Just In
- 10 hrs ago এপ্রিল মাসে ৪ গ্রহের স্থান পরিবর্তন, রাজযোগ ও সৌভাগ্যে ফুলে ফেঁপে উঠবে এই রাশির জাতকরা, দেখুন
- 12 hrs ago আপনার কি ক্রমাগত কান চুলকাচ্ছেন? অজান্তেই ডেকে আনচ্ছেন বড় বিপদ
- 15 hrs ago মসুর ডাল খেতে ভালোবাসেন? কিন্তু অতিরিক্ত খেলে হতে পারে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া!
- 17 hrs ago অনলাইন গেমে বাচ্চারা ঘরকুঁনো! জানেন কি স্বাস্থ্যের জন্য় কতটা উপকারি আউটডোর গেম?
Don't Miss
মকর সংক্রান্তি ২০২০ : দিন-ক্ষণ ও সংক্রান্তি সম্পর্কিত তথ্য
নতুন বছরের প্রথম উৎসব, মকর সংক্রান্তি যা, বাঙালির 'পৌষ পার্বণ' বা 'পৌষ সংক্রান্তি' নামে পরিচিত। স্বভাবতই আনন্দের পারদ একেবারে তুঙ্গে। সকালে সূর্য নমস্কার দিয়ে শুরু করে, আনন্দ, উল্লাস ও খাওয়া-দাওয়ার মধ্যেই কেটে যায় দিনটি। গোটা ভারত জুড়ে পালিত হয় এই উৎসব। বাঙালির পৌষ পার্বণের মতোই সারা ভারতের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন নামে পালিত হয় মকর সংক্রান্তি।
সংক্রান্তির আগেই জাঁকিয়ে বসেছে শীত। শীতকে পাত্তা না দিয়েই পৌষ সংক্রান্তির রঙে মেতে উঠতে প্রস্তুতি ঘরে ঘরে। প্রস্তুত রংবেরঙের ঘুড়িও। শুধু অপেক্ষা দিন ও সময়ের। তবে, চলুন দেখে নেওয়া যাক তিথি অনুযায়ী মকর সংক্রান্তির দিন-ক্ষণ ও তারিখটি।
দিন-ক্ষণ ও তারিখ
প্রথা অনুযায়ী পৌষ মাসের শেষে ও মাঘ মাসের শুরুতে যে সংক্রান্তি আসে, তাকেই মকর সংক্রান্তি বলে। পৌষ মাসকে মলমাস বা অশুভ মাস হিসেবে চিহ্নিত করলেও শাস্ত্র মতে, মকর সংক্রান্তি থেকেই শুরু হয় শুভ ক্ষণ। কারণ, এই সময় সূর্য ধনু রাশি ত্যাগ করে মকর রাশির ঘরে প্রবেশ করে৷ শুরু হয় সূর্যের 'উত্তরায়ণ'। তাই এই তিথিকে মকর সংক্রান্তি বলা হয়।
তিথি অনুযায়ী, এবারে মকর সংক্রান্তি পড়েছে - ১৫ জানুয়ারি ২০২০।
সংক্রান্তির পূণ্য সময় শুরু - বুধবার, অর্থাৎ ১৫ জানুয়ারি সকাল ৭ টা ১৫ মিনিটে।
সংক্রান্তি শেষ হচ্ছে - ১৫ জানুয়ারি বিকাল ৫ টা ৪৬ মিনিটে।
মকর সংক্রান্তির নানা পৌরাণিক মত
মকর সংক্রান্তি মূলত নতুন ফসলের উৎসব, যাকে বাংলায় বলে পৌষ পার্বণ বা পৌষ সংক্রান্তি। মূলত পৌষ মাসের শেষ দিনে আয়োজন করা হয় এই উৎসব। ভারতীয় জ্যোতিষ শাস্ত্র অনুযায়ী, 'সংক্রান্তি ' একটি সংস্কৃত শব্দ। এই উৎসবের একটি ভৌগোলিক গুরুত্ব আছে কিন্তু, মহাভারতে মকর সংক্রান্তির উল্লেখ থাকার জন্য এই দিনটি ধর্মীয় গুরুত্বই বেশি বহন করে।
এইদিন হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিটি বাড়িতে ভিন্ন রকমের পিঠে-পুলি তৈরী ও খাওয়ার ধুম পড়ে। তবে, এই উৎসবের ইতিহাসকে ঘিরে রয়েছে নানা মুনির নানা মত।
