Just In
Navagraha Stotram in Bengali: নবগ্রহ স্তোত্র পাঠেই শান্ত হয় ৯ গ্রহ! জানুন স্তোত্র পাঠের সঠিক নিয়ম ও উপকারিতা
জন্মকুণ্ডলীতে গ্রহের অবস্থান মানব জীবনে ভালো-মন্দ প্রভাব ফেলে। গ্রহের কারণে জীবনে প্রতিকূল প্রভাব দেখা দিলে, সেই বিশেষ গ্রহের শান্তির জন্য বা সমস্ত গ্রহের শান্তির জন্য নবগ্রহ স্তোত্র পাঠ করা হয়।
মহর্ষি বেদব্যাস নবগ্রহ স্তোত্র রচনা করেন। দিনে বা রাত্রে যে কোনও সময়ই নবগ্রহ স্তোত্র পাঠ করা যায়। নবগ্রহ স্তোত্র জপের মাধ্যমে নয়টি গ্রহকে শান্ত করা যায়। এই আর্টিকেল থেকে জেনে নিন নবগ্রহ স্তোত্র এবং এর অর্থ ও উপকারিতা -
নবগ্রহ স্তোত্র পাঠের উপকারিতা
নবগ্রহ হল - সূর্য, চন্দ্র, মঙ্গল, বুধ, বৃহস্পতি, শুক্র, শনি, রাহু ও কেতু। হিন্দুশাস্ত্রে নবগ্রহকে সবচেয়ে শক্তিশালী এবং প্রভাবশালী বলে মনে করা হয়। এই নয়টি গ্রহের পূজা করলে তাঁদের আশীর্বাদ মেলে এবং অনুকূল ফলাফল পাওয়া যায়। প্রতিদিন নবগ্রহ স্তোত্র পাঠ করলে বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি হয়। পরিবারে কোনও কলহ থাকে না, সুখ-সমৃদ্ধি বজায় থাকে।
সূর্য (রবি)
জবাকুসুমসঙ্কাশং কাশ্যপেয়ং মহাদ্যুতিম্।
ধ্বান্তারিং সর্বপাপঘ্নং প্রণতোহস্মি দিবাকরম্।।
অর্থ - জবা ফুলের মত রক্তিম, কাশ্যপের পুত্র, প্রচণ্ড জ্যোতি বা তেজ যুক্ত, অন্ধকার নাশক, সর্বপাপ বিনাশক, হে দিবাকর! আমি আপনাকে প্রণাম করি।
চন্দ্র
দধিশঙ্খতুষারাভং ক্ষীরোদার্ণব সম্ভবম্।
নমামি শশিনং ভক্ত্যা শম্ভোর্মুকুট ভূষণম্।।
অর্থ - দধি, শঙ্খ এবং বরফের ন্যায় আভা যুক্ত, ক্ষীরসাগর হইতে আবির্ভূত, শিবশম্ভুর মস্তকে ভূষিত, হে চন্দ্রদেব! আমি আপনাকে প্রণাম করি।
মঙ্গল
ধরণীগর্ভসম্ভূতং বিদ্যুৎপুঞ্জসমপ্রভম্।
কুমারং শক্তিহস্তঞ্চ লোহিতাঙ্গং নমাম্যহম্।।
অর্থ - ভূমিপুত্র, বিদ্যুৎ পুঞ্জের ন্যায় দীপ্তিমান, হাতে শক্তি এবং যাকে কুমার বলা হয়, রক্তিম শরীর, হে মঙ্গলদেব! আমি আপনাকে প্রণাম করি।
বুধ
প্রিয়ঙ্গুকলিকাশ্যামং রূপেণাপ্রতিমং বুধম্।
সৌম্যং সর্বগুণোপেতং তং বুধং প্রণমাম্যহম্।।
অর্থ - প্রিয়ঙ্গুফুলের কলির মতো শ্যাম বর্ণ, রূপে তুলনাহীন, সোমের (চন্দ্রের) পুত্র, সর্বগুণী, হে বুধ আমি আপনাকে প্রণাম করি।
