা করতে পারেন, তাহলে আরও বেশি উপকার পাওয়া যায়।
৪. ঠাকুর ঘর পরিষ্কার করা মাস্ট:
নিত্য পুজো শুরু করার আগে পরিষ্কার একটা কাপড় নিয়ে প্রথমে ঠাকুরের ছবি এবং মূর্তি পরিষ্কার করে নিতে হবে। তারপর ঠাকুর ঘর ভাল করে মুছে নিয়ে শুরু করতে হবে পুজো । এক্ষেত্রে আরেকটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে। কী নিয়ম! ঠাকুরের ছবি পরিষ্কার করে নেওয়ার পর প্রতিটি ঠাকুরের ছবি এবং মূর্তিতে সিঁদুর লাগিয়ে তারপর শুরু করতে হবে পুজো।
৫. প্রদীপ রাখার নিয়ম:
যেমনটা আগেও আলোচনা করা হয়েছে যে নিত্য পুজো করার সময় প্রদীপ জ্বালানো মাস্ট! তবে এক্ষেত্রে একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে, তা হল ঠাকুরের আসনের দু কোনায় দুটি প্রদীপ জ্বালাতে হবে এবং খেয়াল রাখতে একটি প্রদীপ যেন পূর্ব দিকে মুখ করে থাকে, আর অন্যটা উত্তর দিকে। আসলে পূর্ব দিকে প্রাদীপ রাখতে বলা হয়, কারণ ওই দিক থেকেই সূর্য দেবের প্রবেশ ঘটে আমাদের গৃহস্থে। আর উত্তর দিকে আগমণ ঘটে শুভ শক্তির।
৬. মন্ত্রচ্চারণ:
পুজো করার সময় যে দেবতার পুজো করছেন তার মন্ত্র জপ করতে ভুলবেন না যেন! কারণ শাস্ত্র মতে মন্ত্র হল সেই শক্তি, যা মনের সব ইচ্ছা তো পূরণ করেই, সেই সঙ্গে আরও অনেক উপকার মেলে। যেমন ধরুন গণেশ ঠাকুরের পুজো করার সময় যদি "ওম গনপাতায়ে নমহঃ", এই মন্ত্রটি পাঠ করা হয়, তাহলে অর্থনৈতিক উন্নতি ঘটতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে কর্মক্ষেত্রেও চোখে পরার উন্নতি ঘটে।
৭. ফুল:
নিত্য পুজো করার সময় ফুল দিয়ে ঠাকুরকে সাজিয়ে তুলবেন। এমনটা করলে ধূপ-ধুনোর গন্ধের সঙ্গে ফুলের সুভাষ যখন মিশে যায়, তখন বাড়ির অন্দরের পরিবেশ এতটাই বদলে যায় যে দুখি মন খুশি হয়ে যেতে সময় লাগে না।
৮. গায়ত্রী মন্ত্র:
শাস্ত্র মতে নিত্য পুজো শুরু করার আগে যদি গায়েত্রী মন্ত্র জপ করতে পারেন, তাহলে দারুন উপকার পাওয়া যায়। কিন্তু আজকের দিনে কর্মব্যস্ততার চোটে এত সময় অনেকের হাতেই থাকে না। তাই প্রতিদিন যদি এই মন্ত্র পাঠ করতে না পরেন, কোনও ক্ষতি নেই। যে দিন সময় পাবেন, সেদিন পাঠ করুন। এমনটা করলেই দেখবেন বেজায় উপকার পাবেন।