সনাতন ধর্মাবলম্বিদের কাছে, মকর সংক্রান্তি ' উত্তরায়ণের সূচনা ' হিসেবে পরিচিত। কারণ, এই উৎসব পালনেই শেষ হয় সমস্ত অশুভ শক্তির। পুরাণ মতে, মকর সংক্রান্তির দিনই দেবতাদের সঙ্গে অসুরদের হওয়া যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটেছিল। ভগবান বিষ্ণু অসুরদের বধ করে তাদের ছিন্ন মাথা মন্দিরা পর্বতে পুঁতে দিয়ে শুভ শক্তির সূচনা করেন।
আবার লোক মুখে প্রচলিত, যেহেতু পৌষ মাসকে মলমাস বলা হয় তাই, পৌষ মাসের শেষ দিনে এই উৎসব পালন করে অশুভ শক্তি ত্যাগের মাধ্যমে শুভ মাসের সূচনা করা হয়। আর্থিক দিক থেকে বাড়ির সমৃদ্ধির জন্য এই দিনে দেবী লক্ষ্মীর আরাধনাও করা হয়। মহাভারত ও কালিকাপুরাণের সূত্র ধরেই এই সংক্রান্তিতে দেবতার আরাধনা করা হয়।
কেউ কেউ মনে করেন, এই সংক্রান্তির দিনে সূর্যদেব তাঁর পুত্র অর্থাৎ মকর রাশির অধিপতি শনির উপর রাগ প্রশমিত করে তাঁর বাড়িতে ঘুরতে গিয়েছিলেন। তাই, এই দিনটিতে সূর্যদেবের কাছ থেকে আশির্বাদ পেতে সকালে সূর্য প্রণামের মধ্য দিয়ে মকর সংক্রান্তি পালন শুরু হয়।
কোন জায়গায় কী নামে পরিচিত
যেহেতু ভারতবর্ষ কৃষিপ্রধান দেশ তাই, এই উৎসব ভারতের সমস্ত জায়গাতেই প্রাধান্য পায়। এছাড়াও, বিশ্বের অনেক জায়গাতেই এই উৎসব পালন করা হয়। তবে, জায়গা অনুযায়ী শুধু নামের পরিবর্তন হয়ে থাকে। দেখে নিন বিভিন্ন নামের তালিকাটি -
পশ্চিম বাংলা - পৌষ সংক্রান্তি বা পৌষ পার্বণ
পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিমাঞ্চল ও ওড়িশা - টুসু উৎসব
অসম - ভোগালি বিহু
নেপাল - মাঘি
তামিলনাড়ু - পোঙ্গাল
পাঞ্জাব, হরিয়ানা, হিমাচল প্রদেশ, জম্মু - লোহ্রি
মায়ানমার - থিং-ইয়ান
গুজরাত - উত্তরায়ণ
কর্নাটক - মকর সংক্রমণ
কাশ্মীর - শায়েন-ক্রাত
মধ্যপ্রদেশ - সকরত
ঝাড়খন্ড ও উত্তরপ্রদেশ - খিচড়ি পর্ব
তাইল্যান্ড - সংক্রান
লাওস - পি-মা-লাও
কম্বোডিয়া - মহাসংক্রান
উল্লেখ্য, পশ্চিম বাংলায় যেমন পূজার্চনা ও পিঠে পুলি খাওয়ার মাধ্যমে এই উৎসব পালন করা হয় তেমনই, তামিলনাড়ুতে আখ ও তিলের মিষ্টি সেবন করে পালন করা হয় পোঙ্গাল। তবে, পাঞ্জাবের মত তামিলরাও কাঠকুটোয় আগুন জ্বালিয়ে সেই আগুনে পুরনো পোশাক ও অন্যান্য জিনিসপত্র আহুতির মাধ্যমে উৎসবে মেতে ওঠেন।
কেন এই দিনে ঘুড়ি ওড়ানো হয়
মকর সংক্রান্তির দিনে এক বিশেষ আকর্ষণ হলো রঙবেরঙের ঘুড়ি ওড়ানো। শাস্ত্রমতে, সকাল সকাল ঘুড়ি ওড়ানোর মাধ্যমে সূর্যের আলো শরীরে লাগালে তা শরীরের জন্য ভাল। তাই, এই উৎসবের দিনে সূর্যের আলোয় শরীর ও মন সুস্থ এবং সতেজ রাখতে ঘুড়ি ওড়ানোর প্রচলন শুরু হয়।