Just In
ওনাম উৎসব : জেনে নিন কীভাবে পালন করা হয় এই উৎসব?
আমাদের দেশে বিভিন্ন ভাষাভাষি, বিভিন্ন জাতির মানুষ বাস করে। আর প্রত্যেকেরই নিজস্ব উৎসব, উপাচার থাকে। প্রত্যেক ভাষাগোষ্ঠিরই বিভিন্ন উৎসবের পাশাপাশি একটি প্রধান উৎসব থাকে। এই উৎসবের মধ্য দিয়ে একটি জাতির স্বকীয়তা, নিজস্ব ধ্যান-ধারণা, আশা-আকাঙ্খা ও আনন্দ-উদ্দীপনার এক উজ্জ্বল রূপ প্রকাশিত হয়। ঠিক সেরকমই কেরলের প্রধান উৎসব হল 'ওনাম উৎসব '। সেখানকার সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে জানার প্রধান উৎস এটি। প্রতিবছর সেপ্টেম্বর মাসে এটি পালন করা হয়। রাজ্যের প্রতিটি মানুষের কাছে এই উৎসব অত্যন্ত জনপ্রিয়। কেরলের সবচেয়ে বড় উৎসব বলা হয় এটিকে। এইবছর পয়লা সেপ্টেম্বর থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর পর্ষন্ত অনুষ্ঠিত হবে ওনাম উৎসব। এই উৎসব সর্বজনীন ও ধর্ম নিরপেক্ষ।
পৌরাণিক
কাহিনী
:
পুরাণে
কথিত
আছে,
পুরাকালে
এক
অসুররাজ
মহাবলী
কেরালায়
রাজত্ব
করতেন।
অসুর
হলেও
তিনি
ছিলেন
বীর
এবং
অত্যন্ত
দানশীল,
কর্তব্য
পরায়ণ।
রাজ্যের
প্রতিটি
মানুষের
সুখ,
দুঃখ
সবকিছু
তিনি
দেখতেন।
ফলে,
রাজ্যে
ছিল
না
কোনও
অভাব,
ঐশ্বর্যের
কমতি।
রাজ্যের
প্রতিটা
মানুষ
তাঁকে
ভালোবাসতেন
।
ফলে
চারিদিকে
তাঁর
প্রভাব
বাড়তে
থাকে।
এমতাবস্থায়
দেবতারা
ভগবান
বিষ্ণুর
শরণাপন্ন
হন
অসুররাজকে
দমন
করার
উদ্দেশ্যে।
ভগবান
বিষ্ণু
বামন
অবতার
রূপে
মহাবলীর
কাছে
সাহায্যপ্রার্থী
হন।
বামন
দেব
অসুররাজের
কাছে
বসবাসের
জন্য
তিন
পদক্ষেপ
মাপের
জমি
চান।
অসুররাজ বামনরূপী বিষ্ণুকে চিনতে না পেরে তাঁর প্রার্থনা মঞ্জুর করেন। প্রথম পদক্ষেপ বিষ্ণু গোটা পৃথিবী অতিক্রম করেন। দ্বিতীয় পদক্ষেপে শেষ করেন স্বর্গ ও পাতাল। তৃতীয় পদক্ষেপ ফেলার জায়গা না থাকায় মহাবলী তাঁর মাথা পেতে দেন। বিষ্ণু তাঁর মাথায় পা রাখতেই মারা যান মহাবলী। মৃত্যুর মুহূর্তে মহাবলীকে বিষ্ণু বর প্রদান করেন যে, প্রতিবছর কেরালায় মহাবলী তাঁর প্রিয় প্রজাদের দেখতে আসতে পারবেন। এই আশীর্বাদে পৃথিবীর অভ্যন্তরে প্রবেশ করেন মহাবলী।
মনে করা হয়, এই উৎসবের সময়ে অসুররাজ মহাবলী প্রতিবছর একবার কেরালায় ফিরে আসেন তাঁর প্রজাদের সাথে দেখা করতে। তাঁর আগমন উপলক্ষ্যে পালিত হয় এই ওনাম উৎসব।