বৃহস্পতি
দেবতানামৃষীণাঞ্চ গুরুং কনকসন্নিভম্।
বন্দ্যভূতং ত্রিলোকেশং তং নমামি বৃহস্পতিম্।।
অর্থ - দেবতা এবং ঋষিদের গুরু, স্বর্ণকান্তি, তিনলোকে পূজিত, হে বৃহস্পতি! আমি আপনাকে প্রণাম করি।
শুক্র
হিমকুন্দমৃণালাভং দৈত্যানাং পরমং গুরুম্।
সর্বশাস্ত্র প্রবক্তারং ভার্গবং প্রণমাম্যহম্।।
অর্থ - পদ্মবৃন্তে শিশির বিন্দুর মতো যার আভা, দৈত্য গুরু, সর্বশাস্ত্রে পারদর্শী, হে শুক্রদেব! আমি আপনাকে প্রণাম করি
শনি
নীলাঞ্জনসমাভাসং রবিপুত্রং যমাগ্রজম্।
ছায়ায়া গর্ভসম্ভূতং তং নমামি শনৈশ্চরম্।।
অর্থ - নীল বর্ণের চক্ষু সমান আভা, সূর্য্য ও ছায়ার পুত্র, যমের জেষ্ঠ্য ভ্রাতা, হে শনিদেব! আমি আপনাকে প্রণাম করি।
রাহু
অর্দ্ধকায়ং মহাঘোরং চন্দ্রাদিত্যবিমর্দ্দকম্।
সিংহিকায়াঃ সূতং রৌদ্রং তং রাহুং প্রণমাম্যহম্।।
অর্থ - অর্ধদেহী, মহাশক্তিশালী, চন্দ্র-সূর্য্য দমনকারী, সিংহিকার পুত্র, হে রাহু! আমি আপনাকে প্রণাম করি।
কেতু
পলালধুমসঙ্কাশং তারাগ্রহবিমর্দ্দকম্।
রৌদ্রং রুদ্রাত্মকং ক্রুরং তং কেতুং প্রণমাম্যহম্।।
অর্থ - পলিমাটির ধুলার মতো ধোঁয়াটে বর্ণ, গ্রহ-নক্ষত্র দমনকারী, রুদ্রের আত্মজ, নিষ্ঠুর, হে কেতু! আমি আপনাকে প্রণাম করি।
নবগ্রহকে সন্তুষ্ট করতে পুজোর সময় ব্যবহার করুন এই ফুলগুলি, দেখে নিন কোন গ্রহ কোন ফুলে তুষ্ট হয়
নবগ্রহ স্তোত্র পাঠের মাহাত্ম্য
ইতি ব্যাসমুখোদ্গীতং যঃ পঠেৎ সুসমাহিতঃ।
দিবা বা যদি বা রাত্রৌ শান্তিস্তস্য নঃ সংশয়ঃ।।
অর্থ - ব্যাসদেব দ্বারা কথিত এই নবগ্রহ স্তোত্র যে মনোযোগ সহকারে দিন বা রাত্রে পাঠ করে, তাঁর সব দুঃখ-কষ্ট ও বাধা-বিঘ্ন দূর হয়, শান্তি লাভ হয়।
ঐশ্বর্য্যমতুলং তেষামারোগ্যং পুষ্টিবর্দ্ধনম্।
নর-নারী-নৃপাণাঞ্চ ভবেদ্দুঃস্বপ্ননাশনম্।।
অর্থ - অতুল ঐশ্বর্য্য প্রাপ্তি, আরোগ্য লাভ এবং দেহের পুষ্টি বৃদ্ধি হয়। কোনও স্ত্রী, পুরুষ বা রাজাকে নিয়ে দেখা দুঃস্বপ্ন নাশ হয়।
গ্রহনক্ষত্রজাঃ পীড়াস্তস্করাগ্নি সমুদ্ভবাঃ।
তাঃ সর্বাঃ প্রশমং যান্তি ব্যাসো ব্রূতে ন সংশয়ঃ।।
অর্থ - এই নবগ্রহ স্তোত্র পাঠ করিলে গ্রহ, নক্ষত্র, চোর এবং আগুনের ভয় দূর হয়।
ইতি শ্রীব্যাসবিরচিতং নবগ্রহ-স্তোত্রং সম্পূর্ণম্।