Just In
শনির বক্রদৃষ্টি পরে জীবনটা নরক হয়ে যাক এমনটা না চাইলে শনিবার ভুলেও এই খাবারগুলি খাবেন না যেন!
তি শনিবার এই প্রবন্ধে আলোচিত খাবারগুলি যদি এড়িয়ে চলতে পারেন, তাহলে কিন্তু দেব বেজায় প্রসন্ন হন।
শাস্ত্রে বলে শনি দেব হলেন সেই শিক্ষক, যিনি তার ছাত্রদের একেবারে সিদে করে ছাড়েন! তাই তো কারও উপর শনির বক্র দৃষ্টি পরলে কিন্তু বেজায় বিপদ! কারণ সেক্ষেত্রে নানাবিধ সমস্যায় জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠতে যেমন সময় লাগে না, তেমনি অসফলতা রোজের সঙ্গী হয়ে ওঠে, সেই সঙ্গে এমন সব ঘটনা ঘটতে শুরু করে যে সুখের ঝাঁপি খালি হয়ে যেতেও সময় লাগে না। আর সবথেকে ভয়ের বিষয় হল একবার যদি কারও উপর শনির প্রভাব পরে, তাহলে তার প্রভাব প্রায় সাড়ে সাত বছর পর্যন্ত থাকে। তাহলে বুঝতেই পারছেন, শনি দেবতে প্রসন্ন করতে না পারলে কিন্তু...!
এখন প্রশ্ন হল কার উপর, কখন শনির বক্র দৃষ্টি পরবে, তা আগে থেকে জেনে ওঠা সম্ভব নয়। তাই তো দেবকে খুশি রাখতে প্রতি শনিবার শনি ঠাকুরের পুজো করার পাশাপাশি এই প্রবন্ধে আলোচিত খাবারগুলি যদি এড়িয়ে চলতে পারেন, তাহলে কিন্তু দেব বেজায় প্রসন্ন হন। ফলে নানা নানাবিধ সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার আশঙ্কা যেমন কমে, তেমনি শনি ঠাকুরের আশীর্বাদে মনের ছোট থেকে ছোটতর ইচ্ছা পূরণ হতেও সময় লাগে না।
কিন্তু খাবারের সঙ্গে শনি ঠাকুরের রেগে যাওয়া বা প্রসন্ন হওয়ার সম্পর্কটা ঠিক কোথায়? জ্যোতিষ বিশেষজ্ঞদের মতে শনি ঠাকুর বেশ কিছু খাবার একেবারেই পছন্দ করেন না। তাই তো এই সব খাবারগুলি শনিবার খেলে দেব এতটাই ক্ষেপে যান যে সেই ব্যক্তির জীবন দুঃখের ছায়ায় ঢেকে যেতে সময় লাগে না। তাই তো বলি বন্ধু, সুখে-শান্তিতে থাকতে যে যে খাবারগুলি সপ্তাহের এই বিশেষ দিনে এড়িয়ে চলাই শ্রেয়, সেগুলি হল...
১. আমের আচার:
আম বাঙালির আমের আচার ছাড়া খাবার মুখে রচে না ঠিকই, কিন্তু শনি দেবকে প্রসন্ন করতে একদিন এই মুখরচক খাবারটির দিকে ফিরেও তাকানো চলবে না। কারণ এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে শনিবার আমের আচার খেলে শনি দেব এতটাই রেগে যান যে অর্থনৈতিক ক্ষতি হতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে টাকা-পয়সা সংক্রান্ত নানা ঝামেলাও মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। তাই তো বলি বন্ধু একদিন যদি জিহ্বার কথা না শোনেন তাহলে কিন্তু বেজায় মঙ্গল!