বিভিন্ন পর্যায়ে আয়োজিত হয় এই উৎসব। কেরলের এই উৎসব নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জেনে নেওয়া যাক।
ত্রিক্কাকারা
মন্দির
:
মূলত
কেরলের
ওনাম
উদযাপন
শুরু
হয়
এই
মন্দিরকে
কেন্দ্র
করে।
গোটা
মন্দিরটি
ভগবান
বামনদেবের
উদ্দেশে
স্থাপিত।
এই
মন্দির
থেকেই
যাবতীয়
শোভাযাত্রা
আয়োজন
করা
হয়।
কথাকলি
নাচ
থেকে
শুরু
করে
পঞ্চবৈদ্যম
পরিবেশন
করা
হয়
এখানে।
এই
মন্দির
থেকে
আরাত্তু
নামে
এক
মিছিল
বের
হয়।
যার
আকর্ষণে
শহরে
ভিড়
করেন
পর্যটকরা।
হাতির
পিঠে
এখানে
বামনদেবমূর্তি
বসিয়ে
চলতে
থাকে
বর্ণাঢ্য
শোভাযাত্রা।
ফুলের
আলপনা
:
অসুর
রাজ
মহাবলীকে
অভ্যর্থনা
জানাতে
কেরলে
ওনামের
দিন
প্রতিটি
বাড়ির
দরজায়
ফুল
দিয়ে
আলপনা
দেওয়া
হয়।
এই
আল্পনাকে
পোক্কালম
বলা
হয়।
আজকাল
অনেক
জায়গায়,
বিশেষ
করে
স্কুল,
কলেজ,
অফিসে
ওনামের
সময়
ফুল
দিয়ে
আলপনার
প্রতিযোগিতাও
হয়।
পোশাক
:
এই
উৎসবের
সময়ে
মহিলারা
সোনালি
পাড়
দেওয়া
সাদা
শাড়ি
পরেন।
আর
পুরুষরা
লুঙ্গির
মতো
করে
সাদা
অথবা
ঘিয়ে
রঙের
ধুতি
ও
জামা
বা
কুর্তা
পরেন।
ওনামের
মহাভোজ
:
ওনামের
দিন
দুপুরে
থাকে
মহাভোজ।
তাকে
স্থানীয়
মালয়ালম
ভাষায়
বলে
সাদ্য।
প্রতিটি
বাড়িতেই
পঞ্চব্যঞ্জন
সহকারে
রান্না
হয়।
মোট
২৬টি
পদ
থাকে।
তার
মধ্যে
উল্লেখযোগ্য
হল
কলার
চিপস,
পাঁপড়,
থোরান,
মেজহুক্কুপুরাত্তি,
কালান,
ওলান,
আভিয়াল,
সাম্বার,
ভাত,
ডাল,
এরিশেরি,
রসম,
আচার,
বাটারমিল্ক,
পায়েস
ইত্যাদি।
বিভিন্ন
খেলা
:
এই
সময়ে
কায়ানকলি,
আত্তাকালাম,
কুটুকুটু,
আম্বেয়াল
ও
তালাপ্পনথুকলি
নামের
অনেকগুলি
খেলা
চালু
রয়েছে।
এগুলি
এই
উৎসবে
খেলা
হয়।
বিভিন্ন
ধরনের
নাচ
:
ওনাম
উৎসবের
সময়ে
থিরুভাতিরাকলি,
কুম্মাত্তিকলি,
পুলিকলি,
থুম্বি
থুল্লাল
ও
কথাকলি-র
মতো
নৃত্যকলা
পেশ
করা
হয়।
শুধু
মহিলারাই
নন,
পুরুষরাও
এতে
অংশ
নেন।
আরানামুলার
বোট
রেস
:
কেরলার
বোট
রেস
জগৎ
বিখ্যাত।
কেরলের
আরামুলাতে
এই
নৌকা
প্রতিযোগিতা
বা
বোট
রেসের
ছবি
তুলতে
তথা
দেখতে
ভিড়
করেন
বহু
মানুষ।
এজন্য
আরানমুলা
এলাকার
পার্থসারথী
মন্দির
প্রতিবছর
অনুষ্ঠান
উদযাপন
করেন
নৌকা
প্রতিযোগিতা।