Just In
- 6 hrs ago এপ্রিল মাসে ৪ গ্রহের স্থান পরিবর্তন, রাজযোগ ও সৌভাগ্যে ফুলে ফেঁপে উঠবে এই রাশির জাতকরা, দেখুন
- 7 hrs ago আপনার কি ক্রমাগত কান চুলকাচ্ছেন? অজান্তেই ডেকে আনচ্ছেন বড় বিপদ
- 11 hrs ago মসুর ডাল খেতে ভালোবাসেন? কিন্তু অতিরিক্ত খেলে হতে পারে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া!
- 12 hrs ago অনলাইন গেমে বাচ্চারা ঘরকুঁনো! জানেন কি স্বাস্থ্যের জন্য় কতটা উপকারি আউটডোর গেম?
Don't Miss
Mysore Dussehra: মাইসোর দশেরা কী ভাবে শুরু হয়েছিল? জেনে নিন এর ইতিহাস
ভারতের অন্যান্য জনপ্রিয় উৎসবগুলির মধ্যে দশেরা বা দশহরা অন্যতম। বাঙালিরা যখন দূর্গাপুজোর আনন্দে মাতে, ঠিক সেই সময়ই ভারতের কোথাও পালিত হয় দশেরা, কোথাও পালিত হয় নবরাত্রি। দশেরা দেবীপক্ষের বা নবরাত্রির দশম দিনকেই বোঝায়। বাঙালীদের কাছে দশেরা বিজয়া দশমী নামে পরিচিত। এই বছর বিজয়া দশমী বা দশেরা পড়েছে ২৪ অক্টোবর, মঙ্গলবার।
দশেরা কোথাও কোথাও পরিচিত দশহরা নামে, আবার কোথাও পরিচিত দশাইন নামে। সংস্কৃতির এই গুরুত্বপূর্ণ দশহরা উৎসবটি আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষের দশমী তিথিতে উদযাপিত হয়। দশহরা শব্দের অর্থ হল, দশ মানে দশানন (রাবণকে বলা হয়), হরা মানে হার। বিশ্বাস করা হয় যে, এইদিন লঙ্কায় দশানন রাবণকে হারিয়ে রাম যুদ্ধ জয় করে সীতাকে উদ্ধার করেছিলেন।
কলকাতার সবথেকে জনপ্রিয় উৎসব দূর্গাপুজোর মতোই কর্ণাটকের মাইসোর 'দশেরা'-র আয়োজনের জন্য জগৎ বিখ্যাত। দশেরার সময় চারিদিকে আলোর রোশনাই আর রঙবেরঙের রাজকীয় সাজে সেজে ওঠে মাইসোরের রাজবাড়ি। দশেরা উপলক্ষ্যে গোটা এক মাস মহীশূর প্যালেসেকে প্রায় এক লাখ লাইট দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয়। এর পাশাপাশি হাতিদের সুন্দর করে সাজিয়ে মহীশূর প্যালেস থেকে এক বিরাট শোভাযাত্রা বের করা হয়।
ওয়াদিয়ার
রাজাদের
হাতে
গড়া
এই
শহরে
ছড়িয়ে
আছে
একাধিক
দৃষ্টিনন্দন
স্থাপত্য।
যার
মধ্যে
উল্লেখযোগ্য
মাইসোর
রাজপ্রাসাদ।
শহরের
মধ্যে
সৌন্দর্য্যের
প্রতীক
এই
প্রাসাদ
যেন
এক
স্বপ্নপুরী।
এই
রাজপ্রাসাদকে
কেন্দ্র
করেই
প্রতিবছর
নবরাত্রি
আর
দশেরা
উৎসবে
মেতে
ওঠেন
নগরবাসী।
দশ
দিন
ধরে
চলা
এই
উৎসবের
সমাপ্তির
দিনটাই
সবথেকে
বেশি
আকর্ষনীয়।
বিজয়া
দশমীর
দিন
মাইসোরে
মহা
ধুমধামের
সহিত
পালিত
হয়
দশেরা
বা
দশহরা।
দশেরা উৎসব ঘিরে রাজপ্রাসাদ আর শহর সেজে ওঠে আলোকমালায়। দশ দিন ধরে অনুষ্ঠিত হয় মেলা, প্রদর্শনী, সাংস্কৃতিক নানা বর্ণময় অনুষ্ঠান। রাজপ্রাসাদে দিনভর নগরবাসী আর উৎসবে শামিল পর্যটকদের ভিড়। শহরজুড়ে নানান বর্ণাঢ্য উৎসব উদযাপিত হয়। দেশ বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লাখ লাখ দর্শনার্থীরা আসেন মাইসোরের এই বিখ্যাত দশেরার উৎসব দেখতে।
কর্ণাটকে মাইসোরের এই রাজকীয় উৎসব 'নদাহাব্বা' নামে পরিচিত। দশেরার দিন আয়োজিত এই অনুষ্ঠান অন্ধকারের ওপর আলোর জয়কে চিহ্নিত করে অর্থাৎ বলা যায়, খারাপকে দূরে সরিয়ে ভালোকে জয় করা।
প্রথমে মাইসোর রাজবংশের বর্তমান রাজদম্পতি চামুন্ডি পাহাড়ের চামুন্ডি মন্দিরে পুজো অর্পণ করেন। কথিত আছে, এই পাহাড়েই চামুণ্ডা দেবী মহিষাসুরকে বধ করেছিলেন। ইনিই রাজপরিবারের কুলদেবতা।
মাইসোর দশেরার সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হল হাতি নিয়ে শোভাযাত্রা। এছাড়াও উট,ঘোড়া নিয়েও রঙবেরঙের শোভাযাত্রা বের হয় এখানে। রাজার নিজস্ব ব্যান্ডবাদক দল, সুসজ্জিত হাতি, ঘোড়ার পিঠে রাজসেনা, পাইক, পেয়াদা নিয়ে রাজপ্রাসাদের সামনে রাজপথে রওনা দেয় শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রায় হাতির পিঠে চামুণ্ডেশ্বরীর মূর্তি নিয়ে যাওয়া হয়। সোনার মন্তাপাতে নিয়ে যাওয়া হয় দেবীকে।
কর্ণাটকের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা লোকশিল্পীরা পা মেলান এই বিখ্যাত দশেরা শোভাযাত্রায়। শহরের রাজপথ ঢাক, ঢোল, সানাই, শিঙার শব্দে মুখরিত হয়ে ওঠে। যক্ষগণা, পাটা, বীরভদ্র, পূজাকুনিথা প্রভৃতি লোকনৃত্য প্রদর্শিত হয় রাজপথে। নানা ধরনের ট্যাবলো, শিব-দুর্গা, রাম-রাবণ-মহিষাসুর বেশে বহুরূপীসাজে মানুষজন পা মেলায় দশেরা শোভাযাত্রায়।
দেবী চামুন্ডেশ্বরীর মূর্তি নিয়ে এই বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা শেষ হয় বন্নিমন্তাপাতে। এখানে 'বান' গাছ বা বটগাছের কাছে এসে থেমে যায় এই শোভাযাত্রা। কথিত আছে এই বটগাছেই অজ্ঞাতবাসের সময়ে অস্ত্র লুকিয়ে রেখেছিলেন পাণ্ডবরা। যাইহোক, শোভাযাত্রার শেষে আতশবাজির রোশনাই হয়। দশমীর দিন জাম্বু সাভারি দশেরা শোভাযাত্রা দিয়েই শেষ হয় বর্ণময় মহীশূর দশেরা উৎসব।
মাইসোর দশেরার ইতিহাস
মাইসোরের ৪০০ বছরের পুরনো এই উৎসবের সূচনার নেপথ্যে রয়েছে এক বিরাট কাহিনি। পুরাণ মতে বলা হয়, মাইসোরের রাজা ছিলেন এক মহিষাসুর। মহিষাসুর রাজা থাকাকালীন মাইসোরে যাঁরাই ভগবানকে পুজো করতেন তাঁদেরই শাস্তি দিতেন তিনি। মহিষাসূরের হাত থেকে বাঁচতে সেখানকার মানুষ সাহায্য চান মা দুর্গার। দীর্ঘ লড়াইয়ে চামুন্ডি পর্বতে মহিষাসুরের বিনাশ করেন মা দুর্গা। এরপর থেকেই চামুন্ডি পর্বতে প্রতিষ্ঠিত হয় মা দুর্গার মন্দির। এই ঘটনাকে স্মরণ করে প্রতি বছর এখানে মহা সমারোহে পালন করা হয় 'দশেরা' উৎসব৷
ঐতিহাসিক মতে, ১৬১০ খ্রিস্টাব্দে অদূরের শ্রীরঙ্গপত্তনমে দশেরা উৎসব শুরু করেন ওয়াদিয়ার রাজা। দশেরার দিন হাতির পিঠে বসে রাজা শোভাযাত্রা সহকারে নগর পরিক্রমা করতেন। সেই প্রাচীন উৎসবের ঐতিহ্য আজও বহমান। সেই বিশেষ দশেরা শোভাযাত্রা 'জাম্বু সাভারি' নামে পরিচিত। বর্তমানে এই শোভাযাত্রায় রাজার বদলে হাতির পিঠে সোনার সিংহাসনে চামুণ্ডেশ্বরী দেবীকে বসিয়ে নগর পরিক্রমা করা হয়।