২. দুধ এবং দই:
জানি বন্ধু জানি শুনতে হয়তো একটু আজব লাগছে। কিন্তু একেবারে ঠিকই শুনেছেন! কারণ জ্যোতিষ শাস্ত্রের উপর লেখা একাধিক বই অনুসারে শনিবার দই বা দুধ খেলে শনির বক্র দৃষ্টি পরার আশঙ্কা বেড়ে যায়। শুধু তাই নয়, শনি গ্রহের খুপ্রভাবে কর্মক্ষেত্রে নানাবিধ সমস্যাও দেখা দেয়। সেই সঙ্গে যে কোনও কাজই সহজে হতে চায় না। ফলে মানসিক শান্তি দূরে পালাতে যে সময় লাগে না, তা তো বলাই বাহুল্য!
৩. মুসুর ডাল:
শনি দেবকে প্রসন্ন করতে চান নাকি? তাহলে প্রতি শনিবার নিয়ম করে শনি মন্ত্র জপ করতে করতে দেবের অরাধনা যেমন করতে হবে, তেমনি আজ ভুলেও মুসর ডাল খাওয়া চলবে না। কারণ জ্যোতিষ বিশেষজ্ঞদের মতে সপ্তাহের এই বিশেষ দিনে এই ডালটি খেলে জন্ম কুষ্টিতে শনি গ্রহের অবস্থানে পরিবর্তন আসতে শুরু করে, যার প্রভাবে অর্থনৈতির ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা যেমন বেড়ে যায়, তেমনি নানাবিধ বিপদের খপ্পরে পরার সম্ভাবনাও থাকে।
৪. লাল লঙ্কা:
বাঙালি পদে লাল লঙ্কা পরবে না, তা কখনও হতে পারে নাকি! কিন্তু শনি দেব আপনার উপর ভিষণ রকম রেগে যাক, এমনটা যদি না চান, তাহলে শনিবার করে লালা লঙ্গার ব্যবহার নৈব নৈব চ! তবে ইচ্ছা হলে কাঁচা লঙ্কা খেতেই পারেন। কিন্তু শনি দেবকে খুশি করে যদি বাকি জীবনটা সুখ-শান্তিতে কাটাতে হয়, তাহলে ভুলেও লাল লঙ্কা খেতে যাবেন না যেন!
৫. অ্যালকোহল:
হাজার হাজার বছর আগে লেখা একাধিক বইয়ে এমনটা দাবি করা হয়েছে যে শনি দেব সুরাপান যেহেতু পছন্দ করেন না। তাই আজ অ্যালকোহল সেবন করলে দেব এতটাই অসন্তুষ্ট হন যে শনি গ্রহের প্রভাবে নানাবিধ ঝামেলায় জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে কর্মজীবনে সম্মানহানীর আশঙ্কাও থাকে। তাই সাবধান বন্ধু সাবধান!
৬. সরষের তেল:
এমন বিশ্বাস রয়েছে যে প্রতি শনিবার দেবের ছবি বা মূর্তির সামনে সরষের তেলে জ্বালানো প্রদীব রাখলে দেব বেজায় প্রসন্ন হন। আর ঠাকুরের পুজোর কাজে যে তেলকে কাজে লাগানে হচ্ছে, তাকে কাজে লাগিয়ে যদি রান্না করা হয়, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই সর্বশক্তিমান যে বেজায় রুষ্ট হন, তা কি আর বলার অপেক্ষা রাখে। তাই তো বলি বন্ধু, জন্ম কুষ্টিতে শনি গ্রহের অবস্থান ঠিক থাকুক, এমনটা যদি চান, তাহলে ভুলেও আজকের দিনে সরষেল তেলে বানানো কোনও খাবার খেতে যাবেন না যেন!
৭. কালো তিল বীজ:
শাস্ত্র মতে প্রতি শনিবার কালো তিল বীজ এবং সরষের তেল নিবেদন করে যদি দেবের অরাধনা করা হয়, তাহলে শনি ঠাকুর এতটাই প্রসন্ন হন যে শনির সাড়ে সাতির প্রভাব কমতে সময় লাগে না। কিন্তু একেবারেই উল্টো ঘটনা ঘটে যদি শনিবার কালো তিল বীজ খাওয়া হয় তো। তাই বলি বন্ধু, সাড়ে সাত বছর ধরে দুঃখ-কষ্টের জীবন কাটাতে যদি না চান, তাহলে ভুলেও এই জিনিসটি শনিবার খেতে যাবেন না যেন!
প্রসঙ্গত, শনি দেবকে চটজলদি প্রসন্ন করতে যদি চান, তাহলে এই নিয়মগুলিও মেনে চলতে পারেন। যেমন ধরুন...
১. প্রতি শনিবার খালি পায়ে ঘাসের উপর হাঁটতে হবে:
যখন ঝড় আসে, তখন বড় বড় গাছেরা ভেঙে পরলেও কিন্তু দুর্বল ঘাসেদের কিছু হয় না। কারণ তারা হাওয়ার পথ অনুসরণ করে নিজেদের শরীরকে দুলিয়ে নেয়। ফলে ঝড় কেটে গেলে তারা আবার নতুন ভাবে বেড়ে উঠতে শুরু করে। জীবনের চলার পথে আসা নানা কষ্ট অনেকটা এই ঝড়ের মতোই। তাই তো ঘাসের মতো নিজেকে কিছু সময়ের জন্য নিচু করে নিতে শিখতে হবে। দেখবেন কষ্ট যখন কমে যাবে, তখন জীবন আগের থেকে আরও বেশি সুন্দর হয়ে উঠবে। এই কারণেই তো প্রতি শনিবার খালি পায়ে ঘাসের উপর হাঁটতে বলে। কারণ এমনটা করলে খুব কাছ থেকে ঘাসেদের চরিত্র বুঝতে পারা যায়। তাই তো শনির প্রকোপে কোনও সময় যদি দুঃখের ঝড় ওঠে বা, তবু দেখবেন জীবনকে ঠিক দিশায় নিয়ে যেতে কোনও কষ্টই হবে না।
২. প্রতি শনিবার শনি মন্ত্র জপ করা জরুরি:
"ওম নীলাঞ্জন সমভাহাসাম রাবি পুত্রাম ইয়ামাগরাজান চায়া মার্তান্ডা-সামভুতাম তাম নমামি শানিশভারাম", এই মন্ত্রটি যদি নিয়মিত পাঠ করতে পারেন, তাহলে শনিদেব এতটাই প্রসন্ন হবেন যে কোনও দিন শনির মহাদশার প্রকোপ সইতে হবে না।
৩. শ্রী হনুমানের পুজো করতে হবে:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে হনুমানজির পুজো করলে সাড়ে সাতির প্রকোপ কাটতে যেমন সময় লাগে না, তেমনি গৃহস্থের অন্দরে পজেটিভ শক্তির প্রভাব এতটা বেড়ে যায় যে সুখ-শান্তির ঝাঁপিও কখনও খালি হয় না।
৪. অশ্বত্থ গাছের পুজো করতে হবে:
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে নিয়মিত অশ্বত্থ গাছের পুজো করলে জীবনে পজেটিভ শক্তির প্রভাব বাড়তে শুরু করে। সেই সঙ্গে শনি দেবও খুব খুশি হন। ফলে খারাপ কোনও ঘটনা ঘটার আশঙ্কা যায় কমে।
৫. দান করতে হবে:
শনি দেব হলেন কর্মের দেবতা। তাই তাঁর প্রকোপ থেকে যদি বাঁচতে চান, তাহলে মন খুলে লোকের সেবা করুন। সেই সঙ্গে ক্ষমতা অনুসারে দান-ধ্যানও খরুন। এমনটা করলে শনি দেব তো প্রসন্ন হবেনই, সেই সঙ্গে সুকর্মের প্রভাবে জীবন সুন্দর হয়ে উঠতে দেখবেন সময় লাগবে